এ বি এন এ : ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে গ্রেফতার বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরীর ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
সোমবার দুপুরে ৫৪ ধারায় সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেফতার দেখিয়ে তাকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক গোলাম রব্বানী। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম শারাফুজ্জামান আনসারী তার জামিন নামঞ্জুর করে এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন আদালত পুলিশের প্রসিকিউশন বিভাগের সহকারী কমিশনার মিরাশ উদ্দিন। রিমান্ড আবেদনে গত ৫ মার্চ যুগান্তরে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের সূত্র ধরে বলা হয়, বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরী সম্প্রতি ভারতে ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের একজন সদস্যের সঙ্গে বৈঠক করেন। তিনি সরকার উৎখাতে ইসরাইলের সঙ্গে ষড়যন্ত্রে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।
রাষ্ট্রপক্ষের এই দাবির বিরোধিতা করে আসলাম চৌধুরীর পক্ষে শুনানি করেন সানাউল্লাহ মিয়া ও মাসুদ আহমেদ তালুকদার। তারা আসলামের জামিনেরও আবেদন করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবীরা দাবি করেন, আসলাম চৌধুরী চিকিৎসা করাতে পাঁচ দিনের জন্য দিল্লি গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি এক দাওয়াত অনুষ্ঠানে যান। ইসরাইলের কয়েকজনের সঙ্গে সেখানেই তার দেখা হয়। সেই ছবিই গণমাধ্যমে এসেছে।
আসলামের সঙ্গে কোনো বৈঠক তাদের হয়নি। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম শারাফুজ্জামান আনসারী আসলাম চৌধুরীর জামিন আবেদন নাকচ করে তার ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে গতকাল রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর কুড়িল বিশ্বরোড ৩শ’ ফিট সড়ক থেকে আসলাম চৌধুরী, তার সহকর্মী মো. আসাদ ও গাড়িচালক আল আমিনকে গ্রেফতার করা হয়।
গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার আবদুল বাতেন বলেন, ‘আসলাম চৌধুরীকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।’ সম্প্রতি ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের এজেন্ট মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে আসলাম চৌধুরীর বৈঠক নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড় শুরু হয়। এরপর থেকে গুঞ্জন ছিল আসলাম চৌধুরী গ্রেফতার হচ্ছেন। সরকারের পক্ষ থেকেও জানানো হয়, তিনি গোয়েন্দা নজরদারিতে আছেন।
রোববার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সতর্ক করে দিয়ে বলেন, মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে বিএনপির একাধিক শীর্ষ নেতার বৈঠক এবং যোগাযোগের তথ্য-প্রমাণ সরকারের কাছে রয়েছে। তাদের নজরদারিতে রাখা হয়েছে। যে কোনো মুহূর্তে তাদের গ্রেফতার করা হবে। সরকারের এমন অভিযোগ ও হুঁশিয়ারের মধ্যেই রোববার আসলাম চৌধুরীকে গ্রেফতার করা হল। উল্লেখ্য, গত ৯ মে নয়াদিল্লিতে ইসরাইলের সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল ডিপ্লোমেসি অ্যান্ড অ্যাডভোকেসির প্রধান ও লিকুদ পার্টির নেতা মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে বৈঠকসংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন ইসরাইলের সংবাদ মাধ্যম ‘জেরুজালেম অনলাইন ডটকম’ এ প্রকাশিত হয়। সেই সূত্রের বরাদ দিয়ে বাংলাদেশের কয়েকটি গণমাধ্যমেও মেন্দির সঙ্গে আসলাম চৌধুরীর বৈঠকসংক্রান্ত বেশকিছু ছবি ও সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর সরকার ও তার দলের পক্ষ থেকে কয়েকদিন ধরে অভিযোগ করা হচ্ছে, বিএনপির এই নেতা ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করছেন।