এ বি এন এ : অবশেষে রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের জন্য প্যানেলভুক্ত প্রায় ২৪ হাজার প্রার্থীর অপেক্ষার অবসান হচ্ছে।
বুধবার এসব প্রার্থীকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের আদেশ জারি করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
ওই আদেশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে তা জরুরি ভিত্তিতে ফ্যাক্স যোগে বুধবারই প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের (ডিপিই) মহাপরিচালককে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার।
তিনি বলেন, ‘প্যানেলভুক্ত প্রায় ২৮ হাজার প্রার্থী আছেন। আমাদের সিদ্ধান্ত সবাইকেই নিয়োগ দেয়া। কিন্তু বিভিন্ন সূত্রে আমরা জানতে পেরেছে, এখন সর্বোচ্চ ২৪ হাজার প্রার্থী আছেন। বাকিরা কেউ অন্য চাকরিতে যোগ দিয়েছেন। আবার কেউ মারা গেছেন।’ ডিপিই’র একজন পরিচালক মন্ত্রণালয়ের আদেশ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, তারা এখন এই আদেশ অনুযায়ী নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করতে জেলা প্রশাসক ও জেলা শিক্ষা অফিসারকে নির্দেশনা পাঠাবেন।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন ঊধ্বর্তন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্যানেলভুক্ত এসব প্রার্থী যদিও রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। কিন্তু তারা এখন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগ পাবেন। এর কারণ ব্যাখ্যা করে ওই কর্মকর্তা বলেন, ২০১০ সালের ১১ এপ্রিল রেজিস্টার্ড বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকের শূন্য পদে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছিল। যার লিখিত পরীক্ষা নেয়া হয় ২০১২ সালের ৯ এপ্রিল। পরীক্ষায় চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ হয় ৪২ হাজার ৬১১ জন।
তিনি বলেন উত্তীর্ণদের নিয়ে একটি প্যানেল গঠন করা হয়। কথা ছিল এ ইপ্যানেল থেকে পর্যায়ক্রমে নিয়োগ দেয়া হবে। এরই অংশ হিসেবে প্রায় ১৪ হাজার জনকে নিয়োগও দেয় সরকার। কিন্তু এরই মধ্যে ২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের ঘোষণা দেন। এতে প্যানেল থেকে নিয়োগ দেয়া বন্ধ হয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে ভুক্তভোগীদের অনেকে উচ্চ আদালতে একাধিক মামলা করেন। ওইসব মামলার একটি রায় অনুযায়ী নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার শফিকুল ইসলামসহ ১০ জন হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। ওই রিটের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে গত বছরের ১৮ জুন রায় দেন হাইকোর্ট। এতে রিট আবেদনকারী ১০ জনকে নিয়োগের নির্দেশ দেন।
ওই রায়ের বিরুদ্ধে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ অন্যরা আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন (লিভ টু আপিল) করলে তা খারিজ করেন আপিল বিভাগ। পরে অবশ্য মন্ত্রণালয় এই ১০ জনকে নিয়োগের পদক্ষেপ নেয়। জানা গেছে, এই ১০ জনের মধ্যে একজন মারা গেছেন। বাকি নয়জনের মধ্যে সাতজন যোগ দিয়েছেন। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব জানান, এই ১০ জনের নিয়োগের ঘটনার পর তারা চিন্ত করেছেন, একই ইস্যু হওয়ায় প্যানেলভুক্ত বাকিদেরও নিয়োগ দিতে হবে। ১০ জনের নিয়োগের ব্যাপারে আইন মন্ত্রণালয়ের সলিসিটর উইংয়ের দেয়া মতামতেও এমন নির্দেশনা আছে। এমন পরিস্থিতি বিবেচনায় তারা সারা দেশ থেকে দু’সপ্তাহ আগে শূন্যপদের সংখ্যা সংগ্রহ করেন। এরপরই প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া শেষে বুধবার নিয়োগের আদেশ জারি করা হয়।