,
প্রচ্ছদ | জাতীয় | আন্তর্জাতিক | অর্থনীতি | আমেরিকা | লাইফ স্টাইল | ভিডিও নিউজ | ফিচার | আমেরিকা | বিনোদন | রাজনীতি | খেলাধুলা | বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি | শিক্ষা

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলার বৈশ্বিক লড়াইয়ে পিছু হটার কোনো জায়গা নেই

এবিএনএ : সারা বিশ্বের মানুষ যখন আজকে ধরিত্রী দিবস পালন করছে বিশ্বনেতারা নিউ ইয়র্কের জাতিসংঘে ইতিহাস সৃষ্টি করছেন। সেখানে এক আলোচনায় একশ’টিরও বেশি দেশ জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক প্যারিস চুক্তি স্বাক্ষর করছে। আনুষ্ঠানিকভাবে এই চুক্তি স্বাক্ষরের যে প্রতিশ্রুতি তারা দিয়েছিলেন এখানে তারই প্রতিফলন ঘটাচ্ছেন। আমাদের ধরিত্রীর ইতিহাসে এটি একটি নতুন মোড় এবং কোন আন্তর্জাতিক চুক্তি স্বাক্ষরের ক্ষেত্রে একই দিনে এতগুলো দেশের এক সঙ্গে স্বাক্ষর প্রদান একটি রেকর্ড সৃষ্টি করতে পারে।

উপরন্তু, গত মাসে প্রেসিডেন্ট ওবামা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর সঙ্গে মিলে ঘোষণা দিয়েছিলেন যে আমাদের এই দুই দেশ এই দিনে প্যারিস চুক্তি স্বাক্ষর করবে এবং এই বছর আনুষ্ঠানিকভাবে যোগদান করবে। আমরা আস্থাশীল যে এই ঐতিহাসিক এবং উচ্চাকাঙ্ক্ষী চুক্তি যত দ্রুত সম্ভব কার্যকর করতে বাকি দেশগুলোও একই কাজ করবে।

একটি অধিকতর সবুজ ভবিষ্যৎ ইতিমধ্যেই আমরা দেখতে পাচ্ছি। দেশ ও শহরের নেতারা জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সরে এসে নতুন নতুন উপায় উদ্ভাবন করছেন ও খাপ খাইয়ে নিচ্ছেন এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকেরা একটি বিশুদ্ধ জ্বালানি অর্থনীতিতে বিনিয়োগ করছেন। ২০২৫ সালের মধ্যে গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমনের হার ২০০৫ মাত্রা থেকে ২৬-২৮ শতাংশ কমিয়ে আনার জন্য যুক্তরাষ্ট্র যে অঙ্গীকার করেছে তা বাস্তবায়নের দিকে দেশটি এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের ইতিহাসের সবচাইতে শক্তিশালী জ্বালানি অর্থনীতির মানদণ্ডের মাধ্যমে আমরা এই কাজ করছি। এছাড়াও, ২০০৯ সাল থেকে সৌর উৎপাদনের হার বিশ গুণ বৃদ্ধির মাধ্যমে এবং যন্ত্রপাতির জন্য জ্বালানি সংরক্ষণ থেকে শুরু করে শহরের বর্জ্যের গাদা থেকে মিথেন-সমৃদ্ধ গ্যাস নির্গমন হ্রাস পর্যন্ত সব কিছুর জন্য প্রস্তাবিত বিধিমালার মাধ্যমে আমরা আমাদের করণীয় করে চলেছি।

আমার রাজ্য নিউ জার্সি জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসারে বেশ কিছু উচ্চাকাঙ্ক্ষী পদক্ষেপ নিয়েছে। নিউ জার্সির পরিবেশ প্রতিরক্ষা বিভাগ টেকসই জার্সি (সাস্টেইনেবল জার্সি) কর্মসূচির সূচনা করেছে যাতে করে শহরগুলো সবুজে সবুজে ভরে উঠতে পারে, টাকা বাঁচাতে পারে এবং জীবনের দীর্ঘমেয়াদী মানোন্নয়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারে। “সাস্টেইনেবল জার্সি” এই কর্মসূচির সমর্থনে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা এবং আর্থিক প্রণোদনা দিয়ে থাকে। “দ্য নিউ জার্সি বোর্ড অফ পাবলিক ইউটিলিটিস”-এর “ক্লিন এনার্জি প্রোগ্রাম” বাড়ীওয়ালাদেরকে, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং পৌরসভাগুলোকে তাদের জীবন যাপনে বিশুদ্ধ জ্বালানি সংযুক্ত করার জন্য উৎসাহিত করে থাকে। যুক্তরাষ্ট্রের পরিবেশ প্রতিরক্ষা সংস্থার কাছ থেকে “ক্লিন এনার্জি প্রোগ্রাম” ২০১৬ সালের “সাস্টেইনড এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড” লাভ করেছে বিগত পনেরো বছর যাবৎ বিশুদ্ধ জ্বালানি ব্যবহারে তাদের প্রচারণার জন্য।

আমরা যখন জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় অভ্যন্তরীণ ভাবে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিচ্ছি, এই বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্র তখন আন্তর্জাতিক সহযোগিতার দিকেও মনোযোগ দিচ্ছে। গত মাসে আমরা গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ড (জিসিএফ)-কে পঞ্চাশ কোটি ডলার অনুদান দিয়েছি। এটি জিসিএফ-কে দেয়া প্রতিশ্রুত তিনশ’ কোটি ডলার প্রদানের প্রথম কিস্তি। এই অর্থ উন্নয়নশীল দেশগুলোকে কার্বন নিঃসরণ কমাতে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলা করতে সাহায্য করবে। পাশাপাশি আমাদের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের যে অঙ্গীকার তাও এগিয়ে নিতে সাহায্য করবে, যা এই বিশ্ব গত বছর আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তির মাধ্যমে সম্পন্ন করেছে।

এ যাবৎকালের সবচেয়ে সফল পরিবেশ বিষয়ক চুক্তিগুলোর মধ্যে অন্যতম হল মন্ট্রিল চুক্তি, যা বিশ্বব্যাপী ওজোন হ্রাস কারী পদার্থ কমিয়ে আনছে। এটি ওজোনস্তরকে পুনরুদ্ধারের পথে নিয়ে এসেছে এবং স্বাস্থ্যগত, পরিবেশগত ও অর্থনৈতিক সব উপকার করা ছাড়াও লক্ষ লক্ষ ত্বকের ক্যান্সার প্রতিরোধ করেছে। হাইড্রফ্লুরোকার্বন (এইচএফসি) – যা ওজোন হ্রাস কারী অনেকগুলো পদার্থকে প্রতিস্থাপন করে – ওজোন স্তরের কোনো ক্ষতি করে না। কিন্তু এগুলো হচ্ছে গ্রিনহাউজ গ্যাস যা অনেক সময় কার্বন ডাই-অক্সাইডের চেয়েও হাজার গুণ বেশি ক্ষমতাশালী হয়। যুক্তরাষ্ট্র অংশীদারদের সাথে কাজ করছে যেন এই বছরেই মন্ট্রিল প্রটোকলে একটি এইচএফসি ফেজ-ডাউন সংশোধনী আনা যায় যাতে করে এই শতকের শেষ ভাগে বিশ্বে আধা ডিগ্রি সেলসিয়াস উষ্ণায়ন এড়ানো যায়।

কিভাবে আমরা আমাদেরকে ও আমাদের মালামাল পরিবহন করি তা পরিবর্তনের জন্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতা দরকার। বিশ্বব্যাপী গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণের শতকরা দুই ভাগ করে থাকে উড়োজাহাজ খাত। ২০২০ সালের মধ্যে আন্তর্জাতিক বেসামরিক উড্ডয়ন সংস্থা কার্বন নিঃসরণ বন্ধ করার লক্ষ্যে কাজ করছে। বিশ্ব বাজার-ভিত্তিক পরিমাপ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র একটি চুক্তি করতে প্রতিশ্রুতি বদ্ধ যা উড়োজাহাজ খাতকে এই উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যে পৌঁছাতে সাহায্য করবে।

গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র এবং মেঘনার মিলনস্থলে অবস্থিত হওয়ায় জলবায়ু পরিবর্তনের দরুন বাংলাদেশ বিশেষভাবে অরক্ষিত। দেশটির ৬০০ কিলোমিটার উপকূলীয় অঞ্চল রীতিমত বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়: বন্যা, ভুমিক্ষয়, সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, ঘূর্ণিঝড়ের দরুন জলোচ্ছ্বাস ইত্যাদি। বাংলাদেশ এই প্রতিবন্ধকতার সামনে ঘুরে দাঁড়িয়েছে।

‘বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড অ্যাকশন প্ল্যান ২০০৯’ (বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন কৌশল ও কর্ম পরিকল্পনা ২০০৯) প্রণয়ন ও ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাষ্ট ফান্ড (জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাষ্ট তহবিল) প্রতিষ্ঠার পর থেকে ধারাবাহিকভাবে বাৎসরিক বাজেটের ছয় শতাংশ জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজনে বরাদ্দের কারণে বাংলাদেশ পরিবেশ বিষয়ক কর্মসূচীতে নেতৃত্ব করছে। এই সকল কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের ‘চ্যাম্পিয়ন অব দ্য আর্থ ফর পলিসি লিডারশীপ’ পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।

প্যারিস চুক্তির ফলে ধরিত্রী দিবস সত্যিকারের আশার সঞ্চার করেছে। এটি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় আমাদের সম্মিলিত প্রতিশ্রুতির কথা মনে করিয়ে দেয়। আমাদের, আমাদের সন্তান ও দৌহিত্র-দৌহিত্রীদের জন্য পরিবেশ বান্ধব জ্বালানীর ভবিষ্যৎ গড়তে আমাদের অবশ্যই প্যারিস সম্মেলন থেকে পাওয়া প্রেরণাকে ধরে রাখতে হবে।

Chairman & Editor-in-Chief : Shaikh Saokat Ali
Managing Director: Akbar Hossain
Executive Editor: Mehedi Hasan
E-mail : abnanewsusa@gmail.com
Usa Office: 289 West Koach Avenue, Egg harbor City, New Jersey-08215, Bangladesh Office : 60/1. Purana Paltan (2nd Floor), Dhaka-1000, Usa. Phone: +16094649559, Cell:+8801711040113, +8801912-621573
Server mannarged BY PopularServer
Design & Developed BY PopularITLimited