এবিএনএ : প্রচণ্ড দাবদাহ, গ্রীষ্মের গরমে বড়দের মতো শিশুরাও অস্থির হয়ে পড়ে। শিশুরা সাধারণত ছোটাছুটি, দৌড়াদৌড়ি করে এতে শরীর থেকে প্রচুর ঘাম নির্গত হয়। ফলে শিশুরা যেমন অস্থির হয়ে পড়ে এর থেকে Dehydration পর্যন্ত হতে পারে। তাই শিশুকে প্রচুর পানি ও পানীয় পান করাতে হবে। ORS বা স্যালাইন দেয়া যেতে পারে। ঘরে তৈরি শরবত যেমন- বেল, তরমুজ, আনারস ইত্যাদিও দেয়া যেতে পারে। অনেক সময় প্রচণ্ড গরমে বমি ও পাতলা পায়খানা হতে পারে। প্রস্রাব হচ্ছে কিনা খেয়াল রাখতে হবে।
শিশুদের পোশাক : নরম পরিষ্কার সুতির পাতলা কাপড় ও আরামদায়ক পোশাক পরানো উচিত।
শিশুদের গোসল : গরমে প্রতিদিন গোসল অবশ্যই প্রয়োজন। প্রয়োজনে একাধিকবার গোসল বা গা মোছানো যেতে পারে। তেল বা লোশন গ্রীষ্মে ব্যবহার করা উচিত নয়। এতে আরও গরম ও অসুস্থ বোধ করে শিশুরা। Pickly heat জাতীয় ভালো পাউডার ব্যবহার করবেন।
প্রচণ্ড গরমে শিশুদের ঘামাচি ও ফোড়া : প্রচণ্ড গরমে শিশুদের ঘামাচি বা গ্রীষ্মের ফোড়া হতে পারে। প্রচণ্ড ঘামে লোমকূপে ময়লা জমে ও তার থেকে infection হয়ে এগুলো হতে পারে। এগুলো চুলকায় ও শিশুরা অস্থির হয়ে পড়ে। এ ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নেয়া প্রয়োজন।
শিশুদের খাবার : বাইরের খোলা পানীয় শরবত, আইসক্রিম ও ফ্রিজের বাসি খাবার না দেয়াই ভালো। এতে ডায়রিয়া, আমাশয়, টাইফয়েড, ফুড পয়জনিং ও জন্ডিস হতে পারে। টাটকা শাকসবজি, তেলে ভাজা, বেশি মসলাজাতীয় খাবার খাওয়ানো উচিত নয়। পানির পরিমাণ যাতে বেশি থাকে, এ দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
শিশুদের বাইরে বেড়ানো : প্রচণ্ড রোদে বাইরে খেলাধুলা ও বেড়ানো উচিত নয়। স্কুলে আসা-যাওয়ার সময় ছাতা ও মাথায় টুপি ব্যবহার করা উচতি। Sunscrean প্রয়োজনে ব্যবহার করা যেতে পারে। এ ছাড়া গরমে শিশুদের হাঁচি, কাশি, নাক দিয়ে পানি পড়া এবং যাদের অ্যালার্জির সমস্যা আছে তাদের সাবধানে রাখতে হবে। কারণ এই সমস্যাগুলো বেড়ে যেতে পারে।
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা : শিশুদের নিয়মিত গোসল, নখ কাটা ও নখ পরিষ্কার, হাত ধোয়া, আরামদায়ক কাপড় পরিধান করানো উচিত।
শিশুদের জ্বর : বাইরের তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে আমাদের শরীরের তাপমাত্রাও বেশি মনে হয়। অনেক মায়েরা জ্বর মনে করে শিশুদের জ্বর কমানোর ওষুধ খাওয়াতে থাকেন। এটা অবশ্যই করা উচিত নয়। জ্বর মনে হলে থার্মোমিটার দিয়ে জ্বর মাপতে হবে এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নিতে হবে।
হিট স্ট্রোক : বড়দের মতো শিশুদের হিট স্টোক হতে পারে, কারণ তারা সহজে শরীর থেকে পানি (Body Fluid) চলে যেতে পারে। Dehydration, Temperature বৃদ্ধি Rapid breathing, বমি, খিঁচুনি ও কমাও হতে পারে। ছোট শিশু, যারা বুকের দুধ খায় তাদের ঘনঘন দুধ খাওয়াতে হবে। শিশুকে অতিরিক্ত কাপড় দিয়ে পেঁচিয়ে রাখা উচিত নয়, প্রস্রাব ঠিকমতো হচ্ছে কিনা খেয়াল রাখতে হবে।
লেখক : শিশু স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতাল, ঢাকা