এ বি এন এ : আপনার জীবন সঙ্গী বা সঙ্গীনি আপনাকে কতটা বোঝেন এবং আপনার জন্য কতটা যত্নশীল তার সঙ্গে আপনার ঘুমের গুনগত মানের বিষয়টিও জড়িত। নতুন এক গবেষণায় এমনটিই দেখা গেছে। গবেষণায় দেখা গেছে, যাদের জীবন সঙ্গী বা সঙ্গীনি তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল তাদের মধ্যে উদ্বেগ এবং মানসিক উত্তেজনা কম থাকে। এর ফলে তাদের ঘুমের গুনগত মানও বাড়ে। ঘুমের একটি বড় কাজ হলো, আমাদের শারীরিক স্বাস্থ্যের ক্ষয় রোধ করা। তবে ঘুমের এই ভুমিকা শুধু তখনই অক্ষুণ্ন থাকে যখন আমরা নিরবিচ্ছিন্নভাবে উচ্চ মান সম্পন্ন ঘুম ঘুমাতে পারব। শরীরকে পুনরায় ফুরফুরে করে কাজের জন্য তৈরি করে এই ঘুম। গবেষকদের মতে, আপনার জীবন সঙ্গী বা সঙ্গীনি আপনাকে কতটা ভালো বুঝেন এবং আপনার প্রতি কতটা যত্নবান তা আপনি কতটা ভালো ঘুম ঘুমাতে পারেন তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। স্বস্তিদায়ক ঘুমের জন্য নিরাপত্তার অনুভূতি, প্রতিরক্ষা ও হুমকির অনুপস্থিতির দরকার হয়। মানুষের জন্য নিরাপত্তা এবং প্রতিরক্ষার প্রধান উৎস হলো সহানুভূতিশীল জীবনসঙ্গী বা সঙ্গীনি। শৈশবে এর উৎস হতে পারেন বাবা-মা আর প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর এর উৎস হতে পারেন জীবন সঙ্গী বা সঙ্গীনি। সহানুভূতিশীল জীবনসঙ্গী বা সঙ্গীনি তিনিই যিনি আপনার জীবনের কোনো কিছু এলোমেলো হয়ে গেলে আপনাকে প্রতিরক্ষা এবং সান্ত্বনা দিতে এগিয়ে আসবেন। আর একমাত্র এ উপায়েই মানুষ সবচেয়ে কার্যকরভাবে উদ্বেগ, টেনশন এবং মানসিক উত্তেজনা প্রশমন করতে পারে। আপনার সুস্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে অনেককিছু ছাড় দেবে। আপনি কোন জিনিসটা পছন্দ করছেন আর কোনটা করছেন না সেটা বোঝার চেষ্টা করবে। ফলে বাইরে থেকে দুঃশ্চিন্তা মাথায় নিয়ে ঘরে ফিরলে সঙ্গী বা সঙ্গীনির সংস্পর্শে তা আস্তে আস্তে প্রশমিত হবে। আপনার মাথা শীতল হবে। ঘুম ভালো হবে। আর সঙ্গী বা সঙ্গীনি এর উল্টো হলে আপনার দুঃশ্চিন্তা আরও বেড়ে যাবে, মস্তিষ্ক উত্তেজিত হবে, যা আপনার স্বাভাবিক ঘুমে ব্যাঘাত ঘটাবে। আপনার ঘরে ফিরতে মনে হবে না। সবসময় সঙ্গী বা সঙ্গীনিকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করবেন। ভালো ঘুম না হওয়ায় আপনার কাজে মনোযোগ কমে যাবে। মেজাজ খিটখিটে হবে যা আপনার কর্মক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলবে। অনেক ছোট খাটো বিষয়ও নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা হারাবেন, যা আপনার এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে। এর আগের গবেষণায় দেখা গেছে, সঙ্গী বা সঙ্গীনির সহানুভূতিশীল আচরণ শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যেসব সাক্ষ্যপ্রমাণ পাওয়া গেছে তাতে দেখা গেছে আরও সুখী, স্বাস্থ্যকর জীবন-যাপন এবং দীর্ঘায়ু পেতে হলে একজন সহানুভূতিশীল জীবন সঙ্গী বা সঙ্গীনি দরকার। গবেষণা থেকে প্রাপ্ত ওই সাক্ষ্য-প্রমাণগুলো সোশ্যাল পার্সোনালিটি অ্যান্ড সাইকোলজিক্যাল সায়েন্স নামক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।