
এবিএনএ: দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, দুদক আইনে ঘুষ-দুর্নীতির সরকারি দায়িত্ব পালনের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়, যারা এমন কাজ করবেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে আমাদের কোনো বাধা নেই। বৃহস্পতিবার দুপুর সোয়া ২টায় রাজধানীতে দুদক কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। সরকারি কর্মচারীদের গ্রেফতারের আগে সরকার তথা ওই কর্মচারীর নিয়োগ কর্তৃপক্ষের অনুমতি লাগবে- এমন বিধান রেখে ‘সরকারি চাকরি বিল-২০১৮’ বুধবার জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে। জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক বিলটি পাসের প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। এ ক্ষেত্রে বিরোধী দলের জোরালো আপত্তি সংখ্যাগরিষ্ঠতায় নাকচ হয়ে যায়। এ আইন প্রসঙ্গে দুদুক চেয়ারম্যান বলেন, যারা ঘুষ-দুর্নীতিতে জড়িত, এই আইন পাশে তাদের খুশি হওয়ারও কোনো কারণ নেই। ফাঁদ মামলাসহ দুদকের অন্যান্য দুর্নীতিবিরোধী অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও ইকবার মাহমুদ জানিয়েছেন।
পাস হওয়া বিলের একাদশ অধ্যায়ের সরকারি কর্মচারী ফৌজদারি অপরাধ শীর্ষক ৪১ ধারার উপধারা (১)-এ বলা হয়েছে- কোনো সরকারি কর্মচারীর দায়িত্ব পালনের সহিত সম্পর্কিত অভিযোগে ফৌজদারি মামলায় অভিযোগপত্র আদালতে গৃহীত হইবার পূর্বে তাহাকে গ্রেফতার করিতে হইলে সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি গ্রহণ করিতে হইবে। তবে ১৯৬৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা অনুযায়ী, দুদক অনুসন্ধান ও তদন্ত পর্যায়েও যে কাউকে গ্রেফতার করতে পারে।
২০০৪ সালের দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের ৫ ধারায়ও এ বিধান বলবৎ রাখা হয়েছে। কিন্তু নতুন আইনটি কার্যকর হলে ওই সব বিধান সরকারি কর্মচারীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না। আলোচনায় বিরোধী দল ও স্বতন্ত্র সদস্যরা বলেন, ফৌজদারি অপরাধের জন্য মন্ত্রী-এমপিদের গ্রেফতারের অনুমতি লাগে না। কিন্তু তাদের অধীনে সরকারি কর্মচারীদের গ্রেফতারে কর্তৃপক্ষের অনুমতি লাগবে, এটি বৈষম্যমূলক। এটি কালো বিধান। জবাবে শ্রম প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক বলেন, সিভিল সার্ভিসের ওপর একটি সমন্বিত আইনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। সব পর্যায়ের সরকারি কর্মচারীদের একটি আইনি কাঠামোর আওতায় আনতে এ আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়া হয়।
‘এ আইনটি পাস হলে তা হবে একটি মাইলফলক। নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বিলটি চূড়ান্ত হয়েছে। নতুন করে যাচাই-বাছাইয়ের প্রয়োজন নেই।’ বিলের একই ধারার ৩ উপধারায় বিচারাধীন কোনো ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তি সরকারি কর্মচারী বলে দৃষ্টিগোচর হলে তা সরকার ও নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার বিধান রাখা হয়েছে। বলা হয়েছে, কোনো কর্মচারী ফৌজদারি অপরাধে এক বছরের বেশি দণ্ড, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার পর রাষ্ট্রপতি যদি তাকে অব্যাহতি দেন, সে ক্ষেত্রে ওই ব্যক্তিকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হলেও তিনি কর্মচারীতে পুনর্বহাল হবেন।
Share this content: