এ বি এন এ : মিথ্যা ঘোষণা ও অবৈধ পণ্য আমদানি প্রতিরোধ, সময় বাঁচিয়ে রাজস্ব বাড়াতে চারটি স্থলবন্দরে যোগ হচ্ছে চারটি অত্যাধুনিক মোবাইল কন্টেইনার স্ক্যানার।
চীনের অনুদানে বেনাপোল, চট্টগ্রাম, আইসিডি কমলাপুর ও মংলা স্থলবন্দরে টেন্ডারের মাধ্যমে আগামী তিন মাসের মধ্যে এসব স্ক্যানার বসানো হচ্ছে।
‘প্রকিউরমেন্ট অব কন্টেইনার স্ক্যানার ফর কাস্টমস হাউজ (বেনাপোল, চট্টগ্রাম, আইসিডি কমলাপুর ও মংলা)’ প্রকল্পের আওতায় স্থলবন্দরে এসব স্ক্যানার বসবে।
বুধবার (১১ মে) এনবিআর সম্মেলন কক্ষে এনবিআর ও চীনের মধ্যে চুক্তি সই হয়। এনবিআর চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান ও চীনের রাষ্ট্রদূত মা মং চিয়াং চুক্তিতে সই করেন।
চুক্তি শেষে চীনের রাষ্ট্রদূত এনবিআর চেয়ারম্যানের কাছে স্ক্যানারের চাবি হস্তান্তর করেন। অনুষ্ঠানে অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
প্রকল্প পরিচালক ও শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক হোসাইন আহমেদ বলেন, ১১৭ কোটি ৪৬ লাখ টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্প হচ্ছে। এতে চীনের ৯৩ কোটি ৬৬ লাখ অনুদান ও ২৩ কোটি ৮৬ লাখ টাকা সরকারি তহবিল থেকে আসবে।
তিনি জানান, অত্যাধিক ও স্থানান্তর যোগ্য (এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সহজে নেওয়া যায়) এ কন্টেইনার স্ক্যানার সাধারণ স্ক্যানার থেকে অবৈধ পণ্য শনাক্তে অনেক বেশি সক্ষম।
বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে প্রায় দুই বছর আগে এ ধরনের স্ক্যানার বসানো হয়। চট্টগ্রাম বন্দরে বাকিগুলো ফিক্সড স্ক্যানার। যেগুলো সক্ষম হলেও মোবাইল স্ক্যানারের মতো নয়।
প্রকল্প পরিচালক আরও বলেন, স্ক্যানারগুলো চট্টগ্রাম বন্দরে চলে এসেছে। চারটি বন্দরকে স্ক্যানার বসানোর জায়গা ঠিক ও টেন্ডার করতে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আগামী ৩ মাসের মধ্যে স্ক্যানার বসানো শেষ হবে।
প্রতি আড়াই থেকে তিন মিনিটে একটি ও ঘণ্টায় প্রায় ২০টি কন্টেইনার স্ক্যান করতে সক্ষম এ স্ক্যানার। ব্যবসায়ীদের শুল্কায়নে সময় অনেক কমে আসবে। রাজস্ব আদায় বাড়বে বলেও জানান তিনি।
একটি কন্টেইনারে ডিক্লারেশন করা পণ্য স্ক্যানারে ইমেজে সহজে ধরা পড়বে। এতে মিস ডিক্লারেশন দিয়ে পণ্য আমদানি বা অবৈধ পণ্য আমদানি অনেকাংশে কমে আসবে বলে যোগ করেন তিনি।
এর মাধ্যমে কাস্টমসের সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। পণ্য শুল্কায়নে আধুনিকার ছোঁয়া লাগবে। প্রকল্পের আওতায় কর্মকর্তাদের ইতোমধ্যে প্রশিক্ষণ দিয়েছে চীন- বলেন প্রকল্প পরিচালক।
চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজ কমিশনার হোসেন আহমেদ বলেন, মডার্ন কাস্টমস ম্যানেজমেন্টের ক্ষেত্রে এ স্ক্যানার ভূমিকা রেখে চলেছে। সময় সাশ্রয়ী ও রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি পেয়েছে।
তিনি বলেন, কন্টেইনার স্ক্যান থেকে ২০১৪-১৫ অর্থবছর ২৭ হাজার ২৪৪ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে। ২০১০-১১ থেকে এ পর্যন্ত ৩৩.৭৩ শতাংশ রাজস্ব প্রবৃদ্ধি স্ক্যানার থেকে।
একমাত্র মোবাইল কন্টেইনার স্ক্যানারে গত একছরে বেশ কিছু মিস ডিক্লারেশনের পণ্য আটক করা হয়েছে। এ স্ক্যানারের ইমেজ বিশ্লেষণ অনেক স্বচ্ছ। আরো একটি স্ক্যানার যোগ হলে রাজস্ব সংগ্রহ বেড়ে যাবে, সময় অনেক বাঁচবে বলে জানান তিনি।
চীনের রাষ্ট্রদূত মা মিং চিয়াং বলেন, এ স্ক্যানার কাস্টমসের সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে রাজস্ব সংগ্রহে আরো এক ধাপ এগিয়ে যাবে কাস্টমস।
এনবিআর চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান বলেন, কাস্টম হাউসে নতুন এ স্ক্যানার যোগ হওয়ায় সময় বাঁচবে, অবৈধ পণ্য সনাক্ত, কাস্টমসের নিরাপত্তা ও রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে।
অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, কাস্টমস হাউজে নতুন মাত্রা যোগ করবে এ স্ক্যানার। প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে, সে সাথে সাবধানতার সাথে এর ব্যবহার করতে হবে।