রোহিঙ্গা সংকট সমাধান রাতারাতি সম্ভব নয়: সু চি

এবিএনএ : চলতি সপ্তাহেই বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনার মধ্যে দিয়ে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রশ্নে একটি সমঝোতায় পৌঁছানো সম্ভব হবে বলে আশা করছেন মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি। তবে এ সঙ্কটের সমাধান রাতারাতি সম্ভব নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি। খবর রয়টার্সের।খবরে বলা হয়, নেপিদোতে এশিয়া ও ইউরোপের দেশগুলোর জোট-আসেমের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের শেষ দিন আজ মঙ্গলবার সু চি সাংবাদিকদের একথা বলেন।
সু চি বলেন, ১৯৯২ সালের প্রত্যাবসন চুক্তি অনুযায়ী রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে মিয়ানমার ও বাংলাদেশ কাজ করছে। পাশাপাশি কফি আনান কমিশনের পরামর্শগুলো পর্যালোচনা করা হচ্ছে।মিয়ানমারের নেত্রী বলেন, আসেম সম্মেলনে আসা প্রতিনিধিদের সঙ্গে রোহিঙ্গা ইস্যুতে অনানুষ্ঠানিক কথা হয়েছে। তারা রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে আমাদের করণীয় প্রশ্ন করেছেন। আমি বলেছি, বাংলাদেশের সঙ্গে রোহিঙ্গা প্রত্যাবসন নিয়ে একটি চুক্তি আছে, আমরা দ্রুতই একটি স্থায়ী সমাধানে আসতে পারবো। তবে রাতারাতি এই সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়।বুধ ও বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলীর সঙ্গে বৈঠক হবে জানিয়ে সু চি বলেন, আমরা আশা করছি, এই আলোচনার ফলাফল হিসেবে শিগগিরই একটি সমঝোতা স্মারক সই করা সম্ভব হবে, যাতে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে যাওয়া সবাইকে নিরাপদে ফেরানোর ব্যবস্থা করা যায়।এর আগে সোমবার আসেম সম্মেলনের সাইডলাইনে রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে আলোচনা হয়। এশিয়া ও ইউরোপের ১৫টি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এক অনানুষ্ঠানিক ব্রিফিংয়ের রাখাইনে সহিংসতা বন্ধ করে বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের দ্রুত ফিরিয়ে নেওয়ার তাগিদ দেন। সেই সঙ্গে কফি আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের ওপরও জোর দেন তারা।বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী ওই অনানুষ্ঠানিক ব্রিফিংয়ে রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরেন এবং সম্মেলনের ফাঁকে কয়েকটি ইউরোপীয় দেশের মন্ত্রীদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অংশ নেন।এসব বৈঠকের ফলাফল সম্পর্কে জানতে চাইলে মঙ্গলবার তিনি বলেন, দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে ইউরোপীয় দেশগুলোর কাচ থেকে সঙ্কট সমাধানে সহযোগিতার আশ্বাস পেয়েছেন তিনি। মাহমুদ আলী বলেন, মিয়ানমারের নেত্রী অং সাং সু চির সঙ্গে বুধবার বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের বৈঠক রয়েছে। সেখানেও রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে আলোচনা হবে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রশ্নে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে গত মাসে আলোচনা শুরু হলেও শর্ত নিয়ে এখনও সমঝোতায় আসতে পারেনি দুই দেশ।উল্লেখ্য, অগাস্টের শেষ দিকে রাখাইনে সেনা অভিযান শুরুর পর এ পর্যন্ত সোয়া ছয় লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। জাতিসংঘ এই অভিযানকে চিহ্নিত করেছে ‘জাতিগত নির্মূল অভিযান’ হিসেবে। পশ্চিমা অধিকার সংগঠনগুলো মিয়ানমারের নেত্রী নোবেল বিজয়ী সু চিরও সমালোচনা করে আসছে। তারা বলছে, সু চির সরকার রাখাইনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বন্ধে যথেষ্ট কঠোর অবস্থান নিতে পারেনি।
Share this content: