এবিএনএ : মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামী ও দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদণ্ডাদেশ স্থগিত করার আহ্বান জানিয়েছে মানবাধিকারসংক্রান্ত জাতিসংঘ হাইকমিশন। শুক্রবার জেনেভা থেকে দ্ওয়া এক বিবৃতিতে হাইকমিশনের মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি এই বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বিবৃতির বিষয়ে দণ্ডপ্রাপ্তদের ছবি দিয়ে সংস্থাটির ফেসবুক পেইজ থেকেও পোস্ট দেওয়া হয়েছে। সেখানে বাংলাদেশিরা তীব্র ক্ষোভ ব্যক্ত করেছেন সংস্থাটির বিরুদ্ধে।
বিবৃতিতে বলা হয়, বিচারের মান যতই কঠোর হোক না কেন, জাতিসংঘ যেকোনো পরিস্থিতিতে মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে। কিন্তু দুঃখজনক বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সুষ্ঠু বিচারের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড ও নাগরিক এবং রাজনৈতিক অধিকারবিষয়ক আন্তর্জাতিক সনদের (আইসিসিপিআর) শর্ত পূরণ করেনি। বিবৃতিতে, আইসিসিপিআরের আওতায় বাধ্যবাধকতা সম্পর্কে বাংলাদেশ সরকারকে শ্রদ্ধাশীল হওয়ার আহ্বান জানানো হয়। উল্লেখ্য, রবিবার মতিউর রহমান নিজামীর মৃত্যুদণ্ডবিষয়ক রিভিউ পিটিশনের শুনানি হওয়ার কথা।
উল্লেখ্য,এই বিষয়ে সংস্থাটির ফেসবুক পেইজ থেকেও পোস্ট করা হয়েছে। সেখানে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন বাংলাদেশিরা। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী কাজী ওয়াসীমুল হক সেই পোস্টে ইংরেজিতে দেওয়া মন্তব্যে বলেন, বাংলাদেশে আক্ষরিক অর্থে শত শত ব্যক্তি মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হয়ে ফাঁসির অপেক্ষায় আছে। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হিসেবে আমি জানতে আগ্রহী যে জাতিসংঘ শুধু এই দুজনের মৃত্যুদণ্ড নিয়ে কেন উদ্বিগ্ন? কেন অন্য ব্যক্তিদের মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে তারা কথা বলছে না? তাহলে কী আমরা ধরে নেব ওই ব্যক্তিরা জাতিসংঘের চোখে মানুষ নয় (অথবা ধনী)? ব্লগার আরিফ জেবতিক বেশ কয়েকটি কমেন্ট করেছেন পোস্টটিতে। জাতিসংঘের প্রতিষ্ঠানটির ফেসবুক পেইজকে কৌতুকের সঙ্গে তুলনা করে তিনি বলেন, জাতিসংঘ কী ন্যুরেমবার্গ ট্রায়ালে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের জন্য ক্ষমা চাইবে যাদেরকে এমনকি আপিল করার সুযোগও দেওয়া হয়নি? জাতিসংঘের যুদ্ধাপরাধীদের সমর্থন করাটা দুঃখজনক।
বাংলাদেশ পুলিশের সিনিয়র এএসপি মাসরুফ হোসেন তার মন্তব্যে লিখেন, কিভাবে বুঝবেন যে আপনি সঠিক যুদ্ধাপরাধীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে যাচ্ছেন? যখন জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের মতো পেইড এজেন্টরা তাদের হয়ে চিৎকার করে। অথচ তারা সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্র যখন মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে তখন কিছুই বলে না।