
এ বি এন এ : বাগেরহাটে পৃথক হত্যা মামলায় আজাদ খান (৪৫) ও মো. হারুন (৫৫) নামের দুই জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। সোমবার দুপুরে বাগেরহাটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-২ এবং অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালত পৃথকভাবে এ রায় ঘোষনা করেন। সোমবার দুপুরে বাগেরহাটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-(২) আদালতের বিচারক মো. রেজাউল করিম আজাদ খানকে এক লাখ টাকা জরিমানাসহ মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রদান করেন। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মো. আজাদ খান (৪০) বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার খলিশাখালী গ্রামের দলিল উদ্দিনের ছেলে। রায় ঘোষনার সময় দণ্ডপ্রাপ্ত আজাদ খান আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
অপর দিকে বাগেরহাটে স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যার দায়ে স্বামী মো. হারুনকে (৫৫) দুপুরে মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রদান করেন বাগেরহাটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মো. জাকারিয়া হোসেন। দণ্ডাদেশ প্রাপ্ত মো. হারুন বাগেরহাট সদরের সৈয়দপুর গ্রামের মৃত ছলেমানের ছেলে। রায় ঘোষণার সময় তিনিও আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। কচুয়ায় অন্ত:সত্বা প্রেমিকা হত্যা মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, বাগেরহাটের গাবরখালী গ্রামের মৃত হোসেন আলীর মেয়ে আয়না খাতুনকে (১৭) বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলে প্রেমিক আজাদ খান। এক পর্যায়ে ঐ তরুনী অন্ত:সত্বা হয়ে পড়লে বিয়ের জন্য আজাদকে চাপ প্রয়োগ করে। পরে আজাদ কৌশলে ২০১২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারী রাতে আয়নাকে ডেকে নিয়ে পার্শবর্তী পূর্ব মঘিয়া গ্রামের বাবুল সেখে’র সুপারি বাগানে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে পালিয়ে যায়। পরে এলাকাবাসীর খবরের ভিত্তিতে কচুয়া থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে বাগেরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় এএসআই মিয়ারত হোসেন বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে মামলাটি জেলা ডিবি পুলিশকে তদন্ত করতে দেয়া হয়। ডিবি পুলিশ এই হত্যাকান্ডের সাথে আজাদের সম্পৃক্ততা পাওয়ায় তাকে আটক করে। আসামী আজাদ নিজেকে এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দী দেয়। পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই জিয়াউর রহমান ২০১৩ সালের ৭ ফেব্রুয়ারী আজাদকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশীট দাখিল করে। মামলার দুজন স্বাক্ষীর ভিত্তিতে সোমবার আদালত এই হত্যাকাণ্ডের রায় প্রদান করেন।
অন্যদিকে স্ত্রী হত্যা মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, পারিবারিক কলহের জের ধরে ২০১২ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর রাতে স্বামী হারুন তার স্ত্রী জাকিয়া বেগমকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। স্ত্রীর লাশ বাড়ীর পিছনে সুপারী বাগানের ডোবায় ইট দিয়ে চাপা দিয়ে রাখে। ঘটনায় ১৩ দিন পর ১২ই অক্টোবর জাকিয়া বেগমের লাশ পচে দুর্গন্ধ ছড়ালে এলাকাবাসী পুলিশকে খবর দেয়। ওই দিন জাকিয়ার বড়বোন সাইদা বেগম বাদী হয়ে বাগেরহাট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ লাশ উদ্বার করে এবং ঘাতক স্বামী হারুনকে আটক করে। হত্যার দায় স্বীকার করে হারুন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দী দেয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাগেরহাট থানার তৎকালীন এসআই আনোয়ার হোসেন তদন্ত শেষে গত ২০১৩ সালের ১ মার্চ আসামী হারুনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। আদালত এ হত্যাকাণ্ডের ৮ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে সোমবার দুপুরে রায় প্রদান করেন।
Share this content: