এবিএনএ : অ্যাপলের জন্য মহাকাশযান-সদৃশ একটি কার্যালয় তৈরির স্বপ্ন দেখেছিলেন স্টিভ জবস। সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। বুধবার এক বিবৃতিতে অ্যাপল কর্তৃপক্ষ বলেছে, অ্যাপল-কর্মীরা যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালিতে অবস্থিত নতুন ‘স্পেসশিপ’ কার্যালয়ে এপ্রিল মাস থেকে যেতে শুরু করবেন।
১২ হাজারের বেশি কর্মীকে এই নতুন কার্যালয়ে নিতে এ বছরের প্রায় শেষ পর্যন্ত সময় লাগবে। নতুন এই ক্যাম্পাসটিকে ‘সৃজনশীলতা ও সহযোগিতা কেন্দ্র’ বলে উল্লেখ করেছে অ্যাপল কর্তৃপক্ষ। অ্যাপলের নতুন কার্যালয়ের একটি থিয়েটারের নামকরণ করা হয়েছে অ্যাপলের সহপ্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জবসের নামানুসারে। ১৯৫৫ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন স্টিভ জবস।
এক বিবৃতিতে অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী টিম কুক বলেছেন, ‘অ্যাপলের জন্য স্টিভের দূরদৃষ্টি তাঁর সময়কে অতিক্রম করেও আমাদের সঙ্গে রয়েছে।’ টিম কুক বলেন, স্টিভ জবস চেয়েছিলেন অ্যাপল পার্ক হবে আগামী প্রজন্মের জন্য উদ্ভাবনের কেন্দ্র। ১৭৫ একর আয়তনের এই ক্যাম্পাসটিতে গোলাকার ভবন ও বিশ্বের বৃহত্তম বাঁকানো কাচের কাঠামো তৈরি করা হয়েছে। পুরো ক্যাম্পাসে ব্যবহৃত হবে নবায়নযোগ্য শক্তি। অ্যাপলের ওই ক্যাম্পাসে থাকছে ফিটনেস সেন্টার, ফুটপাত, গবেষণাকেন্দ্র, দর্শনার্থীদের জন্য কেন্দ্র ও বাগান। অ্যাপলের প্রধান নকশাবিদ জনি আইভ বলেন, ‘আমরা যেভাবে আমাদের পণ্য তৈরিতে নকশা ও বৈশিষ্ট্যের বিষয়ে উৎসাহী থাকি, নতুন ক্যাম্পাস তৈরিতেও একই রকম নকশা, প্রকৌশলের বিষয়টি মাথায় রাখা হয়েছে।’ গত মাসে অ্যাপল কর্তৃপক্ষ আইফোন বিক্রি থেকে প্রচুর মুনাফা করার তথ্য প্রকাশ করে। অবশ্য বাজার বিশ্লেষকেরা আইফোন বিক্রি নিয়ে দুশ্চিন্তার কথা বলেছিলেন।
অ্যাপল কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, গত বছরের শেষ তিন মাসে অ্যাপল ৭ কোটি ৮৩ লাখ ইউনিট আইফোন বিক্রি করে। বাজার গবেষণাপ্রতিষ্ঠান স্ট্র্যাটেজি অ্যানালাইটিকসের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের শেষ তিন মাসের স্মার্টফোন বিক্রিতে বিশ্বের শীর্ষ স্মার্টফোন বিক্রেতার খেতাব স্যামসাংয়ের কাছ থেকে চলে যায় অ্যাপলের কাছে। গত বছরে অ্যাপল ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করে। বর্তমানের সিলিকন ভ্যালির অন্যতম শীর্ষ প্রতিষ্ঠানটি স্টিভ জবসের গ্যারেজ থেকে যাত্রা শুরু করে আধুনিক যুগের অন্যতম স্মার্টফোন নির্মাতা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
প্রযুক্তিপ্রেমী ও বিপণন মেধাবী হিসেবে পরিচিত স্টিভ জবস ও অ্যাপল কম্পিউটারের উদ্ভাবক স্টিভ ওজনিয়াক মিলে যে কোম্পানি গড়ে তুলেছিলেন তা বৃহত্তম প্রতিষ্ঠান হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। কলেজ থেকে ঝরে পড়া দুজন শিক্ষার্থী যে কোম্পানি গড়ে তুলেছেন, তা মানুষের কম্পিউটার ব্যবহারের ধরন, গান শোনার ধরন ও চলার পথে যোগাযোগের ধরন বদলে দিয়েছে। এ ছাড়া মানুষের হাতে এনে দিয়েছে দরকারি সব অ্যাপস। ১৯৭৬ সালের ১ এপ্রিল কুপারটিনোর একটি গ্যারেজে যাত্রা শুরুর পর স্টিভ জবসের হাত ধরে একে একে এসেছে জনপ্রিয় পণ্য ম্যাক, আইপড, আইফোন ও আইপ্যাড। জবসের স্ত্রী লরিন পাওয়েল এক বিবৃতিতে বলেছেন, ক্যালিফোর্নিয়ার ভূপ্রকৃতি, আলো ও বিশালতা থেকে স্টিভ জবস উদ্যম ও অনুপ্রেরণা পেয়েছিলেন। তাঁর চিন্তার প্রিয় জায়গা ছিল এটি। অ্যাপল পার্কে তাঁর সেই উদ্যমকে তুলে ধরা হয়েছে।