এ বি এন এ : পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমিবিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের বৈঠকের প্রতিবাদে তিন পার্বত্য জেলায় (রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান) সকাল-সন্ধ্যা হরতাল চলছে।
বাঙালি পার্বত্য নাগরিক পরিষদ, পার্বত্য গণপরিষদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম সম-অধিকার আন্দোলন, পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদ ও পার্বত্য বাঙালি ছাত্র ঐক্যপরিষদ এ হরতালের ডাক দেয়।
এদিকে হরতালের কারণে খাগড়াছড়িতে খোলেনি কোনো দোকানপাট ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। বন্ধ রয়েছে জেলার অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার সড়কে যান চলাচল। এখন পর্যন্ত কোথাও কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। শহরে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
এছাড়া রাঙ্গামাটিতে হরতালের সমর্থনে সকাল ৬টা হতে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পিকেটিংয়ে অংশ নিচ্ছেন হরতাল আহবানকারীরা। হরতালে জেলা সদরসহ উপজেলাগুলোতে সড়ক ও নৌপথে কোনো প্রকার যানবাহন চলাচল করতে পারছে না।
দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রয়েছে। সরকারি বিভিন্ন অফিস, আদালত, প্রতিষ্ঠান খোলা থাকলেও লোকজনের উপস্থিতি কম।
অন্যদিকে আইনশৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ ও নিরাপত্তাবাহিনীর টহল জোরদার রাখা হয়েছে। হরতালে এ পর্যন্ত কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। হরতালের পাশাপাশি বৈঠক স্থলটি ঘেরাও করে রাখার কর্মসূচি দেয়া হলেও প্রশাসনের বাধার মুখে পরে এ কর্মসূচি হতে সরে যান বিক্ষোভকারীরা।
পার্বত্য নাগরিক পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার আলকাছ আল মামুন ভূঁইয়া জানান, হরতালের পাশাপাশি রাঙ্গামাটির পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের কক্ষে অনুষ্ঠিতব্য কমিশনের বৈঠকস্থলটিও ঘেরাও করে রাখা হবে।
এদিকে ভূমি কমিশনের আসন্ন বৈঠক ও তার প্রতিবাদে ডাকা হরতাল ঘিরে রাঙ্গামাটিসহ তিন পার্বত্য জেলায় জনমনে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে।
প্রসঙ্গত পার্বত্য চট্টগ্রামে বিরাজমান ভূমি সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তিকল্পে দ্রুত কাজ করার উদ্দেশ্যে ১ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত নিয়মিত মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভায় ভেটিং সাপেক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমিবিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন (সংশোধন) আইন-২০১৬’র খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়।
এরপর ৮ আগস্ট রাষ্ট্রপতির সম্মতিক্রমে ৯ আগস্ট সংশোধিত আইনটির ওপর অধ্যাদেশ (নং-০১, ২০১৬) জারি করে সরকার। অধ্যাদেশ জারির কমিশনের প্রথম বৈঠক ৪ সেপ্টেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের রাঙ্গামাটির প্রধান কার্যালয় ভবনে আহ্বান করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মো. সামসুল আরেফিন জানান, পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি কমিশনের বৈঠক রোববার রাঙ্গামাটির পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠক শান্তিপূর্ণভাবে সফল করতে প্রয়োজনীয় যা করা দরকার তার সব পদেক্ষপ নেবে প্রশাসন।
বৈঠকের প্রতিবাদে পাঁচ বাঙালি সংগঠনের হরতাল ও ঘেরাও কর্মসূচির বিষয়ে তিনি বলেন, যে কেউ যে কোনো দাবি নিয়ে আন্দোলন করতে পারে। তবে সেটি যেন গণতান্ত্রিকভাবে হয়। কেউ আইনশৃংখলার বিনষ্ট ঘটাতে চাইলে তা যে কোনো মূল্যে প্রতিরোধ করা হবে।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) শহীদুল্লাহ বলেন, আইনশৃংখলা রক্ষায় সব ধরণের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। হরতালের নামে কেউ আইনশৃংখলার অবনতি ঘটাতে চাইলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।