
এবিএনএ : বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদের গুলশানের বাড়িতে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়েছে। আজ বুধবার দুপুরের দিকে পুলিশের সহায়তায় এই অভিযান শুরু করে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ রাজউক।গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক জানিয়েছেন, রাজউকের একটি দল সেখানে গেছে। পুলিশ সেখানে উপস্থিত আছে।মওদুদ আহমদ গুলশানের যে বাড়িতে বাস করে আসছেন, সেই বাড়ির বিষয়ে সর্বোচ্চ আদালতের দেওয়া সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদন (রিভিউ) গত রোববার পর্যবেক্ষণসহ খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ। রায়ের তিনদিন পর বাড়িটিতে এই অভিযান শুরু হল।গত তিন দশক ধরে গুলশান-২ এর ১৫৯ নম্বর প্লটের বাড়িতে বসবাস করছেন মওদুদ। তার ভাইয়ের নামে জমিটির নামজারি করা হয়েছিল। এক বিঘা ১৩ কাঠা জমির ওপর ওই বাড়ি অবৈধভাবে দখল ও আত্মসাতের অভিযোগে ২০১৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর গুলশান থানায় মওদুদ ও তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে এই মামলা করেন দুদকের উপ-পরিচালক হারুনুর রশীদ।এই বাড়িটির দখল অবৈধ ঘোষণার বিরুদ্ধে মওদুদের করা রিভিউ আবেদন গত ৪ জুন খারিজ করে দেয় আপিল বিভাগ। ফলে তাকে বাড়িটি ছাড়তে হবে বলে সেদিন বলেছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।মওদুদ অবশ্য রায়ের পর এক প্রতিক্রিয়ায় বাড়িটি না ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। তিনি সেদিন বলেন, ‘এই রায়ে সরকারকে বাড়ির স্বত্ত্ব দেওয়া হয়নি, অধিকার দেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, ‘আমরা মূল মালিকের সঙ্গে বোঝাপড়া করব। উনার ছেলে করিম সুলায়মান আছেন। তাছাড়া আদালতও কিছু পর্যবেক্ষণ দেবেন।’গুলশানের সেই বাড়িটির প্রকৃত মালিক ছিলেন পাকিস্তানি নাগরিক মো. এহসান। ১৯৬০ সালে তৎকালীন ডিআইটির কাছ থেকে এই বাড়ির মালিকানা এহসান পান। ১৯৬৫ সালে বাড়ির মালিকানার কাগজপত্র এহসানের স্ত্রী অস্ট্রিয়ার নাগরিক ইনজে মারিয়া প্লাজের নামে নিবন্ধন করা হয়।১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে এহসান স্ত্রীসহ ঢাকা ত্যাগ করেন। তারা আর ফিরে না আসায় ১৯৭২ সালে এটি পরিত্যক্ত সম্পত্তির তালিকাভুক্ত হয়। ওই বছরই মওদুদ ওই বাড়ির দখল নেন। এরপর ১৯৭৩ সালের ২ অগাস্ট তারিখে মওদুদ ইনজে মারিয়া প্লাজের নামে একটি ‘ভুয়া’ আমমোক্তারনামা তৈরি করান এবং নিজেকে তার ভাড়াটিয়া হিসেবে দেখিয়ে ওই বাড়িতে বসবাস করতে থাকেন।দুদকের মামলায় বলা হয়, জিয়া সরকারের উপ প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে মওদুদ প্রভাব খাটিয়ে বাড়িটি পরিত্যক্ত সম্পত্তির তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার চেষ্টা করেন। এর ধারাবাহিকতায় ১০০ টাকা মূল্য দেখিয়ে ১৯৮০ সালে প্লটটি তিনি বরাদ্দ নেন।
Share this content: