,
প্রচ্ছদ | জাতীয় | আন্তর্জাতিক | অর্থনীতি | আমেরিকা | লাইফ স্টাইল | ভিডিও নিউজ | ফিচার | আমেরিকা | বিনোদন | রাজনীতি | খেলাধুলা | বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি | শিক্ষা

ক্যান্সার মোটেই ভয়ের অসুখ নয়

এবিএনএ : জ্ঞান বিজ্ঞানের যেরকম অগ্রগতি হয়েছে তা দেখে ও জেনে আজকাল অনেকেই জানতে চান ক্যান্সার রোগ হিসেবে এখন আর কতটা ভয়াবহ? এই রোগ চিকিৎসাযোগ্য কিনা বা নিরাময়যোগ্য কিনা! এই লেখায় আমরা এরকম ভাবনার কিছু উত্তর খুঁজে দেখবো কিন্তু তার আগে আমাদের জানা দরকার ক্যান্সার কী?

আমরা সবাই জানি যে কোনও প্রাণীর শরীর অসংখ্য ছোট ছোট কোষের মাধ্যমে তৈরি। এই কোষগুলো একটা নির্দিষ্ট সময় পরপর মারা যায়। এই পুরানো কোষগুলোর জায়গায় নতুন কোষ এসে জায়গা করে নেয়। সাধারণভাবে কোষগুলো নিয়ন্ত্রিতভাবে এবং নিয়মমতো বিভাজিত হয়ে নতুন কোষের জন্ম দেয়। যখন এই কোষগুলো ‘কোনও কারণে’ অনিয়ন্ত্রিতভাবে বাড়তে থাকে তখনই ত্বকের নিচে মাংসের দলা অথবা চাকা দেখা যায়। একেই টিউমার বলে। এই টিউমার বেনাইন (নির্দোষ) বা মলিগন্যান্ট (ক্ষতিকর) হতে পারে।

খুব সাধারণভাবে যদি কেউ বুঝতে চান তাহলে এই রোগ কিছুতেই আর দশটা রোগের চাইতে আলাদা কিছু নয়। শরীরের যে কোনও অসুখ ক্রমান্বয়ে একজন মানুষ, প্রাণী বা উদ্ভিদকে মৃত্যুর দিকে টেনে নিতেই পারে। ক্যান্সার রোগকে আমরা যেদিন থেকে বুঝতে শুরু করেছি, সেই শুরু থেকেই, আমরা এখনও তার কারণ পুরোপুরি হদিস করতে পারিনি, যেরকম হয়েছে অন্য আর সব রোগের বেলায়ও। অজানা কারণ হয়তো একে দুর্বিষহ করেছে বিশেষ করে পরিবারের জন্যে, যেহেতু এর চিকিৎসায় খরচ তুলনামূলকভাবে বেশিই পড়ে।

আমাদের জানা দরকার যে, চিকিৎসা বিজ্ঞানে ক্যান্সারকে আজকাল অন্য আর সব রোগের মতোই বিবেচনা করা হয়। উন্নত বিশ্বে ক্যান্সার আক্রান্ত মানুষের ৫০% ভাগই এখন নিরাময় লাভ করেন বা ক্যান্সার হয়নি এমন মানুষদের মতোই গড় আয়ু পেয়ে থাকেন। আমাদের মতো গরিব দেশগুলোর অসুবিধা হলো, আমরা চিকিৎসা বিজ্ঞানের অগ্রগতি নিয়ে বেশি একটা খবর রাখি না বা পাইও না। যাদের পাওয়া উচিত (যেমন চিকিৎসক-সমাজ, মনোবিজ্ঞানী, সমাজবিজ্ঞানী ও চিকিৎসাবিজ্ঞানী) তারা এই নিয়ে বেশি একটা খোঁজ করেন না বলে তাদের কাছে অনেক খবর ঠিকমতো পৌঁছায় না।

ক্ষেত্র বিশেষে পৌঁছালেও ধারাবাহিক মেডিক্যাল জ্ঞানের অভাবে এসবের অগ্রগতির তাৎপর্য তারা ঠিকমতো বুঝতে পারেন না। ফলে ক্যান্সার রোগের মতো যে রোগগুলো অসংক্রামক তা নিয়ে আমাদের দেশে চিকিৎসা জগতের তেমন কোনও প্রাতিষ্ঠানিক বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র গড়ে ওঠেনি। আর এই সুযোগে ওষুধ কোম্পানিগুলো জেঁকে বসে আমাদের বেশি দামের ওষুধ কিনে নিতে বাধ্য করছে।

উন্নত বিশ্বে যা হয়, আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসায় একটি পরিপূর্ণ নিরীক্ষণ পরিকল্পনা নিয়ে রোগ নির্ণয় করা হয়। এর জন্যে অনুসরণ করা হয় চিকিৎসার ভেদ অনুযায়ী নির্ধারিত অনুসরণিকা বা গাইড লাইন। আমাদের দেশে সেরকম উপযোগী গাইড লাইন না থাকায় ও স্থানীয় পর্যায়ের গবেষণার সুযোগ কম থাকায় নানা রকম পরীক্ষায় পাঠানো হয় রোগীদের। এর ফলে প্রচুর টাকা খরচ হয় শুধু রোগ নির্ণয় করতেই। তার সঙ্গে হয়রানি তো আছেই।

