জাতীয়বাংলাদেশলিড নিউজ

মন্ত্রণালয়ের আদেশ স্থগিত, মেয়র পদে ফিরলেন আরিফ

এবিএনএ : বরখাস্ত, আইনী লড়াই, মেয়র পদ ফিরে পাওয়া। এই ‘চক্কর’ যেন পেয়ে বসেছে আরিফুল হক চৌধুরীকে! প্রথম দফায় বরখাস্ত হওয়ার পর আইনী লড়াইয়ে ফিরে পেয়েছিলেন মেয়র পদ। এবার আরও একবার আইনী লড়াইয়ে ফিরলেন সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) মেয়র পদে।

গতকাল রবিবার বরখাস্ত হওয়ার মাত্র এক দিনের মাথায় হাইকোর্টে রিট করে মেয়র পদ ফিরে পেয়েছেন আরিফ। হাইকোর্ট স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় কর্তৃক আরিফুল হক চৌধুরীকে বরখাস্তের আদেশ স্থগিত করেছেন। এর ফলে আরিফই এখন সিসিকের মেয়র।

আরিফুল হক চৌধুরীর আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল হালিম ক্বাফি সোমবার বিকাল সাড়ে ৪টায় বলেন, ‘বিশেষ ট্রাইব্যুনাল মামলা নং-০৪/২০০৯ এর সম্পূরক অভিযোগপত্র গত ২২ মার্চ স্পেশাল ট্রাইব্যুনালে গৃহিত হওয়ার রবিবার আরিফুল হক চৌধুরীকে বরখাস্তের আদেশ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এ আদেশের বিরুদ্ধে সোমবার হাইকোর্টে রিট দায়ের করে আরিফ। হাইকোর্টের সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও আতাউর রহমান খানের বেঞ্চ মন্ত্রণালয়ের আদেশ স্থগিত ঘোষণা করেন। ’

ঠিক কতো দিনের জন্য মন্ত্রণালয়ের আদেশ স্থগিত করেছেন আদালত, ব্যারিস্টার আবদুল হালিম ক্বাফি তা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি। তবে তিনি বলেন, ‘আদালতের এই স্থগিতাদেশের ফলে মেয়র পদে ফিরতে আরিফুল হক চৌধুরীর সামনে আর কোনো বাধা নেই। ’২০১৩ সালের ১৫ জুন অনুষ্ঠিত সিসিক নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হন বিএনপি নেতা আরিফুল হক চৌধুরী। বছরখানেক পরেই মামলায় জড়ান তিনি। সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমস কিবরিয়া হত্যার ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক মামলা দুটিতে অভিযুক্ত হন তিনি। ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করেন আরিফ। তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। পরের বছর ৭ জানুয়ারি আরিফকে সাময়িক বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।

উচ্চ আদালত থেকে কিবরিয়া হত্যা মামলা এবং হত্যার ঘটনায় বিস্ফোরক মামলায় জামিন নিয়ে গত বছরের জুলাইয়ে মুক্ত হওয়ার প্রহর গুণছিলেন আরিফুল হক চৌধুরী। কিন্তু ২০ জুলাই সুনামগঞ্জে সুরঞ্জিত সেন গুপ্তের জনসভায় বোমা হামলার ঘটনায় হত্যা এবং বিস্ফোরক মামলায় আরিফের নাম যুক্ত করে সম্পূরক চার্জশিট দেয় সিআইডি। ২০০৪ সালের ২১ জুনের ওই ঘটনার মামলায় রুদ্ধ হয়ে যায় আরিফের মুক্তির পথ। তবে আইনী লড়াই চালিয়ে যান আরিফ। সেই ধারাবাহিকতায় সবকটি মামলায় জামিন পেয়ে গত ৪ জানুয়ারি কারামুক্ত হন তিনি।

কারামুক্ত হয়ে গত ১২ মার্চ হাইকোর্টে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের বরখাস্তের আদেশের বিরুদ্ধে রিট করেন আরিফ। পরদিন আদালত মন্ত্রণালয়ের আদেশ ছয় মাসের জন্য স্থগিত ঘোষণা করেন। আদেশের বিরুদ্ধ আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। কিন্তু ২৩ মার্চ পূর্বোক্ত আদেশ বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। ওই আদেশের প্রেক্ষিতে রবিবার রীতিমতো শোডাউন করে নগর ভবনে যান আরিফ। সেখানে কাউন্সিলর, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাকে অভ্যর্থনা জানান। দায়িত্বভার গ্রহণ করে মেয়রের চেয়ারে বসেন আরিফ, করেন কয়েকটি ফাইলে স্বাক্ষর।

তবে পৌনে তিন ঘন্টার মাথায় ফের তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে মর্মে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন ফ্যাক্সযোগে সিলেট সিটি করপোরেশনে পৌঁছে। উপ-সচিব মাহমুদুল আলম স্বাক্ষরিত আদেশে বলা হয়, ‘‘আরিফুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে দায়েরকৃত ফৌজদারী মামলা বিশেষ ট্রাইব্যুনাল মামলা নং-০৪/২০০৯ এর সম্পূরক অভিযোগপত্র গত ২২ মার্চ স্পেশাল ট্রাইব্যুনালে গৃহিত হয়েছে। স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন ২০০৯ (২০০৯ সনের ৬০নং আইন) এর ধারা ১২ উপধারা (১) এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে আরিফুল হক চৌধুরীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হল। ’

Share this content:

Related Articles

Back to top button