আদুরিকে নির্যাতন করা মামলায় গৃহকর্ত্রী নদীর যাবজ্জীবন

এবিএনএ : গৃহকর্মী আদুরিকে নির্যাতন করে মৃত ভেবে ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়ার মামলার আসামি গৃহকর্ত্রী নওরীন জাহান নদীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যাল-৩ এর বিচারক জয়শ্রী সমদ্দার এ রায় দেন।
এই রায়ে নদীকে এক লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আর তার মা ইসমত জাহানকে বেকুসর খালাস দিয়েছেন আদালত। রায় শেষে নদীকে সাজা পরোয়ানাসহ কারাকারে প্রেরণ করা হয়েছে। এর আগে গত ৯ জুলাই আদালত রায় ঘোষণার জন্য আজকের দিন ধার্য করেছিলেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মাহমুদা আক্তার, আদুরির মামলা পরিচালনাকারী বাংলাদেশে জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির অ্যাডভোকেট ফাহমিদা আক্তার রিংকি উপস্থিত ছিলেন।
২০১৩ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় রাজধানীর বারিধারা ও ডিওএইচএস তেলের ডিপোর মাঝামাঝি রেললাইন সংলগ্ন একটি ডাস্টবিনের পাশ থেকে অচেতন অবস্থায় কঙ্কালসার ও মৃতপ্রায় গৃহকর্মী আদুরিকে (১১) উদ্ধার করা হয়।
এ সময় তার শরীরে অসংখ্য নির্যাতনের চিহ্ন ছিল। মারধর, গরম খুন্তি ও ইস্ত্রির ছ্যাঁকা, ব্লেড দিয়ে শরীর চেরা ও মাথায় কোপের চিহ্ন স্পষ্ট ছিল। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রায় দেড় মাস চিকিৎসা শেষে ওই বছরের ৭ নভেম্বর পটুয়াখালী জেলার জৈনকাঠি ইউনিয়নের নিজ গ্রামে ফিরে যায় আদুরি।
ওই ঘটনায় ২০১৩ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর পল্লবী থানায় গৃহকর্ত্রী নওরীন জাহান নদী, তার স্বামী সাইফুল ইসলাম মাসুদ, মাসুদের দুলাভাই চুন্নু মীর ও তাদের আত্মীয় রনিকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়।
প্রাথমকি তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় অভিযোগপত্র থেকে মাসুদ, চুন্নু মীর ও রনির নাম বাদ দেয় পুলিশ। একই সঙ্গে তদন্তে নদীর মা ইসরাত জাহানের সম্পৃক্ততা পাওয়ায় নতুন করে তাকে আসামি করা হয়।
মামলার দিনই গ্রেফতার করা হয় নদীকে। বর্তমানে তিনি কারাগারে আছেন। জামিনে রয়েছেন তার মা ইসরাত জাহান। গ্রেফতারের পর ওই বছরের ১ অক্টোবর ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় আদুরিকে নির্যাতনের কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন নদী। আদুরিও নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২২ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
এরপর ২০১৩ সালের ১০ অক্টোবর গৃহকর্ত্রী নওরীন জাহান নদী ও তার মা ইসরাত জাহানকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন পুলিশের নারী সহায়তা ও তদন্ত বিভাগের উপপরিদর্শক (এসআই) কুইন আক্তার।
Share this content: