এ বি এন এ : ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়া বলেছেন, শিশু হত্যার সাথে জড়িত সকল ব্যাক্তিদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।
আজ রাজধানীর গুলশানন্থ স্পেক্ট্রা কনভেনশন সেন্টারে সেভ দ্য চিল্ড্রেন বাংলাদেশ, প্লান ইন্টারন্যাশনাল এবং বাংলাদেশ শিশু একাডেমির যৌথ আয়োজনে ‘চাইল্ড পার্লামেন্ট’ এর ১৩ তম অধিবেশনে তিনি এ কথা বলেন। শিশু সংসদ সদস্যদের উদ্দ্যেশে ডেপুটি স্পিকার বলেন, ‘আমাদের পুরো পৃথিবীকে যদি একটি উদ্যান মনে করি তাহলে তোমরা সেই উদ্যানের ফুল। আর সেই নিস্পাপ ফুল অঙ্কুরে বিনাশ হয়ে যাবে তা কোন মতেই কাম্য হতে পারেনা। যে কোন ধরনের শিশু নির্যাতন এবং যে কোন ধরনের হত্যার আমরা তীব্র নিন্দা জানাই।’ তিনি বলেন, যারা এই ধরণের অমানুষিক কাজে নিজেদের জড়ায় তাদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। দেশে আর কোন ধরনের নির্যাতন, নিপীড়নে কোন শিশুর মৃত্যু ঘটুক এটা সরকার চায় না। তিনি বলেন, অতি সত্বর প্রতিরোধমূলক এবং একইসাথে বেশ কিছু সচেতনতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ অত্যাবশ্যক, প্রয়োজন একটি সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন।
কেন এ ধরণের ঘটনাগুলো ঘটে চলেছে – রাষ্ট্রীয়ভাবে সেটির সামাজিক ও প্রাতিষ্ঠানিক কারণসমূহ চিহ্নিত করা আবশ্যক। পরিবার থেকে শুরু করে সমাজ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী ও প্রয়োগকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যে শিশুদের ব্যাপারে সংবেদনশীল করা প্রয়োজন। ফজলে রাব্বী মিয়া বলেন, শিশুরা যে দেশের সম্পদ এবং তাদের নিরাপদ পরিবেশ প্রদান করা কেবল রাষ্ট্রের নয়, সকলের দায়িত্ব – এ বোধ সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে সঞ্চারিত করা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, শিশু রাকিব, রাজন হত্যার বিচার দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালের মাধ্যমে করা হচ্ছে। দৃষ্টিশক্তি হারানো শিক্ষার্থী শিশু শাহরিয়ার হৃদয় প্রমান করে দিয়েছে যে সকল বাধা অতিক্রম করে সাফল্য পাওয়া সম্ভব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিকতায় হৃদয়কে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো হয় । সে তার ডান চোখের দৃষ্টি ফিরে পায় এবং মাধ্যমিক পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হয় । হৃদয়ের ফলাফলে খুশি হয়ে গণ-মাধ্যমের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অভিনন্দন জানিয়েছেন । সবাই খবরের কাগজে শিশুদের সাফল্যের খবর দেখতে চায়। শিশু হত্যার খবর পত্রিকায় দেখতে চায় না। শিশুদের হাসিমাখা মুখ দেখতে চায়। তিনি বলেন, জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকারে আমলেই জাতীয় শশু নীতি, ২০১১ এর আলোকে শিশু আইন, ২০১৩ পাশ করা হয়েছে যার পূর্নাঙ্গ বাস্তবায়ন শিশু সুরক্ষায় একটি মাইলফলক। তিনি বলেন, ৩৮ হাজার শিশু আজ তাদের অধিকারের বিষয়ে সোচ্চার। তারাই একদিন দেশের মান-মর্যাদা, সুনাম এবং দেশকে সুন্দর ভাবে গড়ে তুলতেও সোচ্চার হবে। তখন হয়তো তোমাদের সাথে যোগ হবে আরো অনেক শিশু। তোমাদের আন্তরিক ভাবনা এবং সকলের চেষ্টায় একদিন বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা হবে ।
ডেপুটি স্পিকার বলেন, বাংলাদেশের ৬৪ জেলাতেই চাইল্ড পার্লামেন্ট এবং এনসিটিএফ এর বিস্তৃতি রয়েছে। প্রায় ৩৮ হাজার সচেতন শিশু রয়েছ যারা একদিন দেশের সচেতন নাগরিক হবে, লেখাপড়া করে বড় হবে, দেশের নেতৃত্ব গ্রহণ করবে। এটা দেশের জন্য একটা বড় পাওয়া। শিশুরাই পারে দেশের চিত্র সুন্দর করতে। এসময় তিনি শিশু বিষয়ক প্রতিবেদন করার ক্ষেত্রে আরো সংবেদনশীলতার পরিচয় দেয়ার, নির্যাতনের শিকার শিশুদের বিকৃত ছবি প্রচার করা থেকে বিরত থাকা এবং মিডিয়ায় শিশুদের নিয়ে আরও সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান প্রচার করার আহবান জানান।