এবিএনএ: বিএনপিকে ধ্বংস করার জন্য দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান একাই যথেষ্ট বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, অগ্নিসন্ত্রাস, নৈরাজ্যে নেতৃত্ব দিয়ে আজকে তারেক রহমান বিএনপিকে একটি আন্ডারগ্রাউন্ড দলে, সন্ত্রাসী সংগঠনে রূপান্তরিত করেছে। আর সেটার সামাজিক ও রাজনৈতিক যন্ত্রণা ভোগ করছে বিএনপির নেতাকর্মীরা।
মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পরিষদ আয়োজিত ‘বিএনপি-জামায়াতের মানবাধিকার লঙ্ঘন ও অগ্নিসন্ত্রাসের প্রতিবাদ ও বিচার দাবিতে মানববন্ধন’ শীর্ষক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি-জামায়াত তাদের জনসমর্থন হারিয়ে এখন পলাতক দল। তারা গুপ্ত স্থান থেকে আন্দোলনের ডাক দেয় আর গাড়ি-ঘোড়াতে পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করে। প্রকৃত অর্থেই বিএনপি-জামায়াত এখন আন্ডারগ্রাউন্ড সংগঠনে রূপান্তরিত হয়েছে। পুলিশ কিংবা আওয়ামী লীগ বিএনপির কার্যালয়ে তালা লাগায়নি, সরকার তালা লাগানি, তারা নিজেরাই তালা লাগিয়েছে। নিজেদের অফিসের তালা খোলার জন্য যারা একটা মানুষ খুঁজে পায় না, তারা আবার সরকার পতন ঘটাবে!’
তিনি বলেন, ‘আমাদের অনেক বিএনপি নেতার সঙ্গে বিমানবন্দরে, ট্রেন স্টেশনে, বিয়ে-শাদিতে দেখা হয়, তখন তাদেরকে জিজ্ঞাস করি, ভাই আপনারা কী করছেন? তারা বলে- সব উনার ইচ্ছা, লন্ডনে যে আছেন উনার ইচ্ছা। অর্থাৎ বিএনপিকে ধ্বংস করার জন্য এক তারেক রহমানই যথেষ্ট। আর কারো দরকার নাই। পৃথিবীর কোথাও গত দুই-তিন দশকে রাজনীতির দাবি-দাওয়া আদায়ের জন্য গুপ্ত স্থান থেকে চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়নি, যেটি বিএনপি আজকে করছে। এই বিএনপির জন্য আবার কেউ কেউ মায়াকান্না করে। তথ্যমন্ত্রী বলেন, আর আজকে ফিলিস্তিনে হাজার হাজার নারী-শিশুসহ মুসলমানদের যে হত্যা করা হচ্ছে তার কোনো প্রতিবাদ তারা করে নাই। বিএনপিও করে নাই। বিএনপি-জামায়াত আজ শুধু ইসলামের শত্রু নয়, মানবতার শত্রুতে রূপান্তরিত হয়েছে। কারণ ফিলিস্তিনে শুধু মুসলমানরাই নয়, বহু খ্রিস্টানও ইসরাইলি বাহিনীর হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে, ৭টি গির্জা ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। আর এটির বিরুদ্ধে জামায়াতে ইসলামী আর বিএনপি কোনো কথা বলে না। যারা নির্যাতন-হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করছে, বিএনপি-জামায়াত তাদের পক্ষ অবলম্বন করেছে। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রও নরম সুরে বলেছে এইভাবে সাধারণ মানুষকে হত্যা করা ঠিক হচ্ছে না। কিন্তু বিএনপি এই কথা বলতেও ব্যর্থ হয়েছে। এরা আবার রাজনীতি করে।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি পীর সাহেবদের সম্মান করি, আমার বাপ-দাদাও সম্মান করতেন, আমিও করি। কারণ এই দেশে ইসলাম কায়েম হয়েছে পীর-আউলিয়াদের মাধ্যমে। দু’-একজন পীর সাহেব সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলে, কিন্তু ফিলিস্তিনে যে আজকে মানুষ হত্যা হচ্ছে সেটির বিরুদ্ধে মিছিল পর্যন্ত করতে পারে নাই। তারা একটি ঘুসির প্রতিবাদে সারাদেশে মিছিল করে, আর ওইদিকে যে হাজার হাজার মানুষকে, নারী ও শিশুদের হত্যা করা হচ্ছে সেটির জন্য একটা মিছিল বের করতে পারে না। আমি প্রার্থনা করি এই পীর সাহেবদের যেন আল্লাহ হেদায়েত করেন।’
সবুজবাগ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক চিত্তরঞ্জন দাসের সভাপতিত্বে ও স্বাধীনতা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন টয়েলের সঞ্চালনায় সমাবেশে আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য অ্যাড. বলরাম পোদ্দার, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিরাজ হোসেন, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান, বঙ্গবন্ধু গবেষণা পরিষদের সভাপতি গনি মিয়া বাবুল, আওয়ামী লীগ নেতা এম.এ করিম, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সহসভাপতি মানিক লাল ঘোষ, স্বাধীনতা পরিষদের সভাপতি জিন্নাত আলী খান প্রমুখ বক্তব্য দেন।