জাতীয়বাংলাদেশলিড নিউজ

ভোলার ঘটনায় ‘হ্যাকিং’ নিয়ে এখনই মন্তব্য নয়: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

এবিএনএ: ভোলার বোরহানউদ্দিনের ঘটনায় ফেসবুক হ্যাকিংয়ের যে বিষয়টি সেটা নিয়ে পুলিশ হেডকোয়ার্টার কাজ করছে। এটা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। পরীক্ষার আগে এ ব্যাপারে কিছু বলবেন না বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। রবিবার রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের ১৮তম প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এই কথা বলেন। এক হিন্দু যুবকের ফেসবুক ম্যাসেঞ্জার থেকে কটূক্তিমূলক কিছু স্ক্রিনশর্ট ছড়ানোকে কেন্দ্র করে গত রবিবার ভোলার বোরহানউদ্দিনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হন চারজন। পুলিশসহ শতাধিক আহত হন। অভিযুক্ত যুবক দাবি করেন, তার ফেসবুক আইডি হ্যাক করে এসব করা হয়েছে। ওইদিন গণভবনে এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও জানান, হিন্দু যুবকের আইডি হ্যাক করে এই গুজব ছড়ানো হয়েছে।

মন্ত্রীর কাছে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন বোরহান উদ্দিনের ঘটনায় ফেসবুক হ্যাকিংয়ের অভিযোগে যাকে আটক করা হয়েছে তিনি বলছেন- আইডি হ্যাক করে এসব করেননি। তাহলে প্রশাসন এখন কী বলবে। এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা যে কথা বলছেন আমরাও মনে করি সেই রকমই কিছু। যেহেতু এটা নিয়ে পুলিশ হেডকোয়ার্টার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে; সেহেতু পরীক্ষার আগে আমরা কিছু বলতে পারব না।’ বোরহান উদ্দিনের ঘটনায় তদন্ত চলছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কয়েকজনকে আটক করেছি। হ্যাকার হোক আর যেই হোক ঘটনা যে ঘটিয়েছে আমরা তার ব্যবস্থা গ্রহণ করছি এবং করব।’

‘খুব শিগগির কে ঘটনাটি ঘটিয়েছে, কে নেতৃত্ব দিয়েছে, কার কী উদ্দেশ্য ছিল সবই একে একে আপনাদের সামনে হাজির করব। আমার কাছে মনে হচ্ছে, যখন প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সম্ভাবনার এই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে তাকে পথ হারানো জন্য, আবারো অকার্যকর বাংলাদেশ তৈরি করার জন্য এই ধরনের প্রচেষ্টা নেওয়া হয়েছিল।’ মন্ত্রী বলেন, ‘এদেশের জনগণ এগুলো পছন্দ করে না। তাই কেউ শান্তি নষ্ট করতে পারবেন না। কারণ জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস এই দেশের মানুষ চায় না।’

এর আগে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের যৌক্তিক দাবির কথা প্রধানমন্ত্রী সব সময় চিন্তা করেন। তিনি সব সময় মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান করেন, তাদের এগিয়ে নিতে কাজ করেন। মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা তারই আমলে প্রবর্তিত হয়েছে। সেখান থেকে আজ ১২ হাজার টাকা থেকে ক্রমে বেড়ে যাচ্ছে। এটার কারণ প্রধানমন্ত্রী বিশ্বাস করেন মুক্তিযোদ্ধাদের জন্যই এই দেশ স্বাধীন হয়েছিল। এই কারণে আমরা বাংলাদেশে পরিণত হয়েছি। এজন্য মুক্তিযোদ্ধাদের কোনো দাবি তিনি মুখ থেকে ‘নো’ বলেন না।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যখন মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি দেশের শাসনভার গ্রহণ করে তখন দেশ দ্রুতগতিতে এগিয়ে যায়। কারণ আমাদের নেতাদের দেশপ্রেম রয়েছে, সঙ্গে দুরদর্শিতা রয়েছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী অসম্ভবকে সম্ভব করছেন। তাই তিনি প্রতিটি জায়গায় সফল থেকে সফল হচ্ছেন। তার নেতৃত্ব শুধু বাংলাদেশে না সারা বিশ্ব তার নেতৃত্বের প্রশংসা করছে।’ সম্প্রতি শুদ্ধি অভিযান প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সম্ভাবনার একটি দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের জন্য ‘উন্নয়নশীল নিরাপত্তা’র দরকার বলে মনে করেন। তিনি এজন্যই আজকে যে শুদ্ধি অভিযানে কথা বলেন কিংবা দুর্নীতিবাজদের চিহ্নিত করেছেন তার কারণ সুশাসন প্রতিষ্ঠিত করতে চাচ্ছেন। যেভাবে তিনি (প্রধানমন্ত্রী) এগিয়ে যাচ্ছেন এতে যদি সুশাসন প্রতিষ্ঠিত না হয় তাহলে হয়ত আমরা আবারো পথ হারাবো। টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়ার সব স্তরের মানুষ তার জন্য দোয়া করছেন, ‘শেখ হাসিনায় পারবেন দেশকে বদলে দিতে।’ এটা তিনি করে যাচ্ছেন।’

মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের উদ্দেশ্যে স্বরাষ্টমন্ত্রী বলেন, ‘তোমরা যারা মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা আছো তাদের মনে রাখতে হবে- আমাদের ধমনীতে মুক্তিযুদ্ধের রক্ত প্রবাহিত হচ্ছে। এটা মনে রাখলেই হবে; আর কিছু মনে না রাখলেও হবে। এখনো আমরা যারা বেঁচে আছি সবাই একদিন বিদায় নেবো। তোমরা মুক্তিযুদ্ধে কথা বলবে, দেশের কথা বলবে, দেশের বীরত্বের কথা বলবে সেটা চিন্তা আমরা করি। জয় বাংলা স্লোগান এটা কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের স্লোগান। এই মুক্তিযুদ্ধের স্লোগান নিয়ে কিন্তু আমরা সংগঠিত হয়েছিলাম। প্রথমে তো আমাদের কাছে অস্ত্রপাতি ছিল না। স্লোগান দিয়ে আমরা জয় করেছি। এই স্লোগান দিয়ে আমরা বাংলাদেশ স্বাধীন করেছি।’

Share this content:

Related Articles

Back to top button