,
প্রচ্ছদ | জাতীয় | আন্তর্জাতিক | অর্থনীতি | আমেরিকা | লাইফ স্টাইল | ভিডিও নিউজ | ফিচার | আমেরিকা | বিনোদন | রাজনীতি | খেলাধুলা | বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি | শিক্ষা

বঙ্গবন্ধুর মহাপ্রয়াণ দিবস

এ বি এন এ : খুব সম্ভবত ২০০৮ সালের ১৩ আগস্ট জাতীয় প্রেসক্লাবে পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদ বঙ্গবন্ধুর মহাপ্রয়াণ দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভার আয়োজন করেছিল। এখানে কমিউনিস্ট পার্টির বর্তমান সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গানের একটি চরণ উদ্ধৃত করেন- তোমার পূজার ছলে তোমায় ভুলে থাকি।’

বঙ্গবন্ধুর অতিপরিচিত অনুসারীরা  অনেক সময় বঙ্গবন্ধুকে অতিমূল্যায়ন করতে যেয়ে  প্রকৃত বঙ্গবন্ধুকে ভুলে যায়। এখানে কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম এমন করে বলেছেন। তিনি এই সভায় বঙ্গবন্ধুর একটি দীর্ঘ বক্তব্য এর অংশবিশেষ পাঠ করে শোনান। যেখানে বঙ্গবন্ধু গরীব দুঃখী মেহেনতি মানুষের কথা বলেছেন, তাদের জন্য সবাইকে কাজ করতে বলেছেন। বঙ্গবন্ধু সেই বক্তৃতায় বলেছেন, পাকিস্তানীরা কিছু দালাল সাথে করে নিয়ে গিয়েছে, কিন্তু এদেশে রেখে গেছে কিছু চোর। বস্তুতপক্ষে এই দালাল আর চোররা মিলেই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে। এই  মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম আবার ডাকসু ভিপি থাকা অবস্থায় বঙ্গবন্ধুর ডাকসুর আজীবন সদস্য পদ ছিঁড়ে ফেলেছিলেন। আজ তিনি বলছেন আমরা বঙ্গবন্ধুকে মূল্যায়ন করতে পারিনি। নিশ্চয় তিনি আজ উপলব্ধি করছেন যে প্রতিমা তিনি ভেঙে ফেলেছিলেন তাতে হয়তো মহাপাপ হয়েছে। এবং সেই পাপের প্রায়শ্চিত্ত করছে সমগ্র জাতি।

দেশে দেশে নেতা অনেকেই জন্মান। কেউ ইতিহাসের একটি পঙক্তি, কেউ একটি পাতা, কেউ বা একটি অধ্যায়। কিন্তু কেউ আবার সমগ্র ইতিহাস। শেখ মুজিব এই সমগ্র ইতিহাস। একমাত্রই অর্বাচীনরাই  শেখ মুজিবকে অস্বীকার করতে পারে। গোটা বিশ্ব জানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব  সারা বাংলার ইতিহাস। বাংলার ইতিহাসের পলিমাটিতে তাঁর জন্ম। ধ্বংস, বিভীষিকা, বিরাট বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে সেই পলিমাটিকে সাড়ে সাত কোটি মানুষের চেতনায় শক্ত ও জমাট করে একটি ভুখণ্ডকে শধু তাদের মানসে নয়, অস্তিত্বের বাস্তবতায় সত্য করে তোলা এক মহা ঐতিহাসিক দায়িত্ব। মুজিব মৃত্যু ভয় উপেক্ষা করে মৃত্যুঞ্জয় নেতার  মতো এই ঐতিহাসিক দায়িত্ব ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন। ইতিহাসের সন্তান ইতিহাসকে পুননির্মাণ করেছেন। এইখানেই তাঁর নেতৃত্বের ঐতিহাসিকতা।

সেই শেখ মুজিবকে সেনাবাহিনীর কিছু বিপদগামী উশৃঙ্খল সদস্য ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করে। সাম্রাজ্যবাদী চক্রান্তে বঙ্গবন্ধু নিহত হলেও আমেরিকার সুশীল সমাজ এটা কোনভাবেই মেনে নিতে পারেনি। ১৯৮২ সালের আমেরিকার বিখ্যাত সাপ্তাহিক টাইম ৫ এপ্রিল সংখ্যায় বলা হয়েছিল, স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম দশ বছরের মধ্যে শেখ মুজিবুর রহমানের আমল ছিল সর্বপ্রথম এবং দীর্ঘ গণতান্ত্রিক আমল। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা সংগ্রামের নায়ক ও প্রথম নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবকে হত্যার পর হঠাৎ গণতান্ত্রিক আমলের অবসান ঘটে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময়ও এমনটি ঘটেছিল। আমেরিকার তখনকার সরকার বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে ছিল। কিন্তু আমেরিকার সিভিল সমাজ বাংলাদেশের জনগণের মুক্তিসংগ্রামের পক্ষে ছিল। প্রয়াত নির্ভীক সাংবাদিক সন্তোষ  গুপ্তের ডায়েরি, স্মৃতিকথা ও সাক্ষাৎকার ভিত্তিক একটি বই প্রকাশিত হয়েছে তাঁর ডায়েরিতে লিখেছিলেন,  একজন ব্যক্তিকে নিজেদের দুর্বলতা নিয়ে অতিমানব করার চেষ্টায় নিয়োজিত ছিল আমাদের আমাদের সকল প্রশংসাবাক্য। শব্দের কঙ্কাল দিয়ে আমরা শ্রেণি সংগ্রামকে বুঝতে চেয়েছি। অন্ধ বিশ্বাস আর ভক্তিবাদ থেকে যাত্রা করলে এমনই চরম মূল্য দিতে হয়।

