এ বি এন এ : বিএনপি যে দলগুলোকে নিয়ে জাতীয় ঐক্য করতে চাইছে, তাদের দিয়ে বৃহত্তর ঐক্য হবে বলে বিশ্বাস করেন না লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি অলি আহমদ বীর বিক্রম। আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় চলমান সংকট কাটিয়ে দেশে স্থিতিশীলতা আনার লক্ষ্যে মধ্যবর্তী নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানান এই এলডিপি নেতা।
বিএনপির চেয়ারপারসনের নেওয়া ঐক্য প্রক্রিয়াকে এলডিপি কীভাবে দেখছে—এমন প্রশ্নের জবাবে অলি আহমদ বলেন, যারা ২০ দলের বাইরে আছে, তাদের সঙ্গে বিএনপির পক্ষ থেকে একাধিকবার বৈঠক হয়েছে। বিভিন্ন অজুহাতে তারা ২০ দলের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হতে অনীহা প্রকাশ করেছে এবং তারা কয়েকটা দল নিয়ে ড. কামাল হোসেন সাহেবের সঙ্গে একটা জোটও করেছিল।
২০-দলীয় জোটের অন্যতম এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘যারা নানা অজুহাতে জোটে আসতে অনীহা প্রকাশ করেছে, তারা যে বৃহত্তর ঐক্য করবে, এটা আমি বিশ্বাস করি না। এদের অনেকে ধান্দাবাজ, অনেকে দুর্নীতিবাজ। তারা বিভিন্ন কলাকৌশল নিয়ে এগোচ্ছে।’
মতিবিনিময় অনুষ্ঠানে অলি আহমদ সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকের টাকা লুটপাট, বিদেশে টাকা পাচার, দুর্নীতির লক্ষ্যে বড় বড় প্রকল্পে লাগামহীন ব্যয় বৃদ্ধি, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, দেশে জঙ্গিবাদের কারণ স্থিতিশীলতা না থাকা। জনগণ চরম অনিশ্চয়তায় ভুগছে। ফলে, তারা জঙ্গিবাদের দিকে ঝুঁকছে। এর দায় বেশি বর্তায় সরকারের ওপর।
অলি আহমদ বলেন, প্রাণহীন দেহ ও গণতন্ত্রহীন সমাজের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। চলমান সংকটের সমাধানের জন্য প্রয়োজন সবার অংশগ্রহণে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ মধ্যবর্তী নির্বাচন।
ওই নির্বাচন কার অধীনে হবে—এমন প্রশ্নের জবাবে অলি আহমদ বলেন, যখন সরকার নির্বাচন ঘোষণা করবে, তখন এ বিষয়গুলো নিয়ে আলাপ হবে। তবে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ হতে হবে। তিনি আরও বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচন আপনি যে-কারও অধীনে করতে পারেন। শুধু একটা কাজ করলে হবে। সেটা হলো প্রত্যেক ভোটার আইডেন্টি কার্ড নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করবে। কার্ডের নম্বরটা ব্যালট পেপারের উভয় দিকে লিপিবদ্ধ থাকবে। তাহলে জাল ভোট দেওয়ার আর কোনো অবকাশ থাকবে না। কেবল সন্ত্রাসীদের ভোটকেন্দ্র থেকে বাইরে রাখলে হবে।’
সরকার বলে আসছে সংবিধান অনুযায়ী তাদের অধীনেই নির্বাচন হবে—এ বিষয়ে অলি আহমদ বলেন, ‘জনগণের জন্য, দেশের জন্য শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটার জন্য আমাকে যদি চেয়ার থেকে সরেও যেতে হয়, সেটার জন্য আমাকে প্রস্তুত থাকতে হবে।’
জামায়াতকে সঙ্গে রেখে ঐক্য বা সংলাপ সম্ভব নয়—সরকারসহ বিভিন্ন মহলের এমন বক্তব্যের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে অলি আহমদ জামায়াতের নাম উল্লেখ না করে বলেন, ‘এ ব্যাপারে কোর্টের একটা রায়ও আছে। যারা ক্ষমতায় আছে, তারা এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে পারে। ব্যবস্থা নিলে আমরা মেনে নেব।’
মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন এলডিপির মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুল করিম, আবদুল গণি, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম প্রমুখ।