এবিএনএ: অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার ২০১৯ বিজয়ী হয়েছেন অর্থনীতিবিদ এসথার ডুফলো ও তার স্বামী অভিজিৎ ব্যানার্জি। এ পুরনো খবর। নতুন খবর হলো, নোবেল পুরষ্কার গ্রহণের জন্য এই দম্পতি উপস্থিত হয়েছেন বাঙ্গালির ঐতিহ্যবাহী পোশাক ধুতি ও শাড়ি পরে। শুধু নোবেল পুরষ্কার লাভ করে যে বাঙ্গালিদের সম্মানিত করেছেন অভিজিৎ ব্যানার্জি তা নয়। বরং পুরষ্কার নেয়ার সময় আরও একবার নিজ দেশ ও জাতিকে বিশ্বের সঙ্গে পরিচিত করিয়েছেন তিনি।
নোবেল বিজয়ের পর এমআইটি’র এই অধ্যাপক শুদ্ধ বাংলায় বক্তব্য দিয়ে একবার বাঙ্গালিদের মন জয় করে নেন। এবার বাঙ্গালির ঐতিহ্যের পোশাক পরে মঙ্গলবার সুইডেনের স্টকহোমে কনসার্ট হলে উপস্থিত হন তাঁরা নোবেল পুরষ্কার গ্রহণের জন্য। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অভিজিৎ ব্যানার্জির মা নির্মলা, তার দুই সন্তান নোয়ামি ও মিলান এবং ভাই অনিরুদ্ধ ও তার পরিবার। অভিজিৎ ব্যানার্জি ছাড়াও এবার অর্থনীতিতে নোবেল বিজয়ী হয়েছেন তার স্ত্রী এসথার ডুফলো এবং মার্কিন অর্থনীতিবিদ মাইকেল ক্রেমার। সুইডেনের রাজা ষোড়শ কার্লের কাছ থেকে নোবেল বিজয়ী তিনজন পুরস্কার গ্রহণ করেন।
পুরস্কার গ্রহণ অনুষ্ঠানে অভিজিৎ ব্যানার্জির পরনে ছিল ধুতি, পাঞ্জাবি ও কুর্তি। অন্যদিকে তার স্ত্রী এসথার ডুফলো শাড়ি-ব্লাউজ পরে পুরষ্কার গ্রহণ করেন। অভিজিৎ ব্যানার্জির বন্ধু বাপ্পী সেন বলেন, এখানেই বাকিদের থেকে তার (অভিজিৎ) পার্থক্য। বিশ্বের সবচাইতে সম্মানিত আসরে উপস্থিত হওয়ার সময়ও নিজের দেশ ও জাতিকে উপস্থাপনের কথা ভোলেনি সে। তার নিজের ব্যক্তিগত অর্জন ত রয়েছেই। কিন্তু এর পাশাপাশি এমন আচরণ আমাদেরকে আরও গর্বিত করে। আমার শৈশবের বন্ধু ‘ঝিমা’ আজ বিশ্বের ইতিহাসে স্থান করে নিচ্ছে, এটি অসাধারণ এক মুহূর্ত।
অভিজিৎ ব্যানার্জির পূর্ণ নাম অভিজিৎ বিনায়ক ব্যানার্জি। তিনি ভারতের কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় ও হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। পিএইচডি করেন ১৯৮৮ সালে। বর্তমানে তিনি ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজিতে (এমআইটি) ফোর্ড ফাউন্ডেশন ইন্টারন্যাশনাল প্রফেসর হিসেবে অর্থনীতি পড়াচ্ছেন। ২০০৩ সালে তিনি এসথার ডুফলো ও সেন্ধিল মুল্লাইনাথানকে সাথে নিয়ে আব্দুল লতিফ জামিল পোভার্টি অ্যাকশন ল্যাব প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক অভিজিৎ জন্মগ্রহণ করেছেন ১৯৬১ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি।
ফ্রান্সে জন্ম নেয়া ৪৭ বছর বয়সী এসথার ডুফলো বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরুতে ইতিহাস ও অর্থনীতি বিষয়ে পড়াশোনা করেন। ১৯৯৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি) থেকে অর্থনীতিতে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন তিনি। অভিজিৎ ব্যানার্জির সঙ্গে তার লেখা বই ‘পোওর ইকোনমিক্স: এ র্যাডিকাল রিথিঙ্কিং অব দ্য ওয়ে টু ফাইট পোভার্টি’ ১৭ ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে। টাইমস অব ইন্ডিয়া।