জাতীয়বাংলাদেশলিড নিউজ

তোফা-তহুরার বাবাকে চাকরি দেওয়া হবে : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

এবিএনএ : কোমরের নিচে জোড়া লাগা অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি তোফা-তহুরার বাবা রাজু মিয়াকে চাকরি দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।

আজ রবিবার দুপুরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার সময়ে তোফা-তহুরাকে আনুষ্ঠানিক ভাবে বিদায় জানাতে গিয়ে তিনি এই ঘোষণা দেন।

মোহাম্মদ নাসিম বলেন, আমরা চাই তারা (তোফা-তহুরা) ভালো থাকুক। মানসম্মত ও উন্নত চিকিৎসায় তারা বড় হয়ে উঠুক। এই কৃষক পরিবার এখন কোথায় যাবে? আমি অবশ্যই পরিবারটিকে দেখব। তোফা-তহুরার বাবার চাকরির বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে।

তোফা ও তহুরার বাবা-মায়ের হাতে ছাড়পত্র তুলে দিয়ে তিনি বলেন, চিকিৎসকেরা তোফা ও তহুরাকে নতুন জীবন দিয়েছেন। বাবা-মায়ের কোলে করে বাড়ি ফিরছে তারা, বাবা-মায়ের কাছে এর চেয়ে বড় আনন্দের আর কিছু নেই। চিকিৎসকদের এই দল যেভাবে কাজ করেছেন, তিনি তা অন্যদের অনুসরণ করতে বলেন। প্রধানমন্ত্রী ও দেশবাসীর পক্ষ থেকে এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত চিকিৎসক দলকে শুভেচ্ছা জানান তিনি।

গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দহবন্দ ইউনিয়নের ঝিনিয়া গ্রামের রাজু মিয়ার স্ত্রী সাহিদা বেগম নিজ বাড়িতে শরীর জোড়া লাগানো অবস্থায় তোফা-তহুরার জন্ম দেন।

কোমরের কাছে জোড়া লাগানো শিশু দুটির সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গই ছিল। গত বছরের ৮ অক্টোবর ঢামেকে অপারেশনের মাধ্যমে তাদের পায়ুপথ আলাদা করা হয়। পরে গত ৩ আগস্ট দ্বিতীয়বারের মতো অস্ত্রোপচার করে তাদের শরীর আলাদা করা হয়। ওইদিন সকাল ৮টায় শুরু হয় জটিল ও ঝুঁকিপূর্ণ এ অস্ত্রোপচার। বিকাল পাঁচটায় শিশু দুটিকে সফলভাবে আলাদা করেন চিকিৎসকরা।

চিকিৎসকদের দেয়া নতুন জামা, চুড়ি, জুতা, আর মাথায় ব্যান্ড তোফা-তহুরাকে পরানো হয়েছে। এছাড়াও তাদের মা সাহিদা বেগকে নতুন শাড়ি এবং বাবা রাজু মিয়াকে দেওয়া হয়েছে নতুন লুঙ্গি-শার্ট।

তোফা-তহুরার মা সাহিদা বেগম জানান, তাদের বাড়ি ফেরার সকল প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে সরাসরি গ্রামের বাড়ি গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে যাবো। শনিবার রাতে তোফা-তহুরার চিকিৎসার তত্ত্বাধায়ক অধ্যাপক সাহনূর ইসলাম তাদের সবাইকে নতুন পোশাক উপহার দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।

তোফা ও তহুরার চিকিৎসক সাহনুর ইসলাম বলেন, বাড়ি চলে গেলেও তারা আমাদের নিয়মিত ফলো-আপে থাকবে। এক মাস পরপর শিশু দুটিকে ঢাকায় এনে দেখানোর জন্য তাদের মা-বাবাকে বলা হয়েছে। ছয় মাস পর তাদের আরেকটি অপারেশন করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।

এ সময়ে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব সিরাজুল হক খান, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব সিরাজুল ইসলাম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম নাসির উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Share this content:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button