এবিএনএ : সুইডেনের অভিবাসীদের নিয়ে মন্তব্য করে বিপাকে পড়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সম্প্রতি এক সমাবেশে অভিবাসীদের সমস্যা হিসেবে উল্লেখ করে ট্রাম্প দাবি করেন, ‘অভিবাসীদের নিয়ে সুইডেন ব্যাপক সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এর পর সুইডিশদের মনে সৃষ্টি হয়েছে বিভ্রান্তি। এমনকি বিস্মিত সুইডিশ প্রধানমন্ত্রী স্টেফান লোফভেন টুইট করেছেনÑ ‘সুইডেন? সন্ত্রাসী আক্রমণ? তিনি (ট্রাম্প) কি কিছু খেয়েছেন? সবার মনে প্রশ্ন।
দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম কয়েক সপ্তাহে ডোনাল্ড ট্রাম্প জাতীয় নিরাপত্তার কথা বলে যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদারের তোড়জোড় শুরু করেন। এ জন্য তিনি মেক্সিকোর সীমান্তে প্রাচীর নির্মাণেরও উদ্যোগ নেন। এ রকম বেশ কয়েকটি উদ্যোগের জন্য ট্রাম্প ব্যাপকহারে সমালোচিত ও বিতর্কিত হচ্ছেন।
ট্রাম্প শনিবার ফ্লোরিডায় বলেন, আপনারা দেখেছেনÑ গতরাতে সুইডেনে কী ঘটে গেছে। এটি কারো কাছেই বিশ্বাস করার মতো নয়। তারা বিরাটসংখ্যক অভিবাসী নিল। তারা এখনই সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে আর পরবর্তী সময়ে তারা এটি থেকে বের হওয়ার চিন্তাও করতে পারবে না। তবে অভিবাসী গ্রহণ কেন্দ্র করে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি সুইডেনের। তারা মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরকে এ রকম মন্তব্যের জন্য ব্যাখ্যা দেওয়ার আহ্বানও জানিয়েছে।
এ সম্পর্কে রোববার এক টুইট বার্তায় ট্রাম্প উল্লেখ করেন, ‘সুইডেনে কী ঘটছে সে সম্পর্কে আমার বক্তব্যের প্রমাণ হলো ফক্স নিউজের সেই সংবাদ। যেখানে সুইডেনের অভিবাসী সমস্যা গুরুত্বসহকারে উঠে এসেছে।
ফক্স নিউজ নির্বাচনের সময় থেকেই ট্রাম্পের পক্ষ নিয়ে সংবাদ সম্প্রচার করে আসছিল। সুইডেনে অভিবাসীসংক্রান্ত সংঘটিত অপরাধ নিয়ে গত শুক্রবার তারা একটি সংবাদ সম্প্রচার করে। ট্রাম্পের যুক্তির জায়গাটিও ফক্স নিউজের সেই সংবাদ প্রতিবেদন।
ট্রাম্পের ওই মন্তব্যের পর ফক্স নিউজের প্রতিবেদন দেখে যুক্তরাষ্ট্রে সুইডিশ হাইকমিশনার বিরক্তি প্রকাশ করে এক টুইট বার্তায় লেখেনÑ আমরা বিষয়টি দেখার পর সুইডেনের অভিবাসনবিষয়ক এবং অন্যান্য রাজনৈতিক বিষয়াদি মার্কিন প্রশাসনকে জানানোর প্রস্তুতি নিচ্ছি।
সুইডিশ হাইকমিশনার আরও বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ৩০ লাখ ভোট জালিয়াতির যে অভিযোগ করেন ট্রাম্প তা মিথ্যা। তা ছাড়া স্মরণকালের নির্বাচনে সবচেয়ে কম ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন তিনি।
সুইডেনে ২০১৩ থেকে শরণার্থী যাওয়া শুরু হওয়ার পর কোনো সন্ত্রাসী আক্রমণ হয়নি। একজন ব্রিটিশ ইতিহাসবিদ সাইমন শামা টুইটারে ট্রাম্পের কথার প্রতিক্রিয়ায় লিখেছেন- সুইডেনে দুই লাখ শরণার্থী আছে; এখানে কোনো সন্ত্রাসী আক্রমণ হয়নি।
তবে ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে সুইডেন থেকেই সবচেয়ে বেশি লোক ইসলামিক স্টেটের (আইএস) হয়ে যুদ্ধ করতে সিরিয়ায় গেছে বলে জানা যায়। এ রকম ৩০০ জনের মধ্যে ১৪০ জন এরই মধ্যে সুইডেনে ফিরে গেছে।