এবিএনএ: কাশ্মীরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। সামরিক সংঘাতে রূপ নেওয়ার আশঙ্কাও বাড়ছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ সংকট নিরসনের আহ্বান জানালেও, নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারত এখন সংঘাত এড়াতে নয়, বরং পাকিস্তানে সামরিক অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিশ্বের একাধিক দেশের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন এবং দিল্লিতে বিভিন্ন কূটনৈতিক মিশনের কর্মকর্তাদের ব্রিফ করেছেন। তবে এসব প্রচেষ্টা আন্তর্জাতিক সহায়তা চাওয়ার জন্য নয়, বরং পাকিস্তানে সামরিক পদক্ষেপের যৌক্তিকতা তুলে ধরার উদ্দেশ্যে। মোদি প্রকাশ্যে পাকিস্তানের নাম না নিলেও সন্ত্রাসী আস্তানা ধ্বংস এবং কঠোর শাস্তির হুমকি দিয়েছেন।
কাশ্মীর সীমান্তে ফের গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। পাকিস্তানের একজন প্রভাবশালী মন্ত্রী দাবি করেছেন, তাদের ১৩০টি পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র আঘাতের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। ভারতও পাল্টা ব্যবস্থা নিচ্ছে; ইতোমধ্যে ১৬টি পাকিস্তানি ইউটিউব চ্যানেল নিষিদ্ধ করেছে এবং বিবিসিকে সতর্ক করেছে।
নিউইয়র্ক টাইমসের বিশ্লেষণে বলা হয়, ভারত বর্তমানে তার কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক শক্তির কারণে আন্তর্জাতিক চাপের তোয়াক্কা কম করছে। বিশ্বে চলমান অন্যান্য সংকটের কারণে বড় শক্তিগুলো এখন দক্ষিণ এশিয়ার দিকে কম মনোযোগ দিচ্ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও উভয় দেশের মধ্যে বিরোধের কথা স্বীকার করলেও সরাসরি মধ্যস্থতার ইঙ্গিত দেননি।
বিশ্লেষকদের মতে, ভারত এখন ‘বড় ধরনের কিছু’ করার পরিকল্পনায় আছে। পাকিস্তানও পাল্টা আঘাতের হুমকি দিয়ে রেখেছে, যা সংঘাতকে ভয়াবহ মাত্রায় নিয়ে যেতে পারে। উভয় দেশের বিপরীতমুখী সামরিক কৌশলের কারণে পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।
এদিকে, ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে নিরাপত্তা বাহিনী অভিযানে ৫০০ জনকে আটক করেছে এবং সন্দেহভাজন বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বাড়িঘর ধ্বংস করছে। এতে রাজনৈতিক দলগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, কারণ এ ধরনের পদক্ষেপ জনমনে আরও বিচ্ছিন্নতার জন্ম দিতে পারে।
অন্যদিকে, ভারত সরকার গত কয়েকদিনে ২৭২ জন পাকিস্তানি নাগরিককে নিজ দেশে ফেরত পাঠিয়েছে এবং পাকিস্তান থেকেও কয়েকশ’ ভারতীয় নাগরিক ফিরেছেন।
পরিস্থিতি যেভাবে এগোচ্ছে, বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন দক্ষিণ এশিয়ায় একটি নতুন ও বিপজ্জনক সংকটের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে বিশ্ব।