ক্যান্সার সঠিকভাবে সনাক্ত করা গেলে এই রোগ মোটেই ভয়ের কোনও অসুখ নয়। স্তনের ক্যান্সার–সহ অনেকগুলো প্রাথমিক চিকিৎসায় ভালো হয়। জরায়ুর ক্যান্সার প্রতিরোধে এখন টিকা আবিষ্কার হয়েছে এবং বাংলাদেশেও তা পাওয়া যাচ্ছে।

আমাদের বুঝতে হবে ভয় পেয়ে এই রোগ নিয়ে দুশ্চিন্তা করে নিজের ও পরিবারের দুর্ভোগ বাড়ানো উচিত নয়। আমাদের দেশে এখন অনেকগুলো চিকিৎসা কেন্দ্র সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে তৈরি হয়েছে যেখানে মোটামুটি ক্যান্সার নির্ণয়ের ও চিকিৎসার ব্যবস্থা আছে।

সবচেয়ে বড় কথা হলো, ক্যানসার এমন কোনও রোগ নয় যে এর ফলেই কারও মৃত্যু অনিবার্য আর অন্য কোনও রোগে মৃত্যু হবে না বা জীবন দীর্ঘস্থায়ী হবে। বরঞ্চ ক্যান্সার আক্রান্ত মানুষ নিজের মৃত্যু আসন্ন জেনেও বাকি জীবনের অনেক পরিকল্পনা গুছিয়ে নিতে পারেন যা হৃদরোগ বা আরও কিছু কিছু ক্ষেত্রে সম্ভব হয় না।

ক্যানসার আক্রান্ত মানুষের শেষ জীবনে যেসব শারীরিক উপসর্গ হয় তাতে কোনও কোনও ক্ষেত্রে রোগী বেশ কষ্ট পেয়ে থাকেন। বিজ্ঞানীগণ এই ব্যাথার মাত্রা নির্ণয় করে এখন সঠিক চিকিৎসা দিতে সক্ষম ওষুধ মাত্রাভেদে প্রয়োগের ব্যবস্থা আবিষ্কার করেছেন।

‘প্রশমন যত্ন’ হিসেবে এই সেবা এখন মোবাইল ফোনেও দেওয়া হচ্ছে যাতে বাড়ি থেকেই রোগী তার ডাক্তারের কাছে ব্যাথা ও অবসাদের মাত্রা জানাতে পারেন। আমাদের দেশেও এই সেবা কিছু কিছু ক্ষেত্রে চালু হয়েছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানী ও সমাজ বিজ্ঞানী মিলে এখন উপায় বের করেছেন কী করে একজন ক্যান্সার রোগীকে বাড়ি রেখেই (পরিবারের অন্য সব সদস্যদের বিরক্ত না করেই) উপযুক্ত চিকিৎসা দেওয়া যায়।

এছাড়া এখন বিজ্ঞানীগণ ক্যান্সারের জন্যে যথাযথ চিকিৎসা পদ্ধতি নির্ণয় করেছেন যার ফলে ওষুধের মাত্রা (কেমোথেরাপি নামে পরিচিত) সঠিকভাবে অনুসরন করে প্রয়োগ করা হলে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হয় খুব সামান্যই (যেমন চুল পড়ে যাওয়া, বমি বা অবসাদের উপসর্গ হওয়া)। শুধু আমাদের এইসব বিষয়ে কিছুটা সতর্ক জ্ঞানের দরকার।

অনেক পর্যবেক্ষণমূলক গবেষণায় দেখা গেছে, মানসিক অবসাদ ও দুর্ভাবনায় ক্যান্সার আক্রান্ত মানুষের একটি বড় অংশ মারা যায়। যা কখনও কাম্য হতে পারে না। পরিবারের একজন সদস্যের শেষ পর্যন্ত বেঁচে থাকা খুব জরুরি হয় যেখানে তিনি ভূমিকা পালন করে থাকেন।

চিকিৎসা বিজ্ঞানীগণ এই নিয়ে অনেক কাজ করছেন এবং আশা করছি এর সুফল ক্যানসার আক্রান্ত রোগীরা শিগগিরই পাবেন।

লেখক- পরিচালক, আমাদের গ্রাম ক্যান্সার চিকিৎসা ও ই-হেলথ গবেষণা কেন্দ্র।

Chairman & Editor-in-Chief : Shaikh Saokat Ali
Managing Director: Akbar Hossain
Executive Editor: Mehedi Hasan
E-mail : abnanewsusa@gmail.com
Usa Office: 289 West Koach Avenue, Egg harbor City, New Jersey-08215, Bangladesh Office : 60/1. Purana Paltan (2nd Floor), Dhaka-1000, Usa. Phone: +16094649559, Cell:+8801711040113, +8801912-621573
Server mannarged BY PopularServer
Design & Developed BY PopularITLimited