,
প্রচ্ছদ | জাতীয় | আন্তর্জাতিক | অর্থনীতি | আমেরিকা | লাইফ স্টাইল | ভিডিও নিউজ | ফিচার | আমেরিকা | বিনোদন | রাজনীতি | খেলাধুলা | বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি | শিক্ষা

নাটকীয়তার সৌরভ ছড়িয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড

এবিএনএ : অবিশ্বাস্য, অনন্য সাধারণ, দুর্দান্ত ও টানটান উত্তেজনার ম্যাচে নাটকীয়তার সৌরভ ছড়িয়ে চ্যাম্পিয়ন নিউজিল্যান্ড! প্রিয় পাঠক, বিশ্বাস করুন এই প্রতিবেদক ভুল করে নিউজিল্যান্ডকে চ্যাম্পিয়ন বলেননি! আজকের ম্যাচ এতটাই নাটকীয়তা ছড়িয়েছে যে পাঁচবার, পাঁচ-পাঁচটিবার কি-বোর্ডের ‘ব্যাকস্পেস’ চেপে ক্রিকেট বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়নের নাম ঠিক করে নিতে হয়েছে! যাতে শেষ নামটি লেখা হলো ইংল্যান্ডের পক্ষে!

জীবনের প্রথম শিরোপা কি দুর্দান্ত একটি ম্যাচেই না জিতল ইংল্যান্ড! তাও ক্রিকেটের স্বর্গে। দুই শ কোটি ক্রিকেট ভক্তের নাভিশ্বাস তুলে। ১০২ ওভারের এই ম্যাচের সমাপ্তি যেখানে ৬১২তম বলে তখন নতুন করে কিছু লেখার আর কিইবা থাকতে পারে! তবে এতটুকু বলা যায়, সাদামাটা ও নিরুত্তাপ ম্যাচ ভেবে যারা খেলার মাঝখান থেকে টিভি সেট কিংবা অনলাইন থেকে সরে গেছেন, সারা জীবনের জন্য তাদের একটি আফসোস থেকে গেল! যে আফসোসে সারাজীবন পুড়বেন যেকোনো ক্রিকেট ভক্ত! না, এমনটি নয় যে তারা আর এই ম্যাচটি পুনরায় দেখতে পারবেন না! চাইলেই যে কেউ নেট ঘেঁটে ইচ্ছে মতো দেখতে পারবেন তবে হাইলাইটস। তবে ‘লাইভ’ খেলায় যে উত্তেজনা ও উচ্ছ্বাস সেটি আর থাকবে কই!

নাটকীয়তার পরিপূর্ণ অবিশ্বাস্য এই ম্যাচের চিত্রনাট্য কি কখনো কল্পনাতেও এসেছিল কারো? কি দুর্দান্ত একটি ম্যাচের পসরাই না সাজিয়ে বসেছিল ক্রিকেট স্বর্গ লর্ডস!  বিশ্বকাপের ইতিহাসে কি স্মরণীয় একটি ম্যাচ ই না প্রত্যক্ষ করল ক্রিকেট বিশ্ব। স্নায়ুচাপের এই মহাযুদ্ধে চাপ সামলে তাতে জয়ী ইংল্যান্ড। কিন্তু নামে ইংল্যান্ড চ্যাম্পিয়ন হলেও আজকের ম্যাচে জয়ী হয়েছে মূলত ক্রিকেট। এ রকম বৈচিত্র্যপূর্ণ ফাইনাল কেউ আদৌ দেখেছে কিনা তা নিয়ে তর্কে না জড়ানোর কোনো যৌক্তিকতা নেই। প্রশ্নাতীতভাবেই ক্রিকেট ইতিহাসের স্বর্ণাক্ষরে ‘বোল্ড’ হরফে লেখা থাকবে আজকের এই ম্যাচ। ৫০-৫০ মোট ১০০ ওভারের খেলার মোট ৬০০ বলের মধ্যে খেলার সমাপ্তি হলো শেষ বলে। ফলে বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথম টাই হওয়া ফাইনাল দেখল ক্রিকেট বিশ্ব। পরের সুপার ওভারেও পুনরায় টাই! আর তাতে সুপার ওভারে বেশি বাউন্ডারি হাঁকিয়ে চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড।

সেই ইংল্যান্ড, যারা ক্রিকেটের উদ্ভাবক হওয়া সত্ত্বেও বিশ্বকাপ শিরোপার খড়ায় পুড়ছিল এতদিন। তিনবার ফাইনালে গিয়েও হতাশ হতে হয়েছে। এবার ঘরের মাটিতে ফেভারিট হিসেবেই বিশ্বকাপ শুরু করেছিল তারা। ২৭ বছর পর এবারের বিশ্বকাপে ফাইনালে উঠে ইংল্যান্ড আজ খেলেছে ফেভারিটের মতোই। ১০০ ওভারেও বিজয়ী নিশ্চিত না হওয়ায় ম্যাচ গড়ায় সুপার ওভারে। তাতে সুপার ওভার খেলতে স্বাগতিকদের পক্ষে আসেন ম্যাচের দুই সফল ব্যাটসম্যান বেন স্টোকস এবং জস বাটলার। বল হাতে  নিউজিল্যান্ডের পক্ষে আসেন ট্রেন্ট বোল্ট। সুপার ওভারের প্রথম বলে স্ট্রাইকে এসে বোল্টের প্রথম বলে তিনি নেন ৩ রান। দ্বিতীয় বলে বাটলারের ব্যাট থেকে আসে ১ রান। তৃতীয় ডেলিভারিতে স্টোকস ডিপ মিড উইকেট দিয়ে ৪ মারলে রান গিয়ে পৌঁছায় আটে। চতুর্থ বলে অফসাইডের লো ফুল টস বলে ১ রান নেন স্টোকস। স্ট্রাইক পেয়ে পঞ্চম বলে ২ রান নেন বাটলার এবং শেষ বলে লো ফুলটস ডেলিভারিতে ৪ মেরে দলীয় সংগ্রহকে ১৫ তে নিয়ে যান এ উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান।

ফলে নিউজিল্যান্ডের সামনে জয়ের জন্য ৬ বলে লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৬ রানের। যা তাড়া করতে কিউইদের পক্ষে নামেন মার্টিন গাপটিল ও জিমি নিশাম। অন্যদিকে ইংলিশদের পক্ষে বল হাতে তুলে নেন গতি তারকা জোফরা আর্চার। অতিরিক্ত চাপে শুরুর বলটি ওপেনার জিমি নিশামের ব্যাট থেকে অনেক দূরে করে দেন ওয়াইড। পরের ইয়র্কার বলে ২ রান নিতে সক্ষম হন নিশাম। দ্বিতীয় বলেই বিশাল এক ছক্কার কল্যাণে শেষের ৪ বলে কিউইদের বাকি থাকে ৭ রান। ছন্দে থাকা নিশাম তৃতীয় বলে নেন আরো ২ রান। ফলে সহজ সমীকরণ নেমে আসে ৩ বলে ৫ রানে। চতুর্থ বলে আসে ২ রান। কিন্তু ৪ বলে ১৩ রান করেও শেষ দুই বলে ২ রানের বেশি করতে পারেননি। ফলে সুপার ওভারও টাই হয় এবং শিরোপা উঠে যায় ইংল্যান্ডের ট্রফি কেসে।

এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ইংলিশ পেসারদের তোপের মুখে পড়েছিল নিউজিল্যান্ড। তাদের শুরুটা ছিল সতর্ক। ক্রিস ওকসের বলে হেনরি নিকোলাসকে আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনা এলবিডাব্লিউ ঘোষণা করলেও রিভিউ নিয়ে বাঁচেন তিনি। তবে ফাইনালেও ব্যর্থ মার্টিন গাপটিল। দলীয় ২৯ রানে ১৯ রান করে ওকসের বলে এলবিডাব্লিউ হয়ে ফিরেন তিনি। শুরুর ধাক্কা সামলে নিকোলাসের সঙ্গে জুটি গড়ে দলকে এগিয়ে নিচ্ছিলেন কেন উইলিয়ামসন। দলের স্কোর একশ পার হতেই বিপদ।

লিয়াম প্ল্যাংকেটের বলে উইকেটকিপার জস বাটলারের গ্লাভসবন্দি হন ৫৩ বলে ৩০ রান করা কিউই অধিনায়ক। এর সঙ্গেই ভাঙে ৭৪ রানের প্রয়োজনীয় এক জুটি। ৭১ বলে ৪ বাউন্ডারিতে হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করেন নিকোলাস। আর বেশিদূর যেতে পারেননি। ৫৫ রানে তাকে বোল্ড করে দেন লিয়াম প্ল্যাংকেট। অভিজ্ঞ রস টেইলরকে নিয়ে স্বপ্ন দেখছিল কিউইরা। তাকে ১৫ রানে এলবিডাব্লিউ করে স্বপ্নভঙ্গ করেন মার্ক উড। আশার আলো হয়ে থাকা জেমস নিশামকে (১৯) ফিরিয়ে তৃতীয় শিকার ধরেন লিয়াম প্ল্যাংকেট।

