এবিএনএ: রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের জ্বালানি ইউরেনিয়ামের দ্বিতীয় চালান দেশে এসে পৌঁছেছে। রাশিয়া থেকে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসে ইউরেনিয়ামের এই চালান।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রূপপুর প্রকল্পের পরিচালক ও পরমাণু বিজ্ঞানী ড. মো. শৌকত আকবর। তিনি জানান, এরপর পর্যায়ক্রমে আরও পাঁচটি চালান দেশে আসবে। প্রথম সাতটি চালানোর পর ধাপে ধাপে আসতে থাকবে পারমাণবিক জ্বালানি। প্রতিটি চালানে ১২টি বান্ডেল থাকবে। এর আগে গত গত ২৮ সেপ্টেম্বর ইউরেনিয়ামের প্রথম চালান বাংলাদেশে পৌঁছায়। এই ইউরেনিয়াম আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে রূপপুর কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তরের কথা রয়েছে।
প্রস্তুতকারক রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পরমাণু শক্তি করপোরেশনের (রোসাটম) মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ এই জ্বালানি হস্তান্তর করবেন। হস্তান্তর অনুষ্ঠানে ভাচুর্য়ালি যুক্ত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি ভার্চুয়ালি যুক্ত হবেন।
ইউরেনিয়াম আসার মধ্য দিয়ে পারমাণবিক স্থাপনা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র। জ্বালানি এলেও কেন্দ্রটি পরীক্ষামূলক উৎপাদনে যাবে আগামী বছরের সেপ্টেম্বরে। জনগণের কাছে বিদ্যুৎ সুবিধা পৌঁছাবে ২০২৫ সালের শুরুতে। দেশের সবচেয়ে ব্যয়বহুল এই প্রকল্পের অন্যতম সুবিধাভোগী হবে উত্তরাঞ্চল। সার্বিকভাবে দেশের প্রথম পারমাণবিক কেন্দ্রটি মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) ২ শতাংশ অবদান রাখবে বলে আশা করছে সরকার।
রূপপুর কেন্দ্রে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াটের দুটি ইউনিট রয়েছে। প্রথম ইউনিটের ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক ড. শৌকত আকবর। দ্বিতীয় ইউনিটের অগ্রগতি ৭০ শতাংশ। তিনি জানান, আগামী এপ্রিলের মধ্যে প্রথম ইউনিট জ্বালানি স্থাপনের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত হবে। সঞ্চালন লাইন নির্মাণ শেষ হলে ইউরেনিয়াম ফুয়েল স্থাপন করা হবে। সেপ্টেম্বর মাসে পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হবে। প্রথম ধাপে ২০ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে। প্রথম ধাপের সফলতার পর ধাপে ধাপে ৫০ ও ৭০ শতাংশ এবং শেষ ধাপে পুরোপুরি উৎপাদনে যাবে। এই ধাপগুলো পার হতে সাধারণত ১০ মাস সময় লাগে। ২০২৫ সালের শুরুতে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হবে।