এবিএনএ: ১৯৫৬ সালে বর্ষসেরা ফুটবলারের খেতাব ব্যালন ডি’অর চালু হওয়ার পর থেকে এবার সপ্তমবারের মত এই পুরস্কার জয় করে রেকর্ড গড়েছেন পিএসজি তারকা লিওনেল মেসি। সোমবার দিবাগত রাতে প্যারিসের আলো ঝলমলে থিয়েটার ডু চ্যাটেলেটের অডিটোরিয়ামে মেসির হাতে তুলে দেয়া হয় এই পুরস্কার। এতে ফুটবল ইতিহাসে সর্বোচ্চ ব্যালন ডি’অর অর্জনের রেকর্ডে নিজেকে ছাড়িয়ে যান মেসি। একই সঙ্গে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর ধরা-ছোঁয়ার বাইরে চলে গেছেন আর্জেন্টাইন এই কিংবদন্তি। ব্যালন ডি’অরের লড়াইয়ে মেসি পেছনে ফেলেছেন বায়ার্ন মিউনিখের পোলিশ স্ট্রাইকার রবার্ট লেভান্ডোভস্কি ও রিয়াল মাদ্রিদের ফরাসি স্ট্রাইকার করিম বেনজেমাকে। এবার এই লড়াইয়ে অনেক পিছিয়ে ছিলেন সময়ের আরেক অন্যতম সেরা তারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো।
গত ৮ অক্টোবর ঘোষণা করা হয় ৩০ জনের সংক্ষিপ্ত তালিকা। যেখানে লিওনেল মেসি ছাড়াও ছিলেন প্রতিদ্বন্দ্বী রবার্ট লেভান্ডোভস্কি, রোনালদো ও নেইমার। ৩০ জনের লম্বা লিস্ট থেকে ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত চলে ভোটাভুটি। ১৮০ জন নির্বাচিত সাংবাদিকের মধ্যে ভোটে সেই তালিকা ছোট করে পাঁচ জনে আনা হয়। এরপর পঞ্চাশজন বিশেষজ্ঞ সাংবাদিক একটি পয়েন্ট সিস্টেম ব্যবহার করে বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়কে ভোট দেন। ব্যালন ডি’অরের জন্য গত মৌমুমে একজন খেলোয়াড়ের মোট গোল, অ্যাসিস্ট, নির্দিষ্ট সেই খেলোয়াড়ের দলের পারফরম্যান্সের বিষয়টি বিবেচনায় আনা হয়। বিশ্বখ্যাত এই পুরস্কারটির জন্য খেলোয়াড়ের জেতা ট্রফিগুলোও হিসেব করা হয়।
গত মৌসুমে স্প্যানিশ লা লিগায় বার্সেলোনার হয়ে সবচেয়ে বেশি গোল করে পিচিচি ট্রফি জিতেছেন মেসি। এছাড়াও চলতি বছর আর্জেন্টিনার হয়ে জিতেছেন প্রথম শিরোপা। ২৮ বছরের খরা কাটিয়ে আর্জেন্টিনাকে কোপা আমেরিকার শিরোপা জেতান মেসি। এজন্য ল্যাটিন আমেরিকান অঞ্চলের সবচেয়ে বড় টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছিলেন ৩৪ বছর বয়সী মেসি। এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি সাতবার এই পুরস্কার জিতেছেন আর্জেন্টাইন তারকা। তার পরের নামটি রোনালদোর। তিনি জিতেছেন পাঁচবার। তিনবার করে পান মিচেল প্লাতিনি, জোহান ক্রুয়েফ ও ভ্যান বাস্তেন। তারা তিনজনই নেদারল্যান্ডসের ফুটবলার ছিলেন। বেকেনবাওয়ার (জার্মানি), আলফ্রেডো ডি স্টিফানো (স্পেন) এবং রোনালদো (ব্রাজিল) দুইবার করে ব্যালন ডি’অর জেতেন।
২০০৯ সালে প্রথম বর্ষসেরা ফুটবলার নির্বাচিত হয়েছিলেন মেসি। ফিফার বর্ষসেরা ও ফ্রান্স ফুটবল সাময়িকীর ব্যালন ডি’অর পুরস্কার শুরুতে আলাদাভাবে দেওয়া হতো। সেবছর দুটিই জিতেছিলেন তিনি। ২০১০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ছয় বছর দুটি পুরস্কার একীভূত হয়ে নাম হয় ফিফা ব্যালন ডি’অর। পরপর তিন বছর ওই পুরস্কার জিতেন আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড। এর পরের দুই বছর রোনালদো জেতার পর ২০১৫ সালে আবারও পুরস্কারটি জিতে নেন মেসি, জিতেন ওই সময়ের রেকর্ড পঞ্চমবারের মতো।
২০১৬ সাল থেকে আবার আলাদাভাবে দেওয়া হচ্ছে পুরস্কার দুটি। ২০১৬ ও ২০১৭ সালে ফিফা বর্ষসেরা ও ব্যালন ডি’অর জিতেন রোনালদো। আর ২০১৮ সালে সবকটি পুরস্কার জিতেন লুকা মাদ্রিচ। ২০১৯ সালে ষষ্ঠবারের মত ব্যালন ডি’অর জিতে সবাইকে ছাড়িয়ে যান মেসি। এবার সপ্তমবারের মত এই পুরস্কার জয় করে নিজেকে ছাড়িয়ে যান আর্জেন্টাইন এই কিংবদন্তি।