এ বি এন এ : সোনা ও রুপার অলংকার বিক্রির ওপর মূল্য সংযোজন কর (মূসক) দেড় শতাংশ, সোনার আমদানি শুল্ক ভরি প্রতি ১৫০ টাকা ও স্বর্ণ নীতিমালা করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি। আগামী ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটে দাবি তিনটি বাস্তবায়িত না হলে সারা দেশের জুয়েলারি দোকান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন সমিতির কেন্দ্রীয় নেতারা।
রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে আজ মঙ্গলবার বিকেলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দিয়েছে জুয়েলার্স সমিতি। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক খান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সমিতির সভাপতি কাজী সিরাজুল ইসলাম, সহসভাপতি গঙ্গা চরণ মালাকার ও এম এম হান্নান আজাদ, সাবেক সভাপতি এম এ ওয়াদুদ খান প্রমুখ।
আগামী অর্থবছর থেকে ‘মূসক ও সম্পূরক শুল্ক আইন ২০১২’ বাস্তবায়নের ঘোষণা দিয়েছে সরকার। নতুন এই আইনে পণ্য আমদানি বা উৎপাদন ও খুচরা বিক্রি পর্যায়ে অভিন্ন ১৫ শতাংশ হারে মূসকের কথা বলা হয়েছে। বর্তমানে সোনা ও রুপার অলংকারের মোট বিক্রয় মূল্যের ৩৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর ভিত্তি ধরে পাঁচ শতাংশ মূসক দিতে হয়। গত বছরের জুনের আগে তিন শতাংশ হারে মূসক দিতে হতো।
এনামুল হক খান বলেন, ‘সোনার উচ্চমূল্যের সঙ্গে পাঁচ শতাংশ মূসক আরোপ হওয়ার কারণে অলংকার বিক্রি কমে গেছে। তবে পাশের দেশ ভারতে এক শতাংশ মূসক দিতে হয়। আমাদের দেশে ১০ লাখ টাকার সোনার অলংকার কিনলে ৫০ হাজার টাকা মূসক দিতে হয়। একই পরিমাণ অলংকারে ভারতে দিতে হয় মাত্র ১০ হাজার টাকা মূসক। ভারতের ভিসা প্রাপ্তি সহজলভ্য ও যাতায়াত ব্যবস্থা উন্নত হওয়ায় অনেক ক্রেতা ভারত থেকে সোনার অলংকার ক্রয়ে উৎসাহী হচ্ছেন।’
আগামী অর্থবছর নতুন মূসক আইনের আওতায় সোনার অলংকার বিক্রির ওপর ১৫ শতাংশ মূসক আরোপ হলে জুয়েলারি ব্যবসায়ীরা কখনো মেনে নেবে না বলে উল্লেখ করেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক। তিনি দাবি জানান, জুয়েলারি শিল্পকে বাঁচাতে হলে আগামী বাজেটে সোনার অলংকার বিক্রির ওপর মূসক পাঁচ শতাংশ থেকে কমিয়ে দেড় শতাংশ করতে হবে। চোরাচালান বন্ধে সোনা আমদানি শুল্ক ভরি প্রতি তিন হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ১৫০ টাকা করার পাশাপাশি দুই কেজি পর্যন্ত সোনার বার আমদানির সুযোগ দিতে হবে। এ ছাড়া জুয়েলারি শিল্পের জন্য একটি টেকসই স্বর্ণ নীতিমালা করতে হবে।
বাজেটে দাবিগুলো বাস্তবায়ন না হলে ৪ জুন থেকে সারা দেশের সব জুয়েলারি দোকান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে বলে ঘোষণা দেন এনামুল হক খান। তিনি বলেন, ‘আমাদের দাবি বাস্তবায়নে সরকারের প্রতি অনুরোধ করছি। অন্যথায় বাঁচার তাগিদেই কর্মসূচি গ্রহণে বাধ্য হব।’
দাবি বাস্তবায়ন না হলে দোকান বন্ধের পাশাপাশি ৫ জুন ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাব এবং প্রত্যেক জেলা ও উপজেলায় যথাক্রমে ইউএনও ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করার ঘোষণা দেয় জুয়েলার্স সমিতি।