এবিএনএ : নিত্যপণ্যের মূল্য পরিস্থিতি পর্যালোচনায় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তবে চলতি বছরে প্রথম এই বৈঠক থেকে তেমন কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য সচিব। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, বৈঠকে ব্যবসায়ীদের নিয়মনীতি মেনে ব্যবসা করার কথা স্মরণ করিয়ে দিলে তারা তা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
বুধবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ওই বৈঠকে আমদানিকারক, বড় সরবারহকারী, বিভিন্ন ব্যবসায়ী সমিতির প্রতিনিধিসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তারা অংশ নেন। বাজারে নিত্যপণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখার বিষয়টি শুধু বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একার নয় জানিয়ে বাণিজ্য সচিব বলেন, এর সঙ্গে অনেকগুলো মন্ত্রণালয় জড়িত। পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা প্রয়োজন। বাজার মনিটরিং জোরদারের মাধ্যমে নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার উদ্যোগ নেয়া হবে।
চিনি ও ভোজ্যতেলের দামের বিষয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়। আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্য তেলের দাম বাড়লেও দেশে চলতি মাসে তেলের দাম একই থাকবে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়। ভোজ্যতেল নিয়ে সচিব বলেন, ‘ভোজ্য তেলের বাজার ঊর্ধ্বমুখী হলেও দেশে সরবরাহের কোনো ঘাটতি নাই। আবার বিদেশে দাম বাড়লেও দেশে ভোজ্যতেলের দাম প্রতি লিটার বোতলজাত তেল আগের মত ১৪৯ টাকাতেই থাকবে। তবে ভোজ্যতেলের দাম প্রকৃত অর্থে কত হওয়া উচিত সেটি নির্ধারণ করবে এই সংক্রান্ত জাতীয় কমিটি। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই দাম নির্ধারণ করা হবে।’
দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের স্বাভাবিক সরবরাহ রয়েছে জানিয়ে বাণিজ্য সচিব বলেন, গত কয়েক দিনে দেশের বাজারে চাল, চিনি ও খোলা ভোজ্য তেলের দাম বেশ বেড়েছে। সেটি হয়েছে শুধু আন্তর্জাতিক বাজারে দামের ঊর্ধ্বগতির কারণে। তবে এসব পণ্যের সরবরাহ সংকট নেই। চালের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকারের নেওয়া উদ্যোগের কথাও জানানো হয় বৈঠকে।
বাণিজ্যসচিব বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে চালের দাম বাড়ায় আমদানিকারকদের চাল আমদানিতে শুল্ক সাড়ে ৬২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে ইতিমধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রায় সাত লাখ টন চাল আমদানির অনুমতি দিয়েছে। অল্প কিছু দিনের মধ্যেই এই চাল দেশে এলে দাম কমে আসবে।’
চিনির দাম প্রসঙ্গে সচিব জানান, চিনির দাম এখন ৭৫ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এর চেয়ে বেশি কোনোভাবে যাতে না বাড়ে সেক্ষেত্রে চাল চিনিসহ সব নিত্যপণ্যের বাজার মনিটরিং জোরদার করা হবে। বৈঠকে এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী, প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারম্যান মফিজুল ইসলাম, টিসিবির চেয়ারম্যান আরিফুল হাসান, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।