
এবিএনএ : করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনের বিস্তারের মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার সিদ্ধান্ত হলেও টিকায় জোর দিচ্ছে সরকার; যেসব শিক্ষার্থীর স্বাস্থ্যঝুঁকি বেশি, আপাতত তাদের স্কুলে না গিয়ে অনলাইনে ক্লাসে যোগ দিতে বলা হচ্ছে। পাশাপাশি স্কুল শিক্ষার্থীদের মধ্যে যাদের বয়স ১২ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে, করোনাভাইরাসের টিকার অন্তত এক ডোজ নেওয়া না থাকলে ১২ জানুয়ারির পর তাদের স্কুলে যেতে নিষেধ করা হচ্ছে। টিকা না নেওয়া পর্যন্ত তাদের বাসায় থেকে অনলাইনে ক্লাস করতে বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
সোমবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “গত বছর সংক্রমণের যে পরিস্থিতিতে স্কুল-কলেজ ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়েছিল, এখন সংক্রমণ বাড়লেও পরিস্থিতি ঠিক সেই পর্যায়েই রয়েছে। তাই আপাতত আমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের চিন্তা করছি না। “আমরা বরং শিক্ষার্থীদের সবাইকে টিকার আওতায় নিয়ে এসে ক্লাস চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টায় আছি। কারণ এখনকার যেই ওমিক্রন, তাতে শিক্ষার্থীরা বাসায় থাকলেও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের মাধ্যমে আক্রান্ত হওয়া ঝুঁকি থাকছে।”
আগামী ৩১ জানুয়ারির মধ্যে ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের অন্তত এক ডোজ টিকা দেওয়ার কার্যক্রম শেষ করার পরিকল্পনা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, টিকা নেওয়ার জন্য তাদের আর নিবন্ধন লাগবে না। পরিচয়পত্র বা কোনোভাবে পরিচয়ের প্রমাণ দিলেই শিক্ষার্থীরা টিকা পাবে। এ মাসের শুরুতে মন্ত্রিসভা থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল, ১২ বছরের বেশি বয়সী শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা এখনও টিকা নেয়নি, তাদের আপাতত স্কুলে যেতে নিষেধ করতে হবে।
এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সেই সিদ্ধান্তও ঠিক থাকছে, ১২ জানুয়ারি থেকে তা কার্যকর হবে। “যারা এরই মধ্যে টিকা নিতে পারবে না তারা অনলাইনে বা টিভিতে ক্লাস করবে। আমরা অ্যাসাইনমেন্টের ব্যবস্থাও রাখব।” তাহলে প্রাথমিকের বা ১২ বছরের কম বয়সী শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে কী হবে জানতে চাইলে দীপু মনি বলেন, টিকা না পেলেও তারা স্কুলে যাবে। “১২ বছরের কম বয়সীদের মধ্যে সংক্রমণের ঘটনা কম এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শে তাদের টিকা দেওয়ার কথা বলা নেই। ফলে এসব শিক্ষার্থীরা টিকা গ্রহণ ছাড়াই স্কুলে যেতে পারছে।” তবে যেসব শিক্ষার্থী ক্যান্সারের মত দুরারোগ্য কোনো রোগে ভুগছে, অথবা শ্বাসকষ্টের মত জটিলতা আছে, কিংবা কোভিডে আক্রান্ত হলে যাদের ঝুঁকি বেশি, তাদের আপাতত স্কুলে না গিয়ে অনলাইনে ক্লাসে যোগ দিতে বলা হচ্ছে।
তিনি বলেন, স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত না হলেও সরকার পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করবে এবং তারা নিয়মিত আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন। এক সপ্তাহ পর আবারও কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় পরামর্শক কমিটির সঙ্গে বসবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। দেশে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর ব্যাপক বিধিনিষেধের মধ্যে ২০২০ সালের মার্চে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছিল সরকার। পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় ৫৪৩ দিন পর গত ১২ সেপ্টেম্বর আবার শ্রেণিকক্ষে ফেরে শিক্ষার্থীরা।
দীর্ঘদিন ধরে আটকে থাকা এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। তবে স্কুলে বার্ষিক পরীক্ষা না নিয়ে তাদের পরবর্তী শ্রেণিতে তুলে দেওয়া হয়েছে অ্যাসাইনমেন্ট ও পাঠ মূল্যায়নের মাধ্যমে। এরইমধ্যে গত নভেম্বরে করোনাভাইরাসের অতি সংক্রামক ধরন ওমিক্রন শনাক্ত হওয়ার পর বিশ্বজুড়ে নতুন করে উদ্বেগ বাড়ছে। বাংলাদেশেও ২১ জনের মধ্যে ওমিক্রনের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যে দেখা যাচ্ছে, গত এক সপ্তাহে দেশে কোভিড রোগী বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি। রোববার সকাল পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ৪৯১ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে, যা ১৫ সপ্তাহের মধ্যে সর্বোচ্চ।
Share this:
- Click to share on X (Opens in new window) X
- Click to share on Facebook (Opens in new window) Facebook
- Click to share on X (Opens in new window) X
- Click to share on LinkedIn (Opens in new window) LinkedIn
- Click to share on Reddit (Opens in new window) Reddit
- Click to share on WhatsApp (Opens in new window) WhatsApp