এ বি এন এ : মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির আগামী ২৯ শে আগস্টের ঢাকা সফরের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেছেন, সফর সফল করার প্রস্তুতি চলছে। বুধবার সকালে রাজধানীর বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইএসএস) আয়োজিত দিনব্যাপী সেমিনারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, জন কেরির ঢাকা সফরের বিষয়ে বেশ কিছু দিন ধরেই আলোচনা চলছিল। তার এ সফরে দুই দেশের সম্পর্কের সব বিষয় নিয়েই আলোচনা হবে। খসড়া সফরসূচি অনুযায়ী, জন কেরি ২৯শে আগস্ট সকালে জেনেভা থেকে ঢাকায় আসবেন। ওই দিনই তার ঢাকা থেকে দিল্লি যাওয়ার কথা। ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস জন কেরির সম্ভাব্য সফরসূচির বিষয়টি গত রোববার আনুষ্ঠানিকভাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে জন কেরির এটি প্রথম ঢাকা সফর। তবে গত পাচ বছরে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে এটি দ্বিতীয় সফর। ২০১২ সালের মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রের তখনকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন দুই দিনের সফরে ঢাকায় এসেছিলেন। হিলারি বাংলাদেশ সফর শেষে ভারতে গিয়েছিলেন। জন কেরিও ঢাকা সফর শেষে দিল্লিতে যাচ্ছেন। সেখানে অনুষ্ঠেয় ‘ইউএস-ইন্ডিয়া স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড কমার্শিয়াল ডায়ালগ’-এ মার্কিন প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন তিনি। কূটনৈতিক সূত্র মতে, ২৯শে আগস্ট সকালে ইউএস এয়ারফোর্সের বিমানে বাংলাদেশে পৌঁছাবেন জন কেরি। সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পররাষ্ট্র মন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীসহ দেশের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী গতবছর ওয়াশিংটন সফর করেন। সেই সময়ে মন্ত্রী জন কেরিকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান তিনি। হোয়াইট হাউজ আয়োজিত জঙ্গীবাদ বিরোধী সম্মেলনের সাইড লাইনে মাহমুদ আলী ও কেরীর মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় বৈঠকটি হয়েছিল। সেখানে মাহমুদ আলীর আমন্ত্রণ গ্রহণ করে জন কেরি বাংলাদেশ সফরের আগ্রহ ব্যক্ত করেছিলেন। ওয়াশিংটন থেকে ঢাকায় ফিরে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার মার্কিন কাউন্টার পার্টের বাংলাদেশ সফরের ঘোষণা দিয়েছিলেন। জানিয়েছিলেন- ২০১৫ সালে কেরির বাংলাদেশ সফরে সম্ভাবনার কথা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই সময়ে সফরটি হয়নি। নতুন বছরে ঢাকায় মার্কিন মিশনের কর্মকর্তা জুলহাজ মান্নান হত্যা এবং গুলশানের কূটনৈতিক জোনের হলি আর্টিজান রেস্তরাঁয় জঙ্গী হামলার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে জন কেরি টেলিফোনে কথা বলেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার পক্ষ থেকে সন্ত্রাস ও সহিংস-চরমপন্থা দমনে বাংলাদেশকে যে কোন ধরনের সহায়তা দেয়ার প্রস্তাব করেন তিনি। ওই প্রস্তাব নিয়ে আলোচনায় মার্কিন স্টেট ডেপার্টমেন্টের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী মন্ত্রী নিশা দেশাই বিসওয়াল সাম্প্রতিক সময়ে একাধিকবার বাংলাদেশ সফর করেছেন। ঢাকাস্থ মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা ব্লুম বার্নিকাটসহ দেশটির বিভিন্ন পর্যায়ের প্রতিনিধির সঙ্গে সহায়তার ওই ‘প্যাকেজ প্রস্তাব’ নিয়ে এখনও আলোচনা চলছে। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রীর ঢাকায় ঝটিকা সফরে ওই প্রস্তাব নিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ আলোচনা হবে বলে কূটনৈতিক সূত্রগুলো আভাস দিয়েছে।