জাতীয়বাংলাদেশলিড নিউজ

সাহসী সোহেলকে সহকর্মীদের শেষ শ্রদ্ধা

এবিএনএ: বনানীর এফ আর টাওয়ারে আগুনে আটকেপড়াদের উদ্ধার করতে গিয়ে নিহত সাহসী ফায়ারম্যান সোহেল রানার প্রথম জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। নিজের চাকরিস্থল ফায়ার সার্ভিসের সদর দফতরে অনুষ্ঠিত তার জানাজায় কান্নায় ভেঙে পড়েন তার সহকর্মী, ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা ও স্বজনরা। মঙ্গলবার বেলা ১১টায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ফুলবাড়িয়ার সদর দফতরে সোহেল রানার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ ফায়ার সার্ভিসের বিভিন্ন স্তরের কর্তকর্তা-কর্মচারীরা এতে অংশ নেন।

জানাজা শেষে সোহেল রানার মরদেহ গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জের চৌগাঙ্গা উপজেলার ইটনার কেরুয়ালা এলাকায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সেখানেই দাফন করা সাহসী এই সন্তানকে। গত রোববার গভীর রাতে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোহেল রানার মৃত্যু হয়। গত ২৮ মার্চ সোহেল গুরুতর আহত হন। ওই দিনই তাকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ৫ এপ্রিল রাতে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর নেওয়া হয়েছিল। সোহেল কুর্মিটোলা ফায়ার স্টেশনে কর্মরত ছিলেন।

ফায়ার সার্ভিস জানায়, ২৮ মার্চ এফ আর টাওয়ারে আগুন লাগার পর সোহেলসহ কয়েকজন উদ্ধারকর্মী লেডারে (স্বয়ংক্রিয় মই) করে আটকেপড়া ব্যক্তিদের নামিয়ে আনছিলেন। একটি লেডারে সর্বোচ্চ চার থেকে ছয়জনকে উদ্ধার করা যায়। বেশি লোক লেডারে উঠে যাওয়ায় সেটি থেমে গিয়েছিল। আগুনে আটকেপড়া ব্যক্তিদের জায়গা করে দিতে সোহেল জীবনের ঝুঁকি নিয়ে লেডারের মই বেয়ে নিচে নামার চেষ্টা করছিলেন। ওজন কমে যাওয়ায় লেডারটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিচের দিকে নেমে আসার সময় হঠাৎ করে তার পা মইয়ের ভেতরে আটকে গিয়ে ভেঙে কয়েক ভাগ হয়ে যায়। একই সময়ে সেফটি বেল্টে চাপ লেগে তার পেট ছিদ্র হয়ে গিয়েছিল।

সহকর্মীরা জানান, সোহেলের বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা উপজেলার চৌগাঙ্গা ইউনিয়নের কেরুয়ালা গ্রামে। তার বাবার নাম নুরুল ইসলাম ও মা হালিমা খাতুন। চার ভাই ও এক বোনের মধ্যে সোহেল সবার বড় ছিলেন। ২০১৫ সালে তিনি ফায়ার সার্ভিসে যোগ দেন। সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম সন্তানকে হারিয়ে পুরো পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

Share this content:

Related Articles

Back to top button