এবিএনএ : যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্ক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের চুরি যাওয়া ৮শ কোটি টাকা উদ্ধারে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে সহযোগিতা করতে চায় বিএনপি। এ লক্ষ্যে গবেষণামূলক একটি প্রতিবেদন ও সিডি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছে পৌঁছে দিয়েছে দলটি।
সোমবার দুপুরে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল গভর্নরের সঙ্গে দেখা করে প্রতিবেদনটি হস্তান্তর করে। সোমবার দুপুর ১টায় গভর্নরের কার্যালয় থেকে বের হয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের বিষয়টি জানান প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে থাকা বিএনপির অর্থনৈতিক বিষয়ক আব্দুস সালাম। প্রতিনিধি দলে বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক আব্দুল লতিফ জনিও ছিলেন।
এরআগে গত ২৯ মার্চ ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের ১০১ মিলিয়ন ডলার (৮০০ কোটি টাকা) লুণ্ঠন একটি বিশ্লেষণাত্মক পর্যালোচনা’ শীর্ষক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে চুরির এই ঘটনাটি বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিজিটাল ডাকাতি বলে আখ্যায়িত করেছিল বিএনপি।
সোমবার আব্দুস সালাম বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে লোপাট হওয়া অর্থ জনগণের। জনগণের এই টাকা লোপাটে বিএনপি উদ্বিগ্ন। সেজন্য ঘটনা ঘটার পরপরই বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এ বিষয়ে দলের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দায়িত্ব দিয়েছিলেন এ বিষয়ে গবেষণা করে একটি প্রতিবেদন তৈরি করার জন্য। আমাদের দলের দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের দিয়ে এ বিষয়ে গবেষণামূলক একটি প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা চাই, লোপাটকৃত এই টাকা অনতিবিলম্বে উদ্ধার হওয়ার পাশাপাশি জড়িতরা গ্রেফতার হোক। এ লক্ষ্যে আমরা বাংলাদেশ ব্যাংককে সহযোগিতা করতে চাই। সেজন্য এ সংক্রান্ত আমাদের গবেষণামূলক প্রতিবেদন ও সিডি রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের কাছে হস্তান্তর করেছি। আশা করছি, এটি তারা পর্যবেক্ষণ করলে দোষীরা ধরা পড়বে।’
বাংলাদেশের রিভার্ভের বিপুল পরিমাণ টাকা চুরি যাওয়ার ঘটনাটি প্রকাশ না করায় সমালোচনার মুখে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের পদে থেকে সরে দাঁড়ান ড. আতিউর রহমান। এরপর নতুন গভর্নরের দায়িত্ব পান সাবেক অর্থ সচিব ফজলে কবির।
বিএনপির অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক বলেন, ‘আমরা গভর্নরকে বলেছি, একটি বিশেষ অবস্থায় আপনি এখানে (বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর) দায়িত্বে এসেছেন। আপনার প্রধান কাজ হবে, এটা (টাকা উদ্ধার ও জড়িতদের চিহ্নিত করা) বের করে আনা। এ লক্ষ্যে আমরা আপনাদের সহযোগিতা করতে চাই। সেজন্য দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আমাদের আপনার কাছে পাঠিয়েছেন।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সালাম বলেন, ‘গভর্নর সাহেব খুব খুশি হয়েছেন। তিনি বলেছেন, এক্ষেত্রে আপনাদের (বিএনপি) সহযোগিতা অবশ্যই কাম্য। আপনারা যে সহযোগিতা করলেন তার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ।’
গবেষণা প্রতিবেদনের সঙ্গে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের একটি চিঠিও গর্ভনরের কাছে দেয়া হয়েছে বলে জানান আব্দুস সালাম।
উল্লেখ্য, ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে সঞ্চিত বাংলাদেশে ব্যাংকের রিজার্ভের টাকা থেকে ৮শ কোটি টাকা হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে সরিয়ে নেয়া হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক বিষয়টি ধামা চাপা দিয়ে রাখার চেষ্টা করলেও ফিলিপাইনের একটি সংবাদ মাধ্যমে তা ফাঁস করে দেয়। মূলত ফিলিপাইনের কয়েকটি ক্যাসিনোর মাধ্যমে এ টাকা পাচার করা হয়েছে।