এবিএনএ : সারা দিনের সতেজতার জন্য দিনের শুরুর খাবারটি গুরুত্বপূর্ণ। সকালের খাদ্যতালিকায় কেউ খান ব্রাউন ব্রেড, কেউ হোয়াইট ব্রেড। আসলে কোনটি খাবেন?
পুষ্টিবিদ আখতারুন নাহার বলেন, হোয়াইট ব্রেডে আঁশের পরিমাণ কম, এর গ্লাইসেমিক সূচকও বেশি। হোয়াইট ব্রেড তৈরিতে সাধারণত ময়দার সঙ্গে চিনি বা চর্বি যেমন ডালডাও ব্যবহৃত হয়। গ্লাইসেমিক সূচকের দিক দিয়ে হোয়াইট ব্রেড আর সহজ শর্করার মধ্যে তেমন পার্থক্য নেই। ডায়াবেটিস ও ওজনাধিক্য রোগীদের জন্য নিয়মিত না খাওয়া ভালো। রুটি যদি খেতে হয়, তাহলে ব্রাউন ব্রেড খাওয়া উচিত।
হোয়াইট ব্রেডের চেয়ে ব্রাউন ব্রেড বেশি পুষ্টিকর। ব্রাউন ব্রেড শরীর গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। হোয়াইট ব্রেডের তুলনায় ব্রাউন ব্রেডে অনেক কম ক্যালরি থাকে। তাই ব্রাউন ব্রেড খেলে ওজন বাড়ার আশঙ্কা থাকে না।
ব্রাউন ব্রেড খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। ব্রাউন ব্রেড হজম করতে যেমন কষ্ট হয় না, তেমনি এতে প্রচুর মাত্রায় ফাইবার থাকার করণে এটি খেলে নানা ধরনের পেটের রোগ হওয়ার আশঙ্কাও কমে।
হোল গ্রেন দিয়ে তৈরি হওয়ার করণে শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে ভূমিকা রাখে ব্রাউন ব্রেড। প্রতিদিন ব্রাউন ব্রেড খেলে প্রায় ৪০ শতাংশ ওজন হ্রাস পায়। ব্রাউন ব্রেড রক্তচাপ কমায়। দাঁতের স্বাস্থ্য ভালো রাখতেও নানাভাবে সাহায্য করে।তবে হোয়াইট ব্রেড পাকস্থলীর জন্য উপকারী। হোয়াইট ব্রেড পাকস্থলীতে উপকারী ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে সাহায্য করে। পাকস্থলীতে থাকা উপকারী ব্যাকটেরিয়া বা মাইক্রোবাইয়োম সুস্বাস্থ্যের জন্য খুবই জরুরি। এগুলো রোগ প্রতিরোধব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে। মাইক্রোবাইয়োমের ঘাটতি মানুষকে ভাইরাস, ইনফেকশন ও অ্যালার্জির শিকারে পরিণত করতে পারে। আর হোয়াইট ব্রেড শরীরে এই উপকারী ব্যাকটেরিয়া ল্যাকটোব্যাসিলাসের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
ব্রাউন ব্রেডে ভিটামিন ও মিনারেলের মাত্রা সঠিক পরিমাণে থাকে। এটি স্বাস্থ্যসম্মত ও খুব পুষ্টিকর। খেতে সুস্বাদু হলেও রিফাইন বা পরিশোধিত হোয়াইট ব্রেডের পুষ্টিগুণ কম। পরিশোধনের ফলে দেহের জন্য উপকারী কিছু ভিটামিন ও মিনারেল নষ্ট হয়ে যায়। আঁশের পরিমাণ কম, এর গ্লাইসেমিক সূচকও বেশি। ব্রাউন ব্রেড অদ্রবণীয় খাদ্য আঁশ রক্তের কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। লিগনান নামক এক ধরনের উপাদান থাকায় ক্যানসার প্রতিরোধ করে। অদ্রবণীয় খাদ্য আঁশ ডায়াবেটিস রোগের জন্য উপকারী। কারণ, এটি রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। হৃদ্যন্ত্রের জন্যও উপকারী। প্রচুর ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট থাকায় রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। ব্রাউন ব্রেড ওজন কমাতে সহায়তা করে। কোষ্ঠকাঠিন্যও দূর করে। বাদামি যেকোনো খাবারই অন্যান্য সাদা খাবারের তুলনায় অনেক বেশি উপকারী।
অনেকের শরীরে হোয়াইট ব্রেড বেশি তাড়াতাড়ি পরিপাক হয়, কারও শরীরে ব্রাউন ব্রেড পরিপাক হয় সহজে। তাই যদি হোয়াইট ব্রেড খেয়ে কোনো সমস্যা না হয়, আপনি স্বাস্থ্যের চিন্তা না করেই তা খেতে পারেন।
বেশি বয়সী ও শিশুদের হোয়াইট ব্রেড আর মধ্যবয়সীদের ব্রাউন ব্রেড খাওয়া উচিত।