বেনিনে প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে বিরোধীদের দেশত্যাগে বাধ্য করার অভিযোগ


এবিএনএ: পশ্চিম আফ্রিকার দেশ বেনিনে প্রেসিডেন্ট প্যাট্রিস ট্যালোনের বিরুদ্ধে বিরোধীদের দেশত্যাগে বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছে। দেশটিতে এ ধরনের কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। যদিও স্থিতিশীল গণতন্ত্রের দেশ হিসেবে এর যথেষ্ট সুনাম আছে। খবর বার্তা সংস্থা এএফপি’র। দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ও কোটিপতি বেবাস্তিয়েন আজাভনকে মাদক পাচারের দায়ে ২০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়েছে।
মুরগির ব্যবসায় প্রচুর অর্থ বিনিয়োগের জন্য আজাভনকে বেনিনের ‘চিকেন কিং’ নাম দেয়া হয়েছে। তিনি ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তৃতীয় সর্বোচ্চ ভোট পান। তিনি ট্যালোনকে দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে উৎরে যেতে সহায়তা করেন। তবে তিনি আবারো প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ইচ্ছা গোপন রাখেননি। এরপর তার সমর্থকরা ‘আজাভনকে রাজনৈতিকভাবে আইনী সমস্যায় ফলা হয়েছে’ বলার পর ট্যালোনের সঙ্গে তার সম্পর্কের অবনতি ঘটে। আজাভনের রাজনৈতিক দল ইউএসএল এর কর্মকর্তা দোনকলম আবারো বলেন, ‘ট্যালোন সরকার বিরোধীদের অন্যায়ভাবে দমন করছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আজাভনের আইনজীবীদেরকে তাদের মক্কেলের পক্ষে আইনী লড়াই লড়তে বাধা দেয়া হয়েছে।’ দুই বছর আগে একটি মাদক মামলায় তার জড়িত থাকার কোন প্রমাণ না পাওয়া সত্ত্বেও অক্টোবর মাসে আজাভনের বিরুদ্ধে সাজার রায় দেয়া হয়।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সাবেক মন্ত্রীরা দুর্নীতি ও জালিয়াতির অভিযোগে পার্লামেন্টারি দায়মুক্তি হারায়। তাদের দমন করতে আর্থিক কেলেঙ্কারী ও সন্ত্রাসবাদের বিচার করতে একটি বিশেষ আদালত স্থাপন করা হয়। ইতিমধ্যেই এই আদালত বেশ কয়েকজনকে বড় ধরনের সাজা দিয়েছে। বিতর্কিত এই আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার সুযোগ রাখা হয়নি। আগামী বছর দেশটির পার্লামেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে বেশ কয়েকজন রাজনীতিবিদ এই আইনী উৎপীড়ন থেকে রক্ষা পেতে দেশত্যাগে বাধ্য হয়েছেন।
আজাভনের আইনজীবীরা জানান, তিনি ফ্রান্সে আছেন। তিনি তার বিচারের সময় আদালতে হাজির হননি। তার বিরুদ্ধে একটি আন্তর্জাতিক গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। ২০১৬ সালের নির্বাচনে ট্যালোনের অপর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী লিওনেল জিনসোউকেও আইনী ঝামেলায় ফেলা হয়েছে। তিনিও দেশত্যাগ করেছেন। তার বিরুদ্ধে ২ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলার নির্বাচনী তহবিল তছরুপের অভিযোগ আনা হয়েছে।
ইবোমাফ নামের একটি কোম্পানিকে এই অর্থ ফেরত দেয়ার কথা ছিল। জিনসোউকের আত্মীয়-স্বজনরা জানান, কর্তৃপক্ষের ভয়ে তিনি তার মেয়ের বিয়েতে উপস্থিত থাকতে পারবেন না। বর্তমানে তিনি প্যারিসেই আছেন এবং সেখানেই থাকবেন। অপর রাজনীতিবিদ পিপল’স লিবারেশন পার্টির লিওন্স হউংবাদিও দেশত্যাগ করেছেন। ট্যালোন বিরোধী বক্তব্যের জন্য পরিচিত হউংবাদি বলেন, ‘বিষ প্রয়োগ ও অপহরণের’ হুমকি পাওয়ার পর অক্টোবরের শেষ দিকে তিনি দেশ ত্যাগে বাধ্য হন।