৪৪তম ওভারে দুইশ পার হয় কিউইদের স্কোর। এরপরই গ্র্যান্ডহোমকে (১৬) বদলি ফিল্ডার জেমস ভিন্সের তালুবন্দি করেন ক্রিস ওকস। হাফসেঞ্চুরির কাছে গিয়ে ব্যর্থ হন ল্যাথাম। ৪৭ রান করে তৃতীয় শিকার হন ওকসের। শেষ ওভারে ম্যাট হেনরিকে (৪) বোল্ড করে দেন জোফরা আর্চার। ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন ক্রিস ওকস এবং লিয়াম প্ল্যাংকেট। ১টি করে উইকেট নিয়েছেন মার্ক উড এবং জোফরা আর্চার। নির্ধারিত ৫০ ওভারে কিউইদের সংগ্রহ ৮ উইকেটে ২৪১ রান।

২৪১ রানে ইংল্যান্ড ব্যাট করতে নামার সময় ধারণা করা ফাইনালটা সহজেই জিতে যাবে ইংল্যান্ড। শুরু থেকেই ইংল্যান্ডের ওপর চাপ ধরে রাখে ইংল্যান্ড। ৮৬ রানের মধ্যেই বিদায় নেন জেসন রয়, জনি বেয়ারস্টো, জো রুট ও ইয়ন মরগান। জস বাটলার ও বেন স্টোকসেরে মাটি কামড়ানো মনোভাবে শেষ পর্যন্ত ম্যাচে ফেরে ইংল্যান্ড। যখন মনে হচ্ছিল সহজেই জয় ছিনিয়ে নেবে ইংল্যান্ড ঠিক তখনই ম্যাচে ফেরে কিউইরা।
বাটলার ও ক্রিস উকসকে তুলে নিয়ে আবার সমীকরণ নিজেদের দিকে ঘুরিয়ে নেয় নিউজিল্যান্ড। শেষ ১২ বলে জয়ের জন্য ইংল্যান্ডের দরকার ছিল ২৪ রান। ঠিক তখনই ম্যাচে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ আরো জোরাল করে নিউজিল্যান্ড। জেমস নিশামের প্রথম দুই বলে আসে দুই রান। তৃতীয় বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ফিরে যান লিয়াম প্লাঙ্কেট। ম্যাচে তখন কিউইদের পূর্ণ আধিপত্য। ওভারের চতুর্থ বলে ছয় মেরে আবার স্বপ্ন জাগিয়ে তোলেন বেন স্টোকস। ৮ বলে তখন দরকার ১৬ রান। শেষ বলে জোফরা আর্চারকে বোল্ড করে আবার ম্যাচে ফেরে নিউজিল্যান্ড।

শেষ ওভারে জয়ের জন্য ইংল্যান্ডের দরকার ছিল ১৫ রান। প্রথম দুই বলে কোনো রান নিতে পারেননি স্টোকস। তৃতীয় বলে মিড উইকেটের ওপর দিয়ে মারলেন বিশাল এক ছক্কা। চতুর্থ বলে দুই রান নিতে নিয়ে ওভার থ্রো থেকে আসল ৫ রান। শেষ দুই বলে ইংল্যান্ডের দরকার ছিল ৩ রান। চতূর্থ বলে রান আউট হন আদিল রশীদ। শেষ বলে লাগত ১ বলে ২ রান। দুই রান নিতে গিয়ে রান আউট হন মার্ক উড যার কারণে বিশ্বকাপে প্রথম কোনো ফাইনাল টাই দেখতে পেল ক্রিকেট বিশ্ব!

Share this content:

Chairman & Editor-in-Chief : Shaikh Saokat Ali
Managing Editor : Khondoker Niaz Ikbal
Executive Editor : Mehedi Hasan
E-mail : abnanewsali@gmail.com
Usa Office: 2817 Fairmount, Avenue Atlantic city-08401,NJ, USA. Bangladesh Office : 15/9 Guptopara,Shemulbag, 2 nd floor,GS Tola, Teguriha, South Keraniganj, Dhaka. Usa. Phone: +16094649559, Cell:+8801978-102344, +8801715-864295
Server mannarged BY PopularServer
Design & Developed BY PopularITLimited