এবিএনএ : পৃথিবীর অনেক দেশের মানুষই জনসমক্ষে নগ্ন হতে দ্বিধাবোধ করেন না। তাদের পাবলিক গোসলখানাতে চোখ দিলেই তা দেখা যায়। কোরিয়ান বা জাপানিজ বাথহাউজগুলোর সনা উপভোগ করতে যান অনেক মানুষ। সেখানে হরহামেশাই নগ্ন হন তারা।
কিন্তু এসব স্থানে জনসমক্ষে নগ্ন হওয়ার যদি অলিম্পিক পর্যায়ের প্রতিযোগিতা হয়, তবে নিঃসন্দেহে সেখানে একচ্ছত্র আধিপত্য থাকবে জার্মানদের।
নগ্ন হওয়ার ক্ষেত্রে জার্মানদের আয়েশী ঢং রয়েছে। ১৯ শো শতকের দিকে স্ক্যান্ডনেভিয়ানদের মতো স্টিম বাথকে জার্মানরা স্বাস্থ্যের যত্নে গ্রহণ করে নেয়। তখন থেকেই পাবলিক গোসলখানায় মানুষের আনাগোনা বাড়ে এবং তারা সহজেই নগ্ন হওয়ার চর্চা চালিয়ে যান।
জনসমক্ষে নগ্ন হওয়াকে আরো স্বাভাবিক করে দেয় সমুদ্র সৈকত। কিছু সৈকতে নগ্ন থাকা বাদ্যহতামূলক রয়েছে। শহরের পার্কে বা হাঁটার স্থানেও মানুষ নগ্ন হতে শুরু করে।
যদিও অনেক স্থানে পরবর্তিতে মানুষের সামনে নগ্ন হওয়ার চর্চাকে রোধ করা হয়, তবুও জার্মানির পাবলিক গোসলখানায় যেন নগ্নতা কখনোই শেষ হওয়ার নয়। তবে জাপানে নারী-পুরুষের জন্য আলাদা স্থানের ব্যবস্থা রাখা হয়। কিন্তু জার্মানিতে পাবলিক বাথহাউজগুলো নারী-পুরুষ একসঙ্গে গোসল করেন। আসলে এই স্থানে টানা ১০ মিনিট সবাই নিরাভরণ থাকার পর বিষয়টি নাকি প্রাকৃতিক বলেই মনে হয়।
জার্মানের এসব গোসলখানার ইন্টেরিয়র দারুণ আকর্ষণীয়। যেন শত শত বছর আগের কোনো রাজসীক গোসলখানায় গোসল করছেন সবাই।
হামবুর্গের সবচেয়ে পুরনো পাবলিক গোসখানার একটি ১৮৯৫ সালের কাইফু-বাড। একসময় তাতে নারী-পুরুষের জন্য স্থান পৃথক করা ছিল। এখন পুরুষদের অংশে পুল বানানো হয়েছে যার চারদিকে পিলার বসানো। পুরনো আমলের জানালা গলে এখানে সূর্যের আলো প্রবেশ করে। পুলের নিচে গিয়েও মনমুগ্ধকর সঙ্গীত কানে আসে। এই অংশে মানুষ দেহে তোয়ালে জড়িয়ে থাকেন। এ ছাড়া আরো গোপন অংশ রয়েছে। সেখানে মানুষ নগ্ন অবস্থায় সনা উপভোগ করেন।
এখানে অনেক অপশন রয়েছে। ইউক্যাপটাস রুম আছে। সনা আছে যেখানে রহস্যময় আলো বিরাজ করবে। আরো আছে ক্যাপাসিয়াস ফিনিশ সনা।
সকাল ৭টার মধ্যেই সনা নিয়ে মানুষের ভীড় জমে যায়। সেখানে বিরাজ করে শান্তিময় পরিবেশ।
মিইউনিখের পুরনো শহরের মিলার’সাচেস ভল্কসবাদ এক আকর্ষণীয় ভবন। ভেতরটা ১৯০১ সালের ইন্টেরিয়রে নজরকাড়া পরিবেশ। এর নকশা প্রকৃতিকে মাথায় রেখে করা হয়েছে। এমনকি ছোট-ছোট কেবিনেও অপূর্ব ইন্টেরিয়র করা হয়েছে। এখানে মিলবে একটি বড় কক্ষ। সেকানে ডিম লাইটে শান্ত পরিবেশ। গোটা কক্ষে আড়াআড়িভাবে বাষ্প বেরোচ্ছে। সেখানে অবস্থানরত নগ্ন মানুষগুলো অনেকেই হেঁটে চলে যাচ্ছেন নিচে কোনো সনা নিতে।
কোলনে মিলবে সবচেয়ে সুন্দর পাবলিক গোসলখানা। এটা রোম সাম্রাজ্যের একটি অংশ। কোলনস নেপচুপবাদ খুলেছিল ১৯১২ সালে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ যখন জার্মানির সাম্রাজ্য মুছে দিয়েছিল, তখন এটি চালু হয়। টাইলস আরো মোজাইকে সজ্জিত এক ভবন। এর অন্য এক অংশে রয়েছে ব্যায়ামাগার। সেখানে রয়েছে রোমানদের ঐতিহাসিক স্টিম রুম এবং প্লাঞ্জ পুল।
সেখানে কাইজারবাদ সবচেয়ে উপভোগ্য অংশ। এখানে সম্রাটদের গোসল উপভোগ করা যাবে। হালকা আলোয় উষ্ণ পানির পুলে গোসল করা যায় সঙ্গীত উপভোগের মাধ্যমে। এখান থেকে বেরিয়ে চলে যাওয়া যায় আরেক ভবনে। সেখানে বিভিন্ন তাপমাত্রার পানিতে সনা নেওয়া যায়। এখানকার সনা জাপানিদের মতো করে উপভোগ করা যায়। একটি জেন গার্ডেনের মধ্যে অবস্থিত।
এসব গোসলখানার মাধ্যমে জার্মানিরা মানুষের সামনে নগ্ন হওয়ার এক আয়েশী ও উপভোগ্য পন্থা বের করেছে। এখানে বসে যে কেউ নাকি অনুভব করবেন, আমি পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী নগ্ন মানুষ। সূত্র : ট্রাভেলার