,
প্রচ্ছদ | জাতীয় | আন্তর্জাতিক | অর্থনীতি | আমেরিকা | লাইফ স্টাইল | ভিডিও নিউজ | ফিচার | আমেরিকা | বিনোদন | রাজনীতি | খেলাধুলা | বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি | শিক্ষা

মহিমান্বিত কদরের রাতে ইবাদত ও প্রার্থনা

এবিএনএ: পবিত্র রমজান মাস ও তার শেষ দশকের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো কদরের রাত। হাদিসের ভাষ্য অনুসারে রমজানের শেষ দশকের যে কোনো বেজোড় রাতই কদরের রাত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যদিও বহু সংখ্যক আলেম ২৭ রমজানের রাতকে কদরের রাত বলে অভিমত দিয়েছেন। পবিত্র কোরআনের ভাষায় কদরের রাত হাজার মাসের চেয়ে উত্তম। মহান আল্লাহ কদরের রাতকে ‘বরকতময়’ বলেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি এটা অবতীর্ণ করেছি এক মোবারক রাতে। আমি সতর্ককারী। এই রাতে প্রত্যেক প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয় স্থিরীকৃত হয়।’ (সুরা দুখান, আয়াত : ৩-৪)

আল্লাহ ‘কদর’ নামে একটি পূর্ণ সুরা অবতীর্ণ করেছেন। যাতে তিনি এই রাতের মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আমি কোরআন অবতীর্ণ করেছি মহিমান্বিত রাতে। আর মহিমান্বিত রাত সম্পর্কে তুমি কি জানো? মহিমান্বিত রাত হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। সে রাতে ফেরেশরা ও রুহ অবতীর্ণ হয় প্রত্যেক কাজে তাদের প্রতিপালকের অনুমতিক্রমে। শান্তিই শান্তি, সেই রাত ঊষার আবির্ভাব পর্যন্ত।’ (সুরা কদর, আয়াত : ১-৫)

আয়াত দ্বারা প্রমাণিত হয়, কদরের এক রাতের ইবাদত কম-বেশি প্রায় ৮৩ বছর ইবাদত করার সমান। তাই মহিমান্বিত এই রাতের অনুসন্ধান করা আবশ্যক। সুরা দুখানের আয়াত থেকে ইঙ্গিত মেলে কদরের রাতে আল্লাহ ফেরেশতাদের কাছে পুরো বছরের ভাগ্যলিপি হস্তান্তর করেন। সুতরাং অনাগত দিনগুলো যেন সুন্দর হয় কদরের রাতে সেটাও করা প্রয়োজন। একাধিক হাদিসে মহানবী (সা.) কদরের রাতে ইবাদত-বন্দেগি, জিকির ও দোয়া করতে উৎসাহিত করেছেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে সাওয়াবের আশায় কদরের রাতে জাগ্রত থাকবে (ইবাদত করবে) তার অতীতের গুনাহ ক্ষমা করা হবে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৭৬৮)

আনাস বিন মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘এই যে মাস (রমজান) তোমরা লাভ করেছ তাতে এমন একটি রাত আছে যা হাজার মাসের চেয়ে উত্তম। যে ব্যক্তি তার কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হলো সে যাবতীয় কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হলো। আর হতভাগ্য ব্যক্তিই কেবল তার কল্যাণ ও বরকত থেকে বঞ্চিত হয়।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৬৩৪)

কদরের রাত কেমন হবে তার একটি ইঙ্গিতও হাদিসে রয়েছে। তা হলো মেঘ ও বৃষ্টি থাকা। আবু সাঈদ খুদরি (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) রমজান মাসের মাঝের দশকে ইতিকাফ করেন। ২০ তারিখ অতীত হওয়ার সন্ধ্যায় এবং ২১ তারিখের শুরুতে তিনি ও তাঁর সঙ্গে যাঁরা ইতিকাফ করেছিলেন সবাই নিজ নিজ বাড়ি ফিরে গেলেন। সে রাতে তিনি ভাষণ দেন। তাতে বহু নির্দেশ দান করেন। অতঃপর বলেন যে, আমি এই দশকে ইতিকাফ করেছিলাম। এরপর আমি সিদ্ধান্ত করেছি যে, শেষ দশকে ইতিকাফ করব। যে আমার সঙ্গে ইতিকাফ করেছিল সে যেন তার ইতিকাফস্থলে থেকে যায়। আমাকে সে রাত দেখান হয়েছিল, পরে তা ভুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। তোমরা শেষ দশকে ঐ রাতের তালাশ করো এবং প্রত্যেক বেজোড় রাতে তা তালাশ করো। আমি স্বপ্নে দেখেছি যে, সে রাতে আমি কাদা-পানিতে সিজদা করছি। সে রাতে আকাশে প্রচুর মেঘের সঞ্চার হয় এবং বৃষ্টি হয়। মসজিদে আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর নামাজের স্থানেও বৃষ্টির পানি পড়তে থাকে। এটা ছিল ২১ তারিখের রাত। যখন তিনি ফজরের নামাজ শেষে ফিরে বসেন তখন আমি তাঁর দিকে তাকিয়ে দেখতে পাই যে, তাঁর মুখমণ্ডল কাদা-পানি মাখা। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২০১৮)

কদরের রাতের বিশেষ ইবাদত হলো নামাজ আদায় করা এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা। আম্মাজান আয়েশা (রা.) রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমি যদি জানতে পারি লায়লাতুল কদর কোনটি তাহলে আমি সে রাতে কি বলব? তিনি বলেন, তুমি বলো, আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউয়ুন কারিমুন, তুহিব্বুল আফওয়া, ফা’ফু আন্নি। অর্থ : হে আল্লাহ! নিশ্চয়ই আপনি ক্ষমাশীল দয়ালু, আপনি ক্ষমা করতে ভালোবাসেন। সুতরাং আপনি আমাকে ক্ষমা করুন।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৩৫১৩)

বুজুর্গ আলেমরা বলেন, মহিমান্বিত এই রাতে আল্লাহর ক্ষমা ও দয়া সে ব্যক্তিই লাভ করবে, পরিচ্ছন্ন দেহ ও মন নিয়ে আল্লাহর দরবারে হাজির হবে। আল্লামা ইবনে রজব হাম্বলি বলেন, ‘‘উত্তম হলো যে রাতে ‘কদর’ অনুসন্ধান করা হবে তাতে পরিচ্ছন্নতা অর্জন করা, সুগন্ধি ব্যবহার করা, গোসল-সুগন্ধি-উত্তম কাপড়েরর মাধ্যমে সৌন্দর্য বর্ধন করা। আর বাহ্যিক সৌন্দর্যের জন্য যথষ্টে নয়, যদি না মানুষের ভেতরটা সুন্দর হয়। মানুষের ভেতর সুন্দর হয় তাওবা ও আল্লাহমুখী হওয়ার মাধ্যমে।’ (লাতায়িফুল মাআরিফ, পৃষ্ঠা ১৮৯)

যেহেতু কদরের রাত কবে হবে সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তারিখ ঘোষিত হয়নি, তাই মুমিনের উচিত রমজানের শেষ দশকের প্রত্যেক বেজোর রাতে কদর অনুসন্ধান করা। ঠিক যেমনটি মহানবী (সা.) বলেছেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতে লাইলাতুল কদর অনুসন্ধান করো।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২০১৭)

হে আল্লাহ! আপনি আমাদের কদরের রাতের যাবতীয় কল্যাণ দান করুন। আমিন। লেখক : মুহাদ্দিস, সাঈদিয়া উম্মেহানী মহিলা মাদরাসা, ভাটারা, ঢাকা।

Chairman & Editor-in-Chief : Shaikh Saokat Ali
Managing Director: Akbar Hossain
Executive Editor: Mehedi Hasan
E-mail : abnanewsali@gmail.com
Usa Office: 2817 Fairmount Avenue Atlantic city-08401,NJ, USA. Bangladesh Office : 15/9 Guptopara,Shemulbag, 2 nd floor,GS Tola, Teguriha, South Keraniganj, Dhaka. Usa. Phone: +16094649559, Cell:+8801978-102344, +8801715-864295
Server mannarged BY PopularServer
Design & Developed BY PopularITLimited