এবিএনএ: বিএনপিকে হুমকি দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘বাড়াবাড়ি করবেন না। বাড়াবাড়ি করলে খবর আছে। আওয়ামী লীগও প্রস্তুত আছে।’ মঙ্গলবার ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে মেধাবৃত্তি, দরিদ্র তহবিলে অনুদান ও শিক্ষা উপকরণ বিতরণ ও আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। শেখ রাসেল দিবস উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘পৃথিবীতে অনেক হত্যাকাণ্ড হয়েছে, কারবালায় হত্যাকাণ্ড হয়েছে কিন্তু কোনো হত্যাকাণ্ডে শিশু ও অন্তঃসত্ত্বা নারীকে হত্যা করা হয়নি। কিন্তু বাংলাদেশ একমাত্র দুর্ভাগা যেখানে শিশু ও অন্তঃসত্ত্বা নারীকে হত্যা করা হয়েছে। যারা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তাদের সঙ্গে আমাদের এই দেশে রাজনীতি করতে হয়। যারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পরে তাদের পুনর্বাসন করেছে তাদের সঙ্গে রাজনীতি করতে হয়।’ তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জিয়াউর রহমান জড়িত। জিয়াউর রহমানই দেশের মধ্যে হত্যার রাজনীতি শুরু করেছিল। কারাগারে চার নেতা হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিলেন জিয়াউর রহমান। কিন্তু ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করে না। হত্যা, হত্যাকে ডেকে আনে। জিয়াউর রহমানের মতোই তার ছেলে তারেক রহমান বঙ্গবন্ধু পরিবারকে নিঃশেষ করতে গ্রেনেড হামলা করেছিল।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘শেখ হাসিনা মানবিক বলেই খালেদা জিয়াকে বাসায় থাকার সুযোগ করে দিয়েছেন। মামলা দিয়েছে সাবেক তত্বাবধায়ক সরকার, আমরা দিইনি। তারপর বিএনপির মধ্যে কোনো মানবিকতা নেই।’
আন্দোলন করতে বিদেশে থেকে টাকা আসছে বিএনপির- এমন মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মাল পানি চালান ভালোই আছে ফখরুল ইসলাম আলমগীরের পকেট। তার পকেট গরম।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের নাকি চলে যেতে হবে। এটা নাকি শেষ বার্তা। দুনিয়া থেকে চলে যাওয়ার রাজনীতি তারাই শুরু করেছিল। এখন তারাই শেষ বার্তা দেয়। কোথা থেকে এলো এই বার্তা, কে দিল এ বার্তা? গত ১৫ বছরে তারা এই রকম ১৫শ বার্তা দিয়েছে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মরা নদীতে জোয়ার আসবে না। ফখরুল ইসলাম আলমগীরের পকেট গরম তো, তাই তার মাথাও গরম। কোথা থেকে এলো এই টাকা, তারেক রহমান দিয়েছে? যতই বার্তা দেন কোনো লাভ হবে না। আমাদের সঙ্গে দেশের মানুষ আছে, কোনো বার্তায় কাজ হবে না।’ ‘বিদেশি নয়, আওয়ামী লীগের ক্ষমতা দেশের মানুষ। যতই বার্তা দেন, আওয়ামী লীগ সংবিধানের বাইরে একচুলও নড়বে না’-বলেন ওবায়দুল কাদের।
বিদেশিদের কথা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘দেশি-বিদেশি অনেকেই সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন করার কথা বলেন। আমরা দেশি-বিদেশি বন্ধুদের জানিয়ে দিতে চাই, আমরা সংবিধানের আলোকে গ্রহণযোগ্য, নিরপেক্ষ নির্বাচন করব। সংবিধানের বাইরে একচুলও নড়ব না। ২০০৮ সালে বিএনপি নির্বাচনে মাত্র ২৮টি আসন পেয়েছিল। তারা বলে গণতন্ত্রের কথা। আমরা সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন করে দেখিয়ে দেব আমরাই গণতন্ত্র চাই।’
বিএনপির কর্মসূচির কথা উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘টাকা দিয়ে ঢাকায় ক্যাডার আনছে বিএনপি। তাদেরকে বাড়তি পোশাক নিয়ে আসতে বলেছে। তারা ঢাকায় বিভিন্ন জায়গায় এসে উঠছে। আত্মীয়স্বজনের বাসায়, আবাসিক হোটেলে উঠছে। তারা নাশকতা করতে ঢাকায় আসছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলেও রুম চাইবে। তারা নাশকতা করতে চাইবে। এদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। তারা বাড়াবাড়ি করতে চায়। আওয়ামী লীগও প্রস্তুত আছে। বাড়াবাড়ি করলে খবর আছে।’ আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটির চেয়ারম্যান একেএম রহমত উল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।
অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, উপপ্রচার সম্পাদক সৈয়দ আব্দুল আউয়াল শামীম, কার্যনির্বাহী সদস্য শাহাবুদ্দিন ফরাজি প্রমুখ।