এবিএনএ : পরিচিতির গণ্ডি বাড়াতে কিংবা দূরে থেকেও কাছের মানুষদের সান্নিধ্যে থাকতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের জুড়ি মেলা ভার। আধুনিক প্রযুক্তির যুগে ফেসবুক কিংবা টুইটার ছাড়া যেন আমাদের চলেই না। এটি সবসময় যে আমাদের উপকার করে এমনটি নয়। এসব সামাজিক মাধ্যম অনেকের জন্য বিশেষ করে রক্ষণশীল সমাজের নারীদের জন্য বিপদজনকও বটে। পশ্চিমা সমাজের একজন নারী যেসব ছবি ফেসবুক কিংবা টুইটার পোস্ট করতে পারেন। সেই একই ছবি উত্তর আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য বা দক্ষিণ এশিয়ার একজন নারীর জন্য অনেক সমস্যা তৈরি করে। এসব ছবি পোস্টে হয়রানির পাশাপাশি অনেক সময় তাদের শাস্তিও পেতে হয়। তাই এসব ছবি পোস্ট না করাই ভালো।
যেসব ছবি ফেসবুক-টুইটারে পোস্ট করবেন না-
জড়িয়ে ধরা
পশ্চিমা দেশগুলোসহ বিশ্বের অনেক দেশেই এই ছবিটি হয়তো খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু বিয়ে হয়নি, এমন রক্ষণশীল সমাজের কোন নারী উপরের ছবিটি কখনই ফেসবুক কিংবা টুইটারে পোস্ট করবেন না। কেননা সম্পর্কটি যদি শেষ পর্যন্ত না টেকে, তাহলে এই ছবিটি তাকে লজ্জায় ফেলতে পারে। শুধু তাই নয়, হয়রানিরও কারণ হতে পারে এই ছবি। আবার তার বন্ধু তালিকায় থাকা পরিবারের সদস্য, প্রতিবেশী বা স্বজনদের কাছেও ছবিটি গ্রহণযোগ্য হবে না।
বিয়েতে নাচ
পাকিস্তানের একটি বিয়েতে ছেলে-মেয়েদের একত্রে নাচের ছবি ছড়িয়ে পড়ার পর সামাজিকভাবে তাদের বিচার করে শাস্তি দেওয়া হয়। অনেক দেশেই এ রকম নাচ হয়ে থাকে। কিন্তু নাচের ছবি বা ভিডিও যখন সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে যায়, তখন তাদের জন্য বিশেষ করে নারীদের জন্য বিব্রতকর হয়ে দাঁড়ায়। বিশেষ করে পর্দা প্রথার চল আছে, এমন দেশগুলোয় এ রকম কোন নাচের ঘটনা অনেক সময় শাস্তির কারণ হয়ে যায়।
‘সম্পর্কে আছি’
বিশ্বের রক্ষণশীল দেশগুলোতে অনেকেই আছেন যারা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করেন। তাদের অনেকেই আছেন যারা কোন সম্পর্কে জড়িয়ে পড়লেও প্রকাশ্যে তাদের স্ট্যাটাস পরিবর্তন করেন না। এমনকি ইরানের মতো অনেক দেশে এখন বিয়ের আগে একত্রে থাকার চল বাড়লেও, প্রকাশ্যে তা তারা ঘোষণা দিতে চান না। মধ্যপ্রাচ্য বা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোয় অনেকেই এ বিষয়টি পরিবর্তন করেন না, কারণ তারা পরিবারের সদস্যদের জানতে দিতে চান না যে, তারা কোন সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন।
সূচালো মুখের ছবি
অনেক দেশেই এমন ছবি স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করা হয় না। যারা এমন ছবি পোস্ট করেন, তাদের খুব সম্মানের চোখে দেখা হয়না।
যৌন আবেদনময়ী ছবি
রক্ষণশীল সমাজের দেশগুলোয় এমন ছবি সামাজিক মাধ্যমে দেওয়ার ঘটনা খুবই বিরল। আফগানিস্তান বা পাকিস্তানের মতো অনেক এলাকায় এমন ছবির কারণে শাস্তিও পেতে হতে পারে। এমনকি মধুচন্দ্রিমা, দেশে বা বিদেশে সমুদ্রের তীরে বেড়াতে গিয়েও স্বল্প কাপড় পড়লেও, সেসব ছবি সামাজিক মাধ্যমে দেওয়া হয় না। কোন নারী এসব ছবি সামাজিক মাধ্যমে দিলে তিনি সবার আলোচনার বিষয়বস্তু হয়ে ওঠেন।
অনেক রক্ষণশীল দেশে সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারকারী নারীরা তাদের প্রোফাইল পিক হিসেবে নিজের ছবিও ব্যবহার করেন না। অনেকে পর্দা প্রথার কথা চিন্তা করে নিজের ছবি দেন না। আবার অনেকে নিজের ছবি দেওয়া থেকে বিরত থাকেন, কারণ অনেক সময় এসব ছবিও বিকৃত করা হয় বা তার জন্য নানা সমস্যার কারণ হয়ে ওঠে।