এবিএনএ : তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ঢাকায় পৌঁছেছেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। বুধবার বিকালে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে পৌঁছালে তাকে স্বাগত জানান বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। বিমান থেকে নামার পর ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্টকে ফুল দিয়ে অভ্যর্থনা জানায় দুই শিশু। পরে বিমানবন্দরের ভিভিআইপি টার্মিনালে ২১ বার তোপধ্বনি দিয়ে স্বাগত জানানো হয় মাহমুদ আব্বাসকে। এছাড়া তিন বাহিনীর সুসজ্জিত একটি দল গার্ড অব অনার প্রদান করে।
এ সময় বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, স্থানীয় সরকার মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম ও তিন বাহিনীর প্রধান। ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরসহ বিভিন্ন সড়কে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও তার পোট্রেট টানানো হয়েছে। পাশাপাশি বিমানবন্দরের সড়কে নিয়ন আলোতেও ভাসছে তাদের ছবি। বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্টের বাংলাদেশ সফরকে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে মাহমুদ আব্বাসের সফরের কথা ঘোষণা করে। এই ঘোষণায় বলা হয়, ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. রিয়াদ আল মালকী, প্রধান বিচারপতি মাহমুদ আলহাব্বাস, প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র নাবিল আবুরুদাইনাহ, কূটনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মাজদি খালদিসহ ঊর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা মাহমুদ আব্বাসের প্রতিনিধি দলে থাকবেন। এ সফরকালে মাহমুদ আব্বাস রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মিলিত হবেন।
এসব বৈঠকে মাহমুদ আব্বাস দ্বিপক্ষীয়, আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক অভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে বাংলাদেশের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। এ সময়ে দু’দেশের মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে যৌথ কমিশন গঠন সংক্রান্ত একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছাড়াও, দু’দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা সৌজন্য বৈঠকে মিলিত হয়ে দু’দেশের প্রাধিকারপ্রাপ্ত ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মতবিনিময় করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। ঢাকা সফরের শুরুতেই ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট সাভারে অবস্থিত জাতীয় স্মৃতিসৌধে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের অমর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। তিনি ধানমণ্ডি ৩২ নম্বর সড়কে অবস্থিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করবেন।
এ ছাড়াও মাহমুদ আব্বাস তার সম্মানে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক আয়োজিত একটি নৈশভোজে অংশগ্রহণ করবেন। ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ। বাংলাদেশে তিন দিনের সরকারি সফর শেষে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি অপরাহ্নে ঢাকা ত্যাগ করবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় জানাবেন বলে জানা গেছে।