আবারও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান

এবিএনএ : তুরস্কের নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে দ্বিতীয় মেয়াদে দেশটির প্রেসিডেন্ট হলেন রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। দেশটির নির্বাচন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এরদোয়ান ‘নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা’ পেয়েছেন। তুরস্কের নির্বাচন পদ্ধতি অনুযায়ী, এরদোয়ান যদি সার্বিকভাবে ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পান, তাহলে তাকে বিজয়ী ঘোষণা করা হবে ও দ্বিতীয় দফা নির্বাচনের আর প্রয়োজন হবে না। দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, ৯৯ শতাংশ ভোট গণনা করা হয়েছে, তাতে এরদোয়ান ৫৩ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মুহাররম ইঞ্জে পেয়েছেন ৩১ শতাংশ ভোট। বিরোধী রাজনৈতিক দল এখনো নির্বাচনে তাদের পরাজয় স্বীকার করেনি। তবে তারা জানিয়েছে, ফলাফল যাই হোক না কেন তারা গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করে যাবেন। এর আগে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে ভোটের যে ফলাফল ঘোষণা করা হচ্ছিল সেটি নিয়ে সন্দেহ পোষণ করেছিল বিরোধী রাজনৈতিক দল। চূড়ান্ত ফলাফল শুক্রবার প্রকাশ করা হবে। রোববার একই দিনে দেশটির প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এরদোয়ান বলেছেন, তার দল এ কে পার্টি সংসদেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে। তিনি বলেন, পুরো বিশ্বকে গণতন্ত্রের শিক্ষা দিয়েছে তুরস্ক। আশা করি নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে কেউ নেতিবাচক কিছু করার চেষ্টা করবে না।
তুরস্কের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, নির্বাচনে ৮৭ শতাংশ মানুষ ভোট দিয়েছে। বিভিন্ন খবরে জানা যাচ্ছে, সিএইচপি দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী মুহাররেম ইনজি তার পরাজয় স্বীকার করে নিয়েছেন। কিন্তু বিষয়টি সম্পর্কে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি না। ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও এরদোয়ান আগাম নির্বাচনের আয়োজন করেন। নির্বাচনের পর এরদোয়ান নতুন সংবিধান অনুযায়ী দেশ শাসন করবেন। নতুন সংবিধানে প্রধানমন্ত্রীর পদ বাতিল করা হবে এবং প্রেসিডেন্ট হবেন সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী।
নির্বাচনী প্রচারণার সময় এরদোয়ানের বিরুদ্ধে তার প্রধান প্রতিপক্ষ মুহাররেম ইনজি অভিযোগ করেন, তিনি কর্তৃত্ববাদী শাসন চালাচ্ছেন। এরদোয়ানের দল একে পার্টির মূল ভিত্তি হচ্ছে ইসলাম। অন্যদিকে, ইনজির দল মধ্য-বামপন্থী। তুরস্কের নির্বাচনে প্রধান ইস্যু ছিল দেশটির অর্থনীতি। দেশটির মুদ্রা লিরার ব্যাপক দরপতন হয়েছে ও দেশটিতে মুদ্রাস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ১১ শতাংশে। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল সন্ত্রাসবাদ। কুর্দি বিচ্ছিন্নতাবাদী ও জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট গ্রুপের হুমকি মোকাবেলা করাও তুরস্কের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সংবাদদাতারা বলছেন, শেষ পর্যন্ত ভোটাররা কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়েছিলেন। একটি হচ্ছে কুর্দি ও জাতীয়তাবাদীদের মধ্যে বিভক্তি এবং অপরটি হচ্ছে ধর্মীয় ও ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির মাঝে বিভক্তি। ২০১৪ সালে প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে ১১ বছর তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন এরদোয়ান। ২০১৬ সালে তার বিরুদ্ধে এক ব্যর্থ অভ্যুত্থানের পর থেকে দেশটিতে জরুরি অবস্থা চলছে।
Share this content: