এবিএনএ: ‘কোনো ধরনের ঋণ প্রস্তাব ফরমালভাবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বাংলাদেশকে দেয়নি। একইভাবে আইএমএফের কাছেও কোনো ঋণ চায়নি সরকার। তবে ঋণ দেওয়ার প্রস্তাব আসলে আমাদের প্রয়োজন থাকলে সেটি বিবেচনা করা হবে। কিন্তু আপাতত আমাদের ঋণের প্রয়োজন নেই।’
অর্থমন্ত্রী বলেন, আপনাদের অনেকের মনে হয়ত সংশয় কাজ করে যে আমরা অনেক কিছু নিয়ে নেব বা চুক্তি করব। এ ধরনের কিছু আমাদের কাছে আসেনি, আসলে জানতে পারবেন। আমরা এমন কোনো প্রকল্প বা ফান্ডিংয়ে যাব না, যেগুলো আমাদের দেশের মানুষের স্বার্থের পরিপন্থি হয়। স্বার্থের পরিপন্থি কিছু করব না, সেটি নিশ্চিত করতে পারি।
সফররত আইএমএফ প্রতিনিধি দল প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, আইএমএফ বাংলাদেশে আসছে, এটা একটা পরামর্শক কমিটি। তারা পরামর্শ দেয়, আমরাও তাদের পরামর্শ দেই। তারা আমাদের কাছে কী জন্য আসছে সেটি নিয়ে ফরমাল কিছু আমাদের বলেনি। কিন্তু ঋণ দেওয়ার কোনো ফরমাল প্রস্তাব আমরা পাইনি। তবে আমি এটি আশ্বস্ত করতে চাই, এমন কোনো প্রকল্প বা অর্থায়ন নেওয়া হবে না- যেটি স্বার্থের ব্যাঘাত ঘটবে।
রির্জাভ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, অন্যান্য দেশ যেভাবে রির্জাভ গণনা করছে, আমরাও সেভাবে করছি। আইএমএফ যে সহায়তা দিচ্ছে আমরাও সেভাবে ফেরত দিচ্ছি। আন্তর্জাতিক এ সংস্থাকে আমরা বলেছি ঋণ দিলে আমাদের ঋণের অর্থ মাফ করতে হবে না। ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা বাংলাদেশের আছে। বিগত সময়ে ঋণ পরিশোধে বাংলাদেশ ব্যর্থ হয়নি।
আইএমএফের কাছ থেকে ৪৫০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ নিচ্ছেন কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ফরমালভাবে আমার কাছে ঋণের কোনো প্রস্তাব আসেনি।
প্রস্তাব আসলে ঋণ গ্রহণ করবেন কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আগে দেখতে হবে আমাদের প্রয়োজন আছে কি না। প্রয়োজন থাকলে নেব। তবে এই মুহূর্তে প্রয়োজন নেই।
বৈশ্বিক অর্থনীতি অস্থিরতায় বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতি স্থিতিশীল আছে কি না- জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, সারা বিশ্বে অর্থনীতি অঞ্চলে এক ধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে। আমরা সবদিকে খোঁজ-খবর রাখছি। সেখানে কীভাবে নিজেদের সমন্বয় করে চলা যায় সেটি দেখা হচ্ছে।
মূল্যস্ফীতি প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, মূল্যস্ফীতির হিসাব প্রতিদিন বা মাসিক ভিত্তিতে নয়- এটি হওয়া উচিত গড় ভিত্তিতে। এক বছরের হিসাব দেখে গড় মূল্যস্ফীতি বের করা উচিত। বর্তমান আমাদের গড় মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৯ শতাংশ। এটি মনে করিয়ে দেন আমরা (বর্তমান সরকার) ক্ষমতায় আসার সময় মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১৭ দশমিক ৩ শতাংশ।
শ্রীলংকার মতো দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশ ঝুঁকিতে- আইএমএফের এ মন্তব্যের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী কিছুটা এড়িয়ে গিয়ে বলেন, বাংলাদেশ কোথায় অবস্থিত। এখানে নেপাল, মালয়েশিয়া, পাকিস্তানের মতো অনেক দেশ আছে।