
এবিএনএ: নতুন সড়ক পরিবহন আইন গত ১ নভেম্বর চালু হলেও, ১ ডিসেম্বর থেকে আইনটির প্রয়োগ শুরু করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ। আইনের ব্যত্যয় ঘটালে হাতে লিখে মামলা দেয়ার পাশাপাশি চালক ও পথচারীদের মোটিভেশনও করছেন ট্রাফিক সদস্যরা। ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, প্রাথমিক পর্যায়ে কেউ গুরুতর অপরাধ করলেই মামলা বা জরিমানা করা হচ্ছে। সড়ক পরিবহন আইনের প্রয়োগ করা হচ্ছে হাতে লেখা কেস স্লিপের (মামলার রশিদ বই) মাধ্যমে। এর বাইরে ছোট অপরাধে ছাড় দিয়ে মোটিভেশন করা হচ্ছে।
জানা গেছে, গত রোববার (১ ডিসেম্বর) সকাল থেকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) চারটি ট্রাফিক বিভাগ একযোগে নতুন আইন প্রয়োগে তৎপর হয়। একজন অতিরিক্ত কমিশনার (এডিসি) বা সহকারী কমিশনারকে (এসি) প্রধান করে প্রতিটি জোনে একটি টিম গঠন করা হয়েছে। গুরুতর অপরাধ করলে তাদের বিরুদ্ধে ওই টিম মামলা দিচ্ছে।
কেউ যেন অহেতুক হয়রানির শিকার না হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখছেন ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তারা। তবে ট্রাফিক সার্জেন্টদের কাছে এখনও কেস স্লিপ বই হস্তান্তর করা হয়নি বলে জানা গেছে। তৃতীয় দিন মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) সকাল থেকে রাজধানীর শ্যামলী, কারওয়ানবাজার, বিজয় সরণি, মহাখালী, গুলশান ও রামপুরা এলাকা ঘুরে নতুন আইন প্রয়োগে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের তৎপর দেখা যায়।
ট্রাফিক পশ্চিম বিভাগের কারওয়ানবাজার এলাকার কর্তব্যরত সার্জেন্ট রেজাউল করিম বলেন, আমরা সকাল থেকে এখানে তিনটি মামলা দিয়েছি। আমাদের লক্ষ্য আইনটির যথাযথ প্রয়োগ করা। কিন্তু মামলার চাইতে আগে দরকার সচেতনতা। সেজন্য মামলার চেয়ে মোটিভেশনাল কার্যক্রমকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। যত্রতত্র রাস্তা পারাপারে উদগ্রীব পথচারীদের আটকে একসঙ্গে অনেকজনকে ছেড়ে দিচ্ছি। জেব্রা ক্রসিং ব্যবহার ও ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহারে উৎসাহিত করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে ডিএমপি ট্রাফিক (উত্তর) বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) প্রবীর কুমার রায় বলেন, নতুন আইনের প্রয়োগ শুরু করেছি। তবে মামলার আগে আমরা মোটিভেশন করছি। আইন মেনে চলার জন্য বোঝাচ্ছি। আইন মানার প্রবণতা বেশ লক্ষণীয়। তবে কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে পৌঁছাতে সময় তো লাগবেই। নতুন আইনের সঠিক প্রয়োগ নিশ্চিত করতে প্রাথমিকভাবে একজন সিনিয়র ট্রাফিক কর্মকর্তার নেতৃত্বে একটি টিম বানিয়ে কাজ করা হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। প্রবীর কুমার বলেন, গত দুদিনে ট্রাফিক উত্তরে ১২০টি মামলা করা হয়েছে।
ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের (উত্তর) যুগ্ম-কমিশনার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ওভারব্রিজ দিয়ে রাস্তা পারাপারে নির্দেশনা বাস্তবায়নে নিচে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে জনসচেতনতা সৃষ্টির কাজও চলছে। যারা আইন মানতে অপারগতা থেকে গুরুতর অপরাধ করছেন তাদের হাতের লেখা কেস স্লিপের মাধ্যমে মামলা দেয়া হচ্ছে। যেসব গাড়ির কাজগপত্র নেই, চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই তাদের এক ঘণ্টা ট্রাফিক সচেতনতার বিষয়ে কাউন্সিলিং করা হচ্ছে।
ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের (দক্ষিণ) যুগ্ম-কমিশনার বাসু দেব বণিক বলেন, প্রতিদিন সকাল-বিকেল অফিস টাইম শেষে গাড়ির চাপ দু-তিনগুণ বেড়ে যায়। চাপ সামলাতেই হিমশিম খেতে হয়। নতুন আইন প্রয়োগে সড়কে আইন মানার প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। মামলা কম হচ্ছে।
Share this content: