,
প্রচ্ছদ | জাতীয় | আন্তর্জাতিক | অর্থনীতি | আমেরিকা | লাইফ স্টাইল | ভিডিও নিউজ | ফিচার | আমেরিকা | বিনোদন | রাজনীতি | খেলাধুলা | বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি | শিক্ষা

নিরাপত্তা পরিষদে মিয়ানমার পরিস্থিতি নিয়ে বিশেষ সভা

এবিএনএ: জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে মিয়ানমার পরিস্থিতির ওপর এক বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে মিয়ানমার বিষয়ক জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ দূত মিজ্ ক্রিস্টিন শ্রেনার বার্গেনার তাঁর সাম্প্রতিক বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সফরের বিষয়ে ব্রিফ করেন।নিরাপত্তা পরিষদের ফেব্রুয়ারি মাসের সভাপতি ইকোটরিয়াল গিনি বিশেষ এই আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্যের বাইরে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার এই সভায় বক্তব্য রাখে।জাতিসংঘে চলমান অভিবাসন সপ্তাহে যোগদান উপলক্ষে নিউইয়র্ক সফররত পররাষ্ট্র সচিব মো: শহিদুল হক নিরাপত্তা পরিষদে মিয়ানমার পরিস্থিতি বিষয়ক এই আলোচনায় বাংলাদেশের পক্ষে বক্তব্য রাখেন।

নিরাপত্তা পরিষদ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “আমাদের পূর্ণ আন্তরিক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে প্রত্যাবাসনের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি না হওয়ার কারণে দীর্ঘদিনেও রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন কাজ শুরু করা যায়নি -এর থেকে দূর্ভাগ্যজনক আর কি হতে পারে? প্রতিবেশী দেশের নাগরিক যারা নিজ দেশে বর্বরোচিত নৃশসংতা এবং জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতির স্বীকার এমন নিগৃহীত সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে তাদেরকে মানবিক আশ্রয় দেওয়ার জন্যই কী বাংলাদেশকে এই মূল্য দিতে হচ্ছে?”

পররাষ্ট্র সচিব সন্ত্রাস দমন বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জিরো টলারেন্স নীতির কথা উল্লেখ করে বলেন, “বাংলাদেশের এক ইঞ্চি ভূখন্ডও যাতে কোনভাবে কোন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর কর্মকান্ডে ব্যবহৃত হতে না পারে সে বিষয়ে শেখ হাসিনা সরকার দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কিন্তু দু:খজনক, মিয়ানমার প্রায়ই অভিযোগ করে থাকে যে আমরা তাদের ভূখন্ডে সন্ত্রাসবাদ উস্কে দিচ্ছি। আমরা স্পষ্টভাবে জানাতে চাই, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে কোন ধরনের সন্ত্রাসবাদ সৃষ্টির চেষ্টা বা সন্ত্রাসীদের প্রশ্রয় দানে বাংলাদেশের কোন স্বার্থ, ইচ্ছা, আগ্রহ, উদ্দেশ্য নেই। বরং সর্বদাই আমরা সন্ত্রাস দমন বিষয়ে মিয়ানমারকে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদান করেছি।”

পররাষ্ট্র সচিব দৃঢ়তার সাথে বলেন, “রোহিঙ্গা সঙ্কটের শিকড় মিয়ানমারেই প্রোথিত, এবং এর সমাধান মিয়ানমারের কাছেই রয়েছে।” বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের মানবিক আশ্রয় দেওয়ার ফলে বাংলাদেশে আর্থ-সামাজিক ও পরিবেশগত নানা সঙ্কটের কথাও পররাষ্ট্র সচিব এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করেন। পররাষ্ট্র সচিব আরও বলেন, “আমরা রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, স্বেচ্ছা-প্রণোদিত, টেকসই ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন ব্যতীত আর কিছুই চাই না। রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে আমরা নিরাপত্তা পরিষদের অব্যাহত অভিভাবকত্ব প্রত্যাশা করি”।

পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক নিরাপত্তা পরিষদের বিবেচনার জন্য তিনটি প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। এগুলো হলো-
১. কফি আনান অ্যাডভাইজরি কমিশনের সুপারিশসমূহের পূর্ণ বাস্তবায়ন এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের তদন্তের অগ্রগতি বিধানের সহায়ক হিসেবে নিরাপত্তা পরিষদে রেজুলেশনটি আবারও আলোচনার টেবিলে আনা যাতে প্রত্যাবাসনের জন্য একটি আন্তর্জাতিক তত্ত্বাবধান নিশ্চিত করা যায়।
২. নিরাপত্তা পরিষদের পুনরায় কক্সবাজার ও রাখাইন স্টেটের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন।
৩. মিয়ানমারের অভ্যন্তরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রস্তাবিত অসামরিক ‘সেফ জোন’ সৃষ্টি করা।

রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছা-প্রণোদিত প্রত্যাবাসন ত্বরান্বিত করার লক্ষে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষকে আরও কয়েকটি পদক্ষেপ গ্রহণের প্রস্তাব করেন পররাষ্ট্র সচিব। এগুলো হলো-

১. রোহিঙ্গাদের ওপর সৃষ্ট সহিংসতা ও জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতির ঘটনার দায়বদ্ধতা নিরূপন। এক্ষেত্রে বিদ্যমান জাতিসংঘ ব্যবস্থাপনার আওতায় যে সকল প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা কাজ করছে তাদেরকে বাধাহীন প্রবেশাধিকার ও সহযোগিতা প্রদান করতে হবে যাতে তারা দশকের পর দশক ধরে চলা এই অপরাধের দায়বদ্ধতা নিরূপন এবং অপরাধ করে পার পেয়ে যাওয়ার সংস্কৃতি বিচারের মাধ্যমে বন্ধ করতে পারে।
২. ইউএনএইচসিআর ও ইউএনডিপি’র সাথে মিয়ানমারের যে ত্রি-পক্ষীয় সমঝোতা স্বারক স্বাক্ষরিত হয়েছে তার পূর্ণ বাস্তবায়ন করতে হবে।
৩. মিয়ানমারের অভ্যন্তরে অবস্থিত আইডিপি (ওউচ) ক্যাম্পগুলো তুলে নিতে হবে যাতে বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের মধ্যে প্রত্যাবাসনের আস্থা তৈরি হয়। এছাড়া বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সীমান্তের জিরো লাইনে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে হবে।

মিয়ানমার বিষয়ক জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ দূত মিজ্ ক্রিস্টিন শ্রেনার বার্গেনার তাঁর সফরে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার সার-সংক্ষেপ তুলে ধরেন। তিনি দাবী করেন সঙ্কট সমাধানে দৃশ্যমান পদক্ষেপ অত্যন্ত ধীর গতির হলেও, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পূর্ণ সহযোগিতায় এ সঙ্কটের সমাধান সম্ভব হতে পারে।
নিরাপত্তা পরিষদের অধিকাংশ সদস্যই রোহিঙ্গা সঙ্কটের সমাধানে আন্তর্জাতিক নীতি অনুযায়ী স্বেচ্ছায়, নিরাপদে, নিরাপত্তার সাথে টেকসই প্রত্যাবাসন বাস্তবায়ন করার উপর জোর দেন। তাঁরা মিয়ানমার সরকারের প্রতি প্রত্যাবাসনের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি, চলাচলের স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা প্রদান, জাতিসংঘসহ সকল আন্তর্জাতিক সংস্থার বাধাহীন প্রবেশ ও কর্মসহায়তা প্রদান, সহিংসতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়বদ্ধতা নিরুপণ, সাধারণ পরিষদ গৃহীত রেজ্যুলেশনের বাস্তবায়ন এবং নিরাপত্তা পরিষদের প্রেসিডেন্সিয়াল স্টেটমেন্ট বাস্তবায়নসহ মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশসহ অন্যান্য সকল পক্ষের মধ্যে সম্পাদিত সমঝোতা স্মারক এর পূর্ণ বাস্তবায়নের আহ্বান জানান।

Share this content:

Chairman & Editor-in-Chief : Shaikh Saokat Ali
Managing Editor : Khondoker Niaz Ikbal
Executive Editor : Mehedi Hasan
E-mail : abnanewsali@gmail.com
Usa Office: 2817 Fairmount, Avenue Atlantic city-08401,NJ, USA. Bangladesh Office : 15/9 Guptopara,Shemulbag, 2 nd floor,GS Tola, Teguriha, South Keraniganj, Dhaka. Usa. Phone: +16094649559, Cell:+8801978-102344, +8801715-864295
Server mannarged BY PopularServer
Design & Developed BY PopularITLimited