এবিএনএ : শহীদ দিবসের প্রথম প্রহরে শহীদ মিনারে ফুল দিতে গিয়ে খালেদা জিয়ার শহীদবেদিতে উঠে যাওয়ার সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি (খালেদা) যদি সঠিক জায়গাটা চিনে না থাকেন তাহলে তার সাঙ্গপাঙ্গরা কী করেছেন, তারাও কি তাকে সঠিক জায়গায় নিয়ে যাবে না, নাকি তারও বেতালা ছিলেন।
বুধবার রাজধানীর ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে আয়োজিত শহীদ দিবসের অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে।
একটি জাতিকে ধ্বংস করার জন্য তার ভাষা, সংস্কৃতি, কৃষ্টি ও ইতিহাস ধ্বংস করে দিতে হয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ দেশেও বারবার এ রকম চেষ্টা করা হয়েছে। তবে তা বারবার রুখে দিয়েছে এ দেশের মানুষ। এ সময় তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কিছু উদ্ধৃতি তুলে ধরেন, যেখানে পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠীর এ ধরনের নানা তৎপরতার কথা উঠে আসে।
প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে শহীদ মিনারে ফুল দিতে গিয়ে খালেদা জিয়ার শহীদবেদিতে উঠে যাওয়ার সমালোচনা করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা আমাদের ভাষার মর্যাদা এনে দিয়েছেন, যে জায়গাটা আমরা পবিত্র মনে করি, সেখানে তিনি সদলবলে উঠে গেলেন। তিনি তাহলে ফুল দিলেন কোথায়? নাকি সেটা নিজের পায়ের কাছে নিয়ে আসলেন, আমরা জানি না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যেখানে মহামান্য রাষ্ট্রপতি ফুল দিয়েছেন, আমি ফুল দিয়েছি, মাননীয় স্পিকার ফুল দিয়েছেন, আমরা সবাই ফুল দিয়েছি, সম্মান করেছি, সেখানে তিনি উঠে গেছেন। এখন আমরা কী মনে করব।’
‘যদিও এটা বলা ঠিক না, কিন্তু সেখানে সিসি ক্যামেরা আছে, সাংবাদিকদের ক্যামেরা আছে, তার দলের লোকজন ছবি তুলেছে, সোশাল মিডিয়ায় সব দেখা গেছে।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি (খালেদা) না হয় বেতালা ছিলেন, মধ্যরাতে গেছেন, সঠিক জায়গাটি না চিনে থাকতে পারেন। কিন্তু তার সাঙ্গপাঙ্গরা কী করছিলেন। তারা কি তাকে সঠিক জায়গায় নিয়ে যাবে না? তারা কি তার (খালেদা) মতো বেতালা ছিলেন?’
এর আগে প্রধানমন্ত্রী ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ তোলেন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, ‘৩০ লাখ শহীদের বিনিময়ে এ দেশ স্বাধীন হয়েছে এটা প্রতিষ্ঠিত সত্য। পাকিস্তানিরা এটা না মানতে পারে, কিন্তু দেশের একজন প্রতিষ্ঠিত নেতা, যিনি দুবার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, যদিও তারা বলেন তিনবার, তিনি কী করে পাকিস্তানিদের মতো কথা বলেন।’
প্রধানমন্ত্রী ৫ জানুয়ারির দশম জাতীয় নির্বাচনের আগে-পরে বিএনপির নেতৃত্বাধীন আন্দোলনের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারা সে সময় মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে। মানুষ পুড়িয়ে মারাই নাকি তাদের আন্দোলন। তাহলে তাদের কাছে ভাষা-সংস্কৃতি-ইতিহাসের কী মূল্য আছে?’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পঁচাত্তরের পর যারা ক্ষমতায় এসেছে, তারা চায়নি বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে মাথা তুলে দাঁড়াক। তারা ভিক্ষুক বানিয়ে রাখতে চেয়েছে বাংলাদেশকে। কিন্তু সেই অবস্থা থেকে দেশকে মুক্ত করি আমরা।’ বাংলাদেশকে ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে তার দলের নেতাকর্মীসহ সবাইকে সোচ্চার থাকার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।