এবিএনএ : নারায়নগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন খানের ভোটের প্রচারণায় গণসংযোগে নেমেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সকাল ১১টায় সাখাওয়াতকে নিয়ে বিএনপি মহাসচিব এবং ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা শহরের মিড টাউন এলাকা থেকে গণসংযোগ শুরু করেন। পায়ে হেটে বঙ্গবন্ধু সড়ক দিয়ে গণসংযোগকালে মহাসচিবের পেছনে কয়েক‘শ নেতা-কর্মীর মিছিল ছিলো। বিপনী বিতানের দোকানে পাশে মানুষের হাতে লিফলেট তুলে দিয়ে ধানের শীষের প্রার্থী সাখাওয়াতের জন্য ভোট চান ফখরুল। শহরের কেন্দ্র বিন্দু মিড টাউনের জেলা কার্যালয়ে নিচে প্রচারনা শুরুর প্রাক্কালে নেতা-কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশ্যে মির্জা ফখরুল ভোট চেয়ে বলেন, ‘‘ দেশের মানুষ আজ ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়ে আছে। এই নারায়নগঞ্জ সিটি নির্বাচন যদি সুষ্ঠু হয়, তার উপরই নির্ভর করবে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ, তার ওপর নির্ভর করবে আরেকটি নির্বাচনের ভবিষ্যৎ।” ‘‘ আমরা বিশ্বাস করি, জনগনের ঐক্যবদ্ধ অবস্থানের ফলে অবশ্যই জনগনের বিজয়ী হবে এবং আগামীদিনগুলোতে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে।” নারায়নগঞ্জের ভোটারদের প্রতি আবেদন রেখে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘‘ নারায়নগঞ্জের মানুষ যারা আইনের শাসনে বিশ্বাস করে, যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে, যারা ভোটের অধিকারে বিশ্বাস করে, যারা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, তারা আজকে সবাই একত্রিত হয়েছে। এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নারায়নগঞ্জের মানুষ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রার্থী, ধানের শীষের প্রার্থীকে বিজয়ী করবেন।” এরপর দলের চেয়ারপারসনের পক্ষ থেকে মির্জা ফখরুল ধানের শীষের ছড়া সিটি মেয়র প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন খানের হাতে তুলে দেন। এ সময়ে তুমুল করতালি দিয়ে নেতা-কর্মীরা মুহুর্র মহুর্র করতালি দিতে থাকে।” প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন খান সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে ভোটাদের দোয়া ও ভোট চান। ‘‘এই নির্বাচন হচ্ছে ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনার নির্বাচন। আজ নারায়নগঞ্জে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। আমি আপনাদের দোয়া ও ভোট চাই।” ‘‘ একই সঙ্গে আপনাদের প্রতি আমার অনুরোধ থাকবে, এই নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমরা সকলে মাঠে থাকবো।” এখানে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, এনপিপি‘র ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, জেলা সভাপতি তৈমুর আলম খন্দকার, সাধারণ সম্পাদক কাজী মনিরুজ্জামান মুনির, সাবেক সাংসদ আবুল কালাম, গিয়াস উদ্দিন, ফতুল্লা বিএনপির সভাপতি শাহ আলম প্রমূখ বক্তব্য রাখেন। এরপরপরই গনসংযোগে সাখাওয়াতকে নিয়ে গণসংযোগে বেরুন মির্জা ফখরুল। গণসংযোগে বিএনপির প্রার্থী সাখাওয়াতের মহাসচিবসহ বিএনপি আবদুস সালাম, মিজানুর রহমান মিনু, ফজলুর রহমান, খায়রুল কবির খোকন, আমিনুল হক, শফিউল বারী বাবু, আবদুল কাদের জুয়েল, নিপুন রায় চৌধুরী, ঢাকা মহানগর যুবদল উত্তরের সাধারণ সম্পাদক এসএম জাহাঙ্গির হোসেন, ২০ দলীয় জোটের আজহারুল ইসলাম, সাঈদ আহমেদ, সাহাদাত হোসেন সেলিম, সাইফুদ্দিন মনি, শেখ জুলফিকার চৌধুরী বুলবুল, সৈয়দ মাহবুব হোসেন, মুফতি মহিউদ্দিন একরাম প্রমূখ নেতৃবৃন্দ ছিলেন। আগামী ২২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় এ নির্বাচনে মেয়র পদে বিএনপির অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন, আওয়ামী লীগের সেলিনা হায়াৎ আইভীসহ সাতজন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৫৬ জন এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৩৭ জন জয়ের জন্য লড়ছেন। নারায়ণগঞ্জের বর্তমান মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আইভী ২০১১ সালে দলের স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় অনেক নেতার বিরোধিতার মধ্যে প্রার্থী হয়ে দলের আরেক নেতা এ কে এম শামীম ওসমানকে হারিয়ে মেয়র নির্বাচিত হন। গণসংযোগে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে জাতীয় পার্টি(কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, এলডিপির রেদোয়ান আহমেদ, খেলাফত মজলিশের মাওলানা মুহাম্মদ ইসহাক, ইসলামী ঐক্যজোটের অ্যাডভোকেট এমএ রকীব প্রমূখ নেতৃবৃন্দ ছিলেন। এছাড়া ছিলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমানউল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, নারায়নগঞ্জের সভাপতি তৈমুর আলম খন্দকার, সাধারণ সম্পাদক কাজী মনিরুজ্জামান মুনীর, সাবেক সাংসদ আবুল কালাম, গিয়াসউদ্দিন প্রমূখ। নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে থেকে বিএনপি মহাসচিব জোটের নেতাদের নিয়ে সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে নারায়নগঞ্জে আসেন। মির্জা ফখরুল মিড টাউন, কলিবাজার, পুরান কোর্ট, গলাচিপা, চাষাড়ার ডিপো বাজার প্রভৃতি স্থানে লিফলেট দিয়ে ভোটারদের কাছে ভোট চান। নির্বাচন ঘিরে নারায়নগঞ্জ উৎসবমুখর হয়ে উঠেছে। সাদা-কালো পোস্টারে ছেয়ে গেছে মহানগরী। শনিবার ছুটির দিন হওয়ায় প্রার্থীদের জনসংযোগে বেড়েছে।