এবিএনএ: ‘জ্বলাইলে না জ্বলে আগুন। নেভানো ভীষণ দায়। আগুন জ্বালাইসনা আমার গায়…’ চিরন্তন এ গানের সুরে সুরে আবার এলো ফাগুন।ফাগুনের আগুন রাঙা সাজে নিজেকে সাজিয়ে তুলতে নানা দিকে থাকে তাই আয়োজন। বেশ কয়েকবছর ধরেই অন্যান্য উৎসবের মতোই ফাগুনেও রং মিলিয়ে নতুন পোশাক কেনার প্রচলন শুরু হয়েছে। হলুদ, বাসন্তী রঙের পোশাক আর ফাগুনের নানা ফুলের সাজে এদিন প্রত্যেক নারীই হয়ে ওঠেন অনন্যা। শুধু সুন্দর পোশাক পরলেই তো হবে না, সেই সঙ্গে সাজটাও হতে হবে মানানসই। কেমন মেকআপ এই সময়ে উপযুক্ত, কোন রঙের লিপস্টিক বেশি মানানসই হবে, জুতা কি হিল পরবেন নাকি ফ্লাট- থাকে নানা চিন্তা। ফাগুনের প্রথম দিনটি স্বাভাবিকভাবেই বেশ রৌদ্রোজ্জ্বল হবে। তাই সাজ পোশাক খুব বেশি জমকালো হওয়া চলবে না।
শাড়ি, সালোয়ার কামিজ, ফতুয়া, ফ্রক যে যাই পরুক না কেন তাতে থাকা চাই হলুদ, বাসন্তী কিংবা লাল রঙের ছোঁয়া। তবে এর সঙ্গে ব্যবহৃত হচ্ছে আরও নানা রং। কন্ট্রাস্ট রং হিসেবে বেগুনি, সবুজ, গাঢ় নীল রংগুলোও মানিয়ে যাচ্ছে বেশ। শুধু নারী নয়, পুরুষের শার্ট, পাঞ্জাবি বা ফতুয়ার ক্ষেত্রেই একই ব্যাপার কাজ করে।
আজকাল সব বয়সীই পোশাক-সাজ নিয়ে বেশ সচেতন থাকে। তাদের এ সচেতনতাকে কেন্দ্র করেই দিন দিন গড়ে উঠছে বিভিন্ন ফ্যাশন হাউসগুলো। ভিন্ন ভিন্ন রুচির কথা মাথায় রেখেই তৈরি হচ্ছে নানা রঙের, নানা ডিজাইনের পোশাক। আরও আছে কাঠ, মাটি, মেটাল, পাথর, বাঁশ ইত্যাদি দিয়ে তৈরি চুড়ি, কানের দুল, গলার মালা ইত্যাদি।
বসন্তে ভারি মেকআপ না দিয়ে বরং নিজের স্বাভাবিক রূপকেই রঙিন করে ফুটিয়ে তুলুন। চোখে গাঢ় করে কাজলের রেখা টেনে ঠোঁটে দিন লাল লিপস্টিক। কপালে টিপ দিতে ভুললে চলবে না। আর হাতে পরুন কাচের চুড়ি। তবে মেকআপ ঠিক কতটুকু বা কীভাবে করবেন তা ব্যক্তিগত পছন্দ।
কিন্তু দিনের সাজে কখনও ভারী মেকআপ মানায় না। তাই ফাউন্ডেশন বা বেইজ মেকআপ স্বাভাবিক রাখাই ভালো। রাতের সাজে কিছুটা ভারী মেকআপ মানিয়ে যায়। আর সে ক্ষেত্রে রাতের সাজে চাইলে চোখে সিমারি আইশ্যাডোও বেছে নেয়া যেতে পারে।
ফাগুন দিনের সাজটা অনেকটাই চুলের সাজের ওপর নির্ভরশীল। কারণ চুলের সাজে নানা রঙের তাজা ফুলের ব্যবহারই আপনাকে এদিন আরও বেশি রঙিন করে তুলবে। তাই খোঁপা বা বেণি করে চুলে গাঁদা ফুলের মালা পেঁচিয়ে নিন। চুল ছেড়ে রাখতে চাইলে একপাশে গুঁজে নিতে পারেন গোলাপ বা জারবেরা ফুল। রং মিলিয়ে শাড়ি কিংবা সালোয়ার-কামিজ সবকিছুর সঙ্গেই পরতে পারেন ফুল।
পোশাকের রঙের সঙ্গে হুবহু না মিলিয়ে সব রঙের পোশাকের জন্য সাদা ফুল বেছে নিতে পারেন। অথবা লালরাঙা ঠোঁট আর লাল টিপের সঙ্গে মিলিয়ে পরতে পারেন লাল ফুল। দিনের বেলায় ফুল কম পরুন।
বড় হলে একটা ফুলই থাক। ছোট ফুল হলে দুটি বা তিনটি নিন। রাতের সাজে গ্লিটারসহ ফুল বেছে নিন জমকালো কোনো পোশাকের সঙ্গে। যখন বড় ফুল পরবেন, তখন গলা ও কানের গহনাটা একটু হালকা বেছে নিন। গাঁদা, গোলাপের পাশাপাশি মেরুন, হলুদ, সাদা, নীল রঙের চন্দ্রমল্লিকা, ক্যালানডুলা ফুলগুলোও আপনাকে রঙিন করে তুলতে সাহায্য করবে।
ফাগুনের প্রথম দিনে সারা দিনের জন্য বের হলে হাইহিল এড়িয়ে আরামদায়ক স্যান্ডেল পরুন। অল্প উঁচু বা ফ্লাট স্যান্ডেল পরলেই হাঁটতে সুবিধা হবে। বেরোনোর আগে প্রয়োজনীয় কিছু জিনিস সঙ্গে নিন।
পানির বোতল, ছাতা, টিস্যু পেপার সঙ্গে রাখা চাই। পাশাপাশি লিপস্টিক, কম্প্যাক্ট পাউডার আর চিরুনিও গুছিয়ে নিন যেন প্রয়োজনে ব্যবহার করা যায়। সঙ্গে রাখা চাই ছোট একটি আয়নাও। ঘর থেকে বের হওয়ার আগে ছিটিয়ে নিন সুগন্ধি। এরপর সারা দিন প্রিয়জনদের সঙ্গে ঘুরে বেড়ান ফাগুনের সাজে। আনন্দ আর ভালোবাসায় রাঙিয়ে তুলুন ফাগুনের প্রথম দিনটি।