এবিএনএ: কানপুরে বাংলাদেশ-ভারত দ্বিতীয় টেস্টের আড়াই দিন নষ্ট হয়েছে বৃষ্টি ও মাঠের সমস্যার কারণে। ড্র করতে হলে বাংলাদেশের মাটি আকড়ে পড়ে থাকার কোনো বিকল্প নেই। তবে গৌরবময় অনিশ্চয়তার খেলায় কত কী যে হতে পারে, সেটাই দেখা যাচ্ছে আজ পঞ্চম দিনে। সিরিজের শেষ টেস্ট জিততে ভারতকে করতে হবে ৯৫ রান।
উইকেট বিলিয়ে দেওয়ার রোগ থেকে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা যেন কিছুতেই বেরিয়ে আসতে পারছেন না। বিপদের মুহূর্তে দায়িত্ব নিয়ে না খেলে সাকিব আল হাসান-লিটন দাসরা ‘আত্মহত্যা’ করছেন বারবার। যেখানে সাকিব কানপুরে দ্বিতীয় ইনিংসে আউট হয়েছেন শূন্য রানে। পঞ্চম দিনের সকালে আজ নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকা বাংলাদেশ অলআউট হয়েছে ১৪৬ রানে। যেখানে মধ্যাহ্নভোজের বিরতির আগের বলে আত্মঘাতী শটে মুশফিকুর রহিম নিজেদের ইনিংসেরই ইতি টেনেছেন।
দ্বিতীয় ইনিংসে ১১ ওভারে ২৬ রানে ২ উইকেট নিয়ে আজ শেষ দিনে খেলতে নামে বাংলাদেশ। দিনের খেলা শুরুর প্রথম বলেই রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে সুইপ করতে গিয়ে ঠিকমতো সংযোগ করতে পারেননি মুমিনুল। একই ওভারের শেষ বলে সাদমান ইসলাম সুইপ শটে ডিপ স্কয়ার লেগ দিয়ে বাউন্ডারি আদায় করেন। সতীর্থকে দেখে যেন বেশিই অনুপ্রাণিত হয়েছেন মুমিনুল। তিনি হয়তো ভেবেছিলেন, প্রথম ইনিংসে সুইপে সফল হলে এবার কেন নয়। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসের তার জন্য লেগ স্লিপের ফাঁদ পাতা হয়েছিল। ১৪তম ওভারের তৃতীয় বলে অশ্বিনকে সুইপ করতে যান মুমিনুল। টপ এজ হওয়া বল লেগস্লিপে দারুণ ভাবে তালুবন্দী করেন লোকেশ রাহুল।
৮ বলে ২ রান করে মুমিনুল বিদায় নিলে বাংলাদেশের স্কোর হয়ে যায় ১৩.৩ ওভারে ৩ উইকেটে ৩৬ রান। পাঁচে নামেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। ওপেনার সাদমান ইসলামের সঙ্গে তার (শান্ত) জুটিটা দারুণ জমে যায়। সবকিছু যখন স্বাভাবিকভাবে চলতে থাকে, তখন শান্ত খেললেন পাগলাটে রিভার্স সুইপ। ২৮তম ওভারের দ্বিতীয় বলে বাংলাদেশ অধিনায়ককে বোল্ড করেছেন রবীন্দ্র জাদেজা। যেটা ছিল দ্বিতীয় ইনিংসে জাদেজার প্রথম ওভার। চতুর্থ উইকেটে শান্ত-সাদমান করেন ৮৪ বলে ৫৫ রানের জুটি। বাংলাদেশ অধিনায়কের ব্যাট থেকে আসে ৩৭ বলে ১৯ রান। দুটি চারও মেরেছেন।
শান্তর বিদায়ের পরই ধস নামা শুরু বাংলাদেশের ইনিংসে। ৪ উইকেটে ৯১ রান থেকে সফরকারীদের স্কোর মুহূর্তেই হয়ে যায় ৭ উইকেটে ৯৪ রান। থিতু হয়ে যাওয়া সাদমান ফিফটির পরপরই নিজের উইকেট বিলিয়ে এসেছেন। আকাশ দীপের গুড লেংথে পরা বল কাট করতে গিয়ে সাদমান গালিতে ধরা পড়েন যশস্বী জয়সওয়ালের হাতে। ভারতের মাঠে টেস্টে বাংলাদেশের প্রথম ওপেনার হিসেবে ফিফটি করা সাদমান করেছেন ১০১ বলে ৫০ রান। মেরেছেন ১০ চার।
আকাশ দীপের পর জাদেজা নিজের ঘূর্ণিজালে ফাঁসালেন বাংলাদেশের ব্যাটারদের। নিজের পরপর দুই ওভারে জাদেজা ফেরালেন লিটন (১) ও সাকিবকে (০)। যেখানে সাকিব ৩২তম ওভারের দ্বিতীয় বলে জাদেজার হাতে ক্যাচ তুলে দিয়েছেন। ২ বল খেলে ০ রানে বিদায় নেওয়া সাকিবের খুব সম্ভবত শেষ টেস্ট ইনিংস। ৯৪ রানে ৭ উইকেট পড়ার পর ব্যাটিংয়ে নামেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ৯ নম্বরে নামা এই ব্যাটারের সঙ্গে মুশফিকের জুটিটা যখন জমে যায়, তখন বাদ সাধেন বুমরা।