লন্ডনের বিখ্যাত দি গার্ডিয়ান পত্রিকার ২৮ আগস্ট, ১৯৭৫ এর সংখ্যাটিতে মন্তব্য করা হয়েছিল, বাংলাদেশের জনসাধারণ আইয়ুবের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ধর্মীয় প্রচারণা ও সামরিক শাসনের যুগে ফিরে গিয়েছে। স্বাধীনতার সংগ্রামে বঙ্গবন্ধুর বিরোধিতা করে যারা পরাজিত হয়েছিল, তারাই স্বাধীনতার পর কড়ায়-গন্ডায় সেই পরাজয়ের প্রতিশোধ গ্রহণ করেছে। যাঁরা মৌলবাদী তারা শতকরা একশো ভাগ মৌলবাদী। কিন্তু যারা প্রগতিশীল বলে দাবি করে থাকেন তাঁদের কেউ কেউ দশভাগ প্রগতিশীল, পঞ্চাশ ভাগ সুবিধাবাদী, পনেরো ভাগ কাপুরুষ, পাঁচ ভাগ একেবারে জড়বুদ্ধিসম্পন্ন।  মনে রাখা দরকার বাঙালি জাতির  সবচেয়ে বড় শত্রু সাম্প্রদায়িক  শক্তি। এই অপশক্তি বাঙালি জাতিকে উল্টোরথের যাত্রী বানিয়েছে।

স্বাধীনতার মর্মসত্য অবগাহন করতে হলে বঙ্গবন্ধুর চেতনার সমুদ্রে ঝাঁপ দিতে হবে। বাঙালির জাতিসত্ত্বা এই মহানামের মধ্যে প্রোথিত হয়ে আছে। আজ  ১৫ আগস্ট সরকারিভাবে পালিত হচ্ছে। মহামান্য হাইকোর্ট এর রায় সরকার যথাযথভাবে পালন করাতে মানুষ খুশি হয়েছে। মানুষ এটাও আশা করে সরকার শুধু নিজেদের সেলস্ প্রমোশনে  জাতীয় শোকদিবস বিষয়টি ব্যবহার করবে না। অতীতে  হঠাৎ করে বোধোদয় অনেকেরই হয়েছে। আবার কেউ কেউ বঙ্গবন্ধু সম্বন্ধে কিছু যথার্থ সম্বোধন দিয়ে নিজের গায়ে অন্য রকম একটা তকমা লাগাতে চেয়েছেন।

ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ এরকম একজন। তিনি লিখেছিলেন, শেখ মুজিবুর রহমানের আর্বিভাব বাংলাদেশের জাতীয় ইতিহাসের সবচাইতে বড় ঘটনা। তাঁর মৃত্যুর মধ্য দিয়েই তাঁর সমাধি রচিত হয়নি। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে তিনি রুপকথার নায়কের মতোই ভাস্বর হয়ে থাকবেন। শেখ মুজিব ছিলেন সেই ব্যক্তি, জীবনব্যাপী যিনি এই জাতির স্বার্থে তাঁর স্বপ্ন বাস্তবায়নের চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছিলেন, বিরাজ করেছিলেন এই জাতির আশা আকাঙ্খার মূর্ত প্রতীক হিসেবে। আবার  এই ব্যারিস্টার সাহেবই বঙ্গবন্ধুর খুনিদের এখনও বাঁচিয়ে রেখেছেন।

একদিকে জাতীয় শোক দিবস পালন,  আবার অন্যদিকে খুনিদের প্রোটেকশন এটা যেন কোনভাবেই না হয়। এটাই জাতির প্রত্যাশা।

Share this content:

Chairman & Editor-in-Chief : Shaikh Saokat Ali
Managing Editor : Khondoker Niaz Ikbal
Executive Editor : Mehedi Hasan
E-mail : abnanewsali@gmail.com
Usa Office: 2817 Fairmount, Avenue Atlantic city-08401,NJ, USA. Bangladesh Office : 15/9 Guptopara,Shemulbag, 2 nd floor,GS Tola, Teguriha, South Keraniganj, Dhaka. Usa. Phone: +16094649559, Cell:+8801978-102344, +8801715-864295
Server mannarged BY PopularServer
Design & Developed BY PopularITLimited