এবিএনএ : সব সম্পর্কের শুরুটা থাকে তীব্র। ভালোবাসা, যত্ন, একজনের প্রতি আরেকজনের দায়িত্ববোধ, সবকিছুই থাকে চাওয়ার থেকে বেশি। কিন্তু একটা নির্দিষ্ট সময় পরে সেই তীব্রতা আর খুঁজে পাওয়া যায় না। ভালোবাসা ফ্যাঁকাসে হয়ে যায়। কথায় আছে বয়স হলে প্রেমিকের নীল চোখও ঘোলা হয়ে যায়। কিন্তু বয়স বাড়লেই সম্পর্কের শক্তি কমে যাবে বা সুতোয় টান পড়বে তেমনটা আসলে ঠিক নয়। বিখ্যাত অনেক বইয়ের লেখক ড. মার্ক গউলস্টন সম্পর্কের আবেগ আকর্ষণ ধরে রাখার কিছু উপায়ের কথা জানিয়েছেন। এসব অভ্যাস আপনার পরিবারকে সাধারণ থেকে আদর্শে পরিণত করতে পারে। চলুন জেনে নেওয়া যাক।
* একসঙ্গে ঘুমোতে যাওয়া : সম্পর্কের শুরুতে কি আপনার সেই দিনগুলোর কথা মনে পড়ে, যখন আপনি আপনার সঙ্গিনীকে ছাড়া ঘুমোতে যেতে পারতেন না? কিংবা সেই দীর্ঘ প্রতিক্ষা ভালোবাসার মানুষটা কখন কাছে এসে ধরা দিবে? সুখী দম্পতিরা বিয়ের কয়েক বছর পরেও একই সময়ে ঘুমোতে যাওয়ার অভ্যাসটিকে ধরে রাখেন। দু’জনের কারো যদি সকালে আগে ঘুম ভেঙ্গেও যায় তারপরেও তারা এই নিয়মে অটল থাকেন।
* সাধারণ আগ্রহের বিকাশ : ভালোবাসার সম্পর্ক যখন ফিকে হয়ে আসতে শুরু করে তখন অনেক দম্পতিই ভাবেন তাদের চিন্তা ধারার মধ্যে বা তাদের আগ্রহের মধ্যে মিল খুবই কম। কিন্তু আমাদের কখনই প্রিয়মানুষের সঙ্গে কাটানো মুহূর্তগুলোকে অবহেলা করা উচিত না। দম্পতিদের মধ্যে সাধারণ আগ্রহ গুরুত্ব পেলে তাদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস এর পরিমাণ বাড়তে থাকে। এছাড়া, প্রিয়জনের ব্যক্তিগত পছন্দকে কখনোই অবহেলা করা উচিত নয়। আর এই অভ্যাস আপনাকে আপনার সঙ্গীর কাছে আকর্ষণীয় করে তুলবে।
* সঙ্গীর হাত ধরা : পাশাপাশি হাঁটার সময় সঙ্গীর হাত ধরার সুযোগ কখনোই হারাবেন না। যদি আপনি কোনো কাজে ব্যস্ত থাকেন বা হাত খালি না থাকে তাহলে আপনার সঙ্গীর পাশাপাশি হাঁটুন। সঙ্গীকে পেছনে রেখে বা তাকে ওভারটেক করে হাঁটলে সঙ্গীর মনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
* সঙ্গীর প্রতি বিশ্বাস রাখুন এবং ক্ষমা করার শক্তি বৃদ্ধি করুন : সুখী দম্পতিরা তাদের মধ্যে ঝগড়ার পর কে সত্য বলেছে বা কে মিথ্যা বলেছে সে চিন্তায় না যেয়ে দুজন দুজনকে ক্ষমা করে দেন এবং ঝগড়ার বিষয় ভুলে যান। অবিশ্বাস আর বিরক্তি জন্মালেই সে সম্পর্কে টান পড়বে।
* সঙ্গীর ইতিবাচক গুণাবলীকে প্রাধান্য দিন : আপনি সবসময় দোষ খুঁজে পেতে পারেন। কিন্তু একই সময়ে আপনি সবসময় প্রশংসাজনক কিছুও খুঁজে পেতে পারেন। এটা নির্ভর করে আপনার দৃষ্টিভঙ্গির ওপর। সুখী দম্পত্তিরা ইতিবাচক মুহূর্ত দেখতে পছন্দ করেন
* সাক্ষাতে জড়িয়ে ধরুন : ত্বকেরও স্মৃতি থাকে। যখন ভালোবাসার মানুষ একজন আরেকজনকে জড়িয়ে ধরে তখন ত্বক সেই সংস্পর্শকে ইতিবাচক হিসেবে মনে রাখে, যেটা ত্বকের জীবনীশক্তিকে বৃদ্ধি করে এবং সম্পর্ককে আরো মজবুত করে।
* প্রায়ই ভালোবাসার কথা প্রকাশ করুন : সারাদিনের কর্মব্যস্ততা, ট্রাফিক জ্যাম, কাজের চাপ সহ্য করার মতো শক্তি ভালোবাসার মধ্যেই রয়েছে। ব্যস্ততার মাঝেও ভালোবাসার মানুষটির কথা ভাবুন অথবা সময় হলে তাকে একটি কল দিয়ে কথা বলুন মন ভালো হয়ে যাবে।
* একে অপরকে শুভরাত্রি জানান : বিশাল ঝগড়ার পরেও একে অপরকে শুভরাত্রি জানান। ঝগড়ার পরেও যদি আপনার সঙ্গী আপনার সঙ্গে রাতে ঘুমাতে চায় তবে বুঝতে হবে দুজনের ভালোবাসার মাঝে এই ঝগড়ার কোনো জায়গা নেই।
* সঙ্গীর দিন কেমন যাচ্ছে সেটা জানুন : আপনার সঙ্গীর দিন কেমন যাচ্ছে সেটা জানার চেষ্টা করুন। সকালে কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার পর তাকে কল দিয়ে পরিস্থিতি জানার চেষ্টা করুন। উদাহরণস্বরুপ: যদি সে তার কর্মক্ষেত্রে কঠিন সময় পার করে থাকে তাহলে তার বিকেলের মন মানসিকতা কেমন হবে সেটা আপনি বুঝতে পারবেন। সে অবশ্যই বিকেলে আপনার নতুন কেনা জামার ব্যাপারে আগ্রহী থাকবে না।
* সঙ্গীর প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করুন : সুখী দম্পতিরা তাদের সাক্ষাতে ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশে কোনো সংকোচ করেন না। সঙ্গীর হাত ধরা, তার কাঁধে হাত রাখা, সঙ্গীকে জড়িয়ে ধরা এ কাজে সুখী দম্পতিরা আশেপাশে কারো কথা ভাবেন না। বরং দুজন একসঙ্গে কতটা পরিপূর্ণ সেটাই প্রকাশ করতে ভালোবাসেন।
Share